বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

হতাশায় ভুগছে বিএনপি, এটা ডাহা মিথ্যা

শফিউল আলম দোলন

হতাশায় ভুগছে বিএনপি, এটা ডাহা মিথ্যা

বেগম সেলিমা রহমান

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেছেন, যারা বলেন বিএনপি সমন্বয়হীনতা বা হতাশায় ভুগছে, তারা ডাহা মিথ্যা প্রপাগান্ডা চালাচ্ছেন। এদের ব্যাপারে আমাদের সবার সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী ঐক্যবদ্ধ। তারা শেষ পরিণতি পর্যন্ত সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন চালিয়ে যেতে অঙ্গীকারবদ্ধ। এখানে হতাশার কিছু নেই।

গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলাপকালে এ কথা বলেন। দলের এ নীতিনির্ধারক বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই’, এমন বক্তব্য ঢাহা মিথ্যা। কারণ আপনারা দেখতে পাচ্ছেন- কীভাবে এই সরকার বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার-নির্যাতন, রিমান্ডসহ এহেন কোনো নিপীড়ন নেই- যা চালাচ্ছে না। বাড়িঘরে হানা দিয়ে ছেলেকে না পেয়ে বৃদ্ধ বাবা-মাকে পর্যন্ত তুলে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ভাইকে না পেয়ে ভাইকে গ্রেফতার করছে। নারী-শিশুদের ওপর নির্যাতন করছে। পুলিশি হেফাজতে, কারাগারের ভিতরে বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা মৃত্যুবরণ করছেন। তারপরও তারা কেউ পিছু হটছেন না। কারণ তারা মানুষের ভোটাধিকার ও মৌলিক অধিকারসহ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার শপথ নিয়েছেন।

সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, শুধু বিএনপি নয়, দেশের সর্বস্তরের মানুষই এখন পরিবর্তন প্রত্যাশা করেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা আজ জীবনবাজি রেখে এক দফা আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন। পুলিশের অন্যায্য গ্রেফতার এড়াতে হয়তো কেউ কেউ একটু-আধটুু আড়ালে আবডালে আছেন। কিন্তু তারা কেউই নিষ্ক্রিয় নন। যার যার অবস্থান থেকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করছেন। এখানে সমন্বয়হীনতার কিছু নেই। তৃণমূল পর্যন্ত প্রত্যেকটা নেতা-কর্মী এমনকি সমর্থকরা পর্যন্ত আজ এক দফা দাবি আদায়ের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তারা সবাই আন্দোলন করছেন। এ সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন থামবে না। সবচেয়ে ইতিবাচক দিক হলো- দেশের আপামর সাধারণ মানুষও আজ মনেপ্রাণে পরিবর্তন চায়। আপনারা চোখ-কান খোলা রেখে একটু খোঁজখবর নিয়ে দেখেন, সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে সেলিমা রহমান বলেন, ‘বানরের পিঠা বণ্টনের’ মতো নির্বাচন কে চায়, কোনো সচেতন দেশপ্রেমিক মানুষের কাছেই এ ধরনের প্রহসনের নির্বাচন কাম্য হতে পারে না। শুধু রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য এ ধরনের একতরফা তামাশার নির্বাচনের আয়োজন করা কতটা সমীচীন সেটি সহজেই অনুমেয়। তিনি বলেন, শুধু দেশের ভিতরেই নয়, আন্তর্জাতিক গণতন্ত্রকামী বিশ্বের দেশগুলোও আজ বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যাপারে সরব। তারা তাগিদ দিচ্ছেন, নানাভাবে চেষ্টা করছেন। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য ভিসানীতি আরোপ করেছে। র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকজন সদস্যদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এমনকি জাতিসংঘের পক্ষ থেকেও প্রায়শই এ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা জানানো হচ্ছে। কিন্তু এই স্বৈরাচারী সরকারের টনক নড়ছে না। রাজনীতি, অর্থনীতি, দেশ ও দেশের জনগণ সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেলেও তাদের কিচ্ছু আসে যায় না। এ সরকার দেশ থেকে সব বিরোধী দল তথা ভিন্নমতকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চায়। এ জন্যে তারা আদালতকে ব্যবহার করে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় সাজানো রায় দিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই প্রায় সহস্রাধিক বিএনপি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে গায়েবি মামলায় রায় দেওয়া হয়েছে। এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না। তিনি বলেন, কালরাতের পর সকাল আর বেশি দূরে নয়। জনগণের আন্দোলনের বিজয় অবশ্যম্ভাবী। বাংলাদেশের মানুষ অচীরেই মুক্তির নতুন সূর্য দেখতে পাবে ইনশা আল্লাহ।

সর্বশেষ খবর