বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ঢাকায় এক দিনে বিএনপির শতাধিক নেতার কারাদণ্ড

ফখরুলসহ বিএনপির তিন নেতার জামিন আবেদন শুনানিতে অপারগতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর বিভিন্ন থানায় দায়ের হওয়া নাশকতার পাঁচ মামলায় বিএনপির ১০৯ নেতা-কর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকার তিনটি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এসব রায় দেন। অবশ্য অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় হাজারীবাগ থানার এক মামলায় সব আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

২০১৮ সালে উত্তরখান থানায় দায়ের করা নাশকতার দুই মামলায় বিএনপির ৬৭ জনকে দুই বছর এক মাস করে কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোশাররফ হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় চার আসামি আদালতে উপস্থিত থাকায় তাদের সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। অন্য আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

২০১৮ সালে ধানমন্ডি থানায় হওয়া নাশকতার এক মামলায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলম রবিসহ ২২ নেতা-কর্মীকে দন্ডবিধির পৃথক দুই ধারায় তিন বছরের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসানের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। ২০১৩ সালে গুলশান থানায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় ১৫ বিএনপি নেতা-কর্মীকে কারাদন্ড এবং দুই আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসান। ২০১৮ সালে কামরাঙ্গীরচর থানার নাশকতার মামলায় বিএনপির পাঁচ নেতা-কর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী। দন্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- হাজারীবাগ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল আজিজ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের মানিক, ধানমন্ডি থানা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব, হাজারীবাগ থানা বিএনপির আহ্বায়ক মো. মজিবুর রহমান মজু ও যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন, হাজারীবাগ থানা ছাত্রদলের সভাপতি আনিসুর রহমান শিবলু প্রমুখ।

ফখরুলসহ বিএনপির তিন নেতার জামিন আবেদন শুনানিতে অপারগতা : এজাহারে নাম থাকলেও গ্রেফতার দেখানো হয়নি এমন বেশকিছু মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির তিন নেতার জামিন আবেদন শুনানিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন আদালত। গতকাল ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দুজন বিচারকের বরাবর এই আবেদনগুলো উপস্থাপন করা হয়। তবে তদন্ত কর্মকর্তা গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করার আগে এসব মামলায় জামিন শুনানিতে অপারগতা প্রকাশ করেন দুই বিচারকই। আসামিপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেসবাহ সাংবাদিকদের বলেন, মির্জা ফখরুলের পক্ষে পল্টন থানার সাতটি ও রমনা থানার চারটিসহ মোট ১১টি মামলায় প্রডাকশন ওয়ারেন্টসহ (হাজিরা পরোয়ানা) জামিন আবেদন করি। একইভাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর পক্ষে ৯টি ও দলটির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপনের পক্ষে সাতটি মামলায় জামিন আবেদন করি। এসব আবেদন গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী ও শফি উদ্দিনের আদালতে শুনানির জন্য আসে। তবে তদন্ত কর্মকর্তা গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করার আগে এসব মামলায় জামিন শুনানিতে অপারগতা প্রকাশ করে আবেদনগুলো নথিভুক্ত রাখেন আদালত। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ২৯ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গুলশানের বাসা থেকে আটক করে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ওইদিনই প্রধান বিচারপতির বাসায় হামলার ঘটনায় রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় রাত ৮টার দিকে তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়। বর্তমানে তার জামিন আবেদন উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। অপরদিকে গত ২ নভেম্বর রাত ১টার দিকে গুলশানের একটি বাসা থেকে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গ্রেফতার করে ডিবি। আর গুলশানের আরেকটি বাসা থেকে একই দিন সন্ধ্যায় বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপনকে গ্রেফতার করা হয়। পর দিন তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। সেই রিমান্ড শেষে গত ৯ নভেম্বর তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রশিদুল আলম।

গত ৬ ডিসেম্বর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফয়সল আতিক বিন কাদের তাদের জামিন নামঞ্জুর করে আদেশ দেন।

সর্বশেষ খবর