শুক্রবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

হত্যাকারীরা গণতন্ত্রের জন্য কাজ করে না

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা রেললাইনে নাশকতা করে তারা পরাজিত শক্তির দোসর। এরা খুনি, হত্যাকারী। এদের না বলুন। হত্যাকারীরা কখনো গণতন্ত্রের জন্য কাজ করে না।

গতকাল বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।  

শেখ হাসিনা বলেন, একাত্তরের হানাদার বাহিনীর দোসররা প্রেতাত্মা হয়ে দেশের মানুষের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে হত্যাকান্ড ঘটিয়ে যাচ্ছে। প্রত্যেকটা নির্বাচনের আগেই চক্রান্ত হয়। এখন তাদের নানা রকম চক্রান্ত শুরু হয়েছে। তবে বিশ্বাস করি, মানুষের শক্তি বড় শক্তি। সেই শক্তি আছে বলেই আমরা একটানা তিনবার ক্ষমতায় আসতে পেরেছি। তিনি বলেন, আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশকে হেয় চোখে দেখা হতো, পাকিস্তানিরা বোঝা মনে করে বলত এটা চলে গেলেই ভালো। আজকে তারা বলে, আমাদের বাংলাদেশ বানিয়ে দাও। আমরা বাংলাদেশের মতো উন্নত হতে চাই। আর যারা বলেছিল তলাবিহীন ঝুড়ি, তারা দেখে বাঙালিকে তো দাবায়ে রাখা যায় না। তিনি বলেন, আজকে মানুষ বিদেশে গেলে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সম্মান পায়। আর এ সম্মানটা দিতে পারে না আমাদের দেশের কিছু কুলাঙ্গার। ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় হানাদার বাহিনীর দোসর যারা ছিল, এরাই তাদের প্রেতাত্মা হয়ে দেশের মানুষের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে হত্যা করে যাচ্ছে। হত্যার পরিকল্পনা করছে।

জিয়াউর রহমানকে অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী ও তার পকেট থেকে বিএনপি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে দলের আচার-আচরণ কী? ভোট কারচুপি, ভোট ডাকাতি, জনগণের অধিকার কেড়ে নেওয়া, জনগণকে খুন করা, মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা, এটাই তো করে গেছে। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীদের ধরতে দেশবাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এসব সন্ত্রাসীদের সরাসরি ধরতে হবে, ব্যবস্থা নিতে হবে। এরা মানুষকে খুন, দেশের সম্পদ ধ্বংস ও মানুষের সর্বনাশ করতে পারে। মনে রাখতে হবে এরা পরাজিত শক্তির দোসর। এদের বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শহীদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না, আমরা বৃথা হতে দেব না। মাত্র ১৫ বছরেই বাংলাদেশ এখন এক বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। এ মর্যাদা ধরে রেখেই আমরা আরও এগিয়ে যাব। আমরা কারও কাছে হাত পেতে ভিক্ষা চাইব না, কারও মুখাপেক্ষী হয়ে চলব না। দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি জায়গায় যেখানে বাস আছে, রেললাইন আছে, যেখানে এরকম (রেলপথ তুলে ফেলা) ঘটনা ঘটবে, সঙ্গে সঙ্গে জনগণ যদি মাঠে নামে এরা (অবরোধকারী দুর্বৃত্ত) হালে পানি পাবে না। এরা ধ্বংস করতে পারে, এরা মানুষের জন্য সৃষ্টি করতে পারে না। এরা মানুষকে খুন করতে পারে, কিন্তু মানুষের জীবনের শান্তি নিরাপত্তা দিতে পারে না। এরা মানুষের সর্বনাশ করতে পারে, মানুষের জীবনটা উন্নত করতে পারে না। কাজেই তাদের কাছ থেকে সাবধান। আর কোথাও যদি এ ধরনের রেলের স্লিপার তুলে ফেলে, আগুন দেয়, যখনই করতে যাবে সরাসরি তাদের ধরতে হবে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে স্মরণসভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, শহীদ বুদ্ধিজীবী ফয়জুর রহমান আহমেদের ছেলে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও লেখক অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল, শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলিম চৌধুরীর মেয়ে অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য তারানা হালিম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল প্রমুখ। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ প্রধানমন্ত্রীর লেখা ‘শেখ মুজিব’ গ্রন্থের সংক্ষিপ্ত অংশ পাঠ করেন। সভা সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ-প্রচার সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম।

সর্বশেষ খবর