শুক্রবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সম্পদের শেষ নেই এমপিদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

সম্পদের শেষ নেই এমপিদের

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া প্রার্থীদের সম্পদ বিবরণী নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা চলছে। বিশেষ করে বর্তমান ও সাবেক এমপিদের সম্পদের যেন শেষ নেই। গুণিতক হারে বেড়েছে জনপ্রতিনিধিদের সম্পদ। পূর্ববর্তী বছরগুলোর সম্পদ বিবরণীর সঙ্গে এবারের সম্পদের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে পাঠিয়েছেন আমাদের জেলা প্রতনিধিরা।

গোলাম মোস্তফার আয় বেড়ে ৫০ গুণ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ : চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (গোমস্তাপুর-নাচোল-ভোলাহাট) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী গোমস্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মু. গোলাম মোস্তফা বিশ্বাসের ১০ বছরে আয় বেড়েছে ৫০ গুণ। বর্তমানে তার ১ কোটি ৫৭ লাখ ৩৩ হাজার টাকার সম্পদ রয়েছে। এর মধ্যে ব্যাংকে গচ্ছিত এফডিআর রয়েছে ৫৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকার। গত ১০ বছরে কৃষি খাত থেকে আয় ও নগদ অর্থ কমলেও সম্পদ বেড়েছে। ২০১৩ সালের হলফনামায় স্ত্রীর নগদ ৫ হাজার টাকা থাকলেও চলতি হলফনামায় তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ টাকায়। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তার ১ লাখ টাকা থাকলেও বর্তমানে রয়েছে ৫০ লাখ টাকা ও স্ত্রীর নামে রয়েছে ৯ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। এ ছাড়া ২০১৩ সালে স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ না হলেও বর্তমানে তার ৩০ লাখ টাকা আর স্ত্রীর দেখানো হয়েছে ৪৭ লাখ টাকার বিনিয়োগ। দানসূত্রে কৃষিজমি পেয়েছেন ২৪.২৪ বিঘা এবং পূর্বাচলে ৬ লাখ টাকায় অকৃষি জমি কিনেছেন ৩ কাঠা।

শিল্পমন্ত্রীর আয় বেড়েছে প্রায় ১৪ গুণ

নরসিংদী : নরসিংদী-৪ (বেলাব-মনোহরদী) আসনের এমপি শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনের বার্ষিক আয়, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে। তার বার্ষিক আয় বেড়ে প্রায় ১৪ গুণ, অস্থাবর সম্পদ বেড়ে প্রায় ৯ গুণ ও স্থাবর সম্পদ বেড়ে প্রায় ১৯ গুণ হয়েছে। হলফনামায় নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন জাহাজের ব্যবসা ও চিংড়ি চাষ থেকে আয় দেখিয়েছেন। এসব খাতে তার আয় ৮৬ লাখ ১৪ হাজার টাকা। শেয়ার, সঞ্চয়পত্র থেকে আয় ৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। মন্ত্রী ও এমপি হিসেবে পাওয়া সম্মানি ২৩ লাখ টাকা। তার নগদ আছে ৭০ লাখ ২৮ হাজার টাকা। ব্যাংকে জমা আছে আরও ৬ লাখ ৫২ হাজার টাকা। বিনিয়োগ ৭৪ লাখ ২৬ হাজার টাকা। মোটরগাড়ির মূল্য ১ কোটি ৬৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা। অকৃষি জমি হিসেবে পূর্বাচলে ৭৮ লাখ টাকা মূল্যের ৫ কাঠার দুটি প্লট ও গুলশানে ৬১ লাখ ৭০ হাজার টাকা মূল্যের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে তার। চা বাগান, রাবার বাগান ও চিংড়ি খামার খাতে বিনিয়োগ ৩৬ লাখ ৯১ হাজার টাকা। জাহাজ ব্যবসায় তার মূলধন ৭ কোটি ৯৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। তবে ব্যবসার জন্য তিনি ব্যাংকঋণ নিয়েছেন ২ কোটি ৮৭ লাখ ৬৭ হাজার টাকা।

সম্পদের শেষ নেই নূরের

নীলফামারী : নীলফামারী-২ আসনের এমপি আসাদুজ্জামান নূরের নগদ ৬২ লাখ ৭০ হাজার টাকা রয়েছে। শেয়ার রয়েছে ১ কোটি ৪৫ লাখ ১০ হাজার টাকার। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ১২ কোটি ৩৯ লাখ ৪১ হাজার টাকা। গাড়ি রয়েছে ১ কোটি ২৯ লাখ ৫৩ হাজার টাকার। অকৃষি জমি আছে ৩৭.৫ শতাংশ। বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট আছে ৩টি। হলফনামার ঘোষণা অনুযায়ী, তিনি পেশায় একজন চাকরিজীবী। সেই খাত থেকে তিনি বার্ষিক আয় করেন ১ কোটি ৭৫ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট ও দোকান ভাড়া দেখিয়েছেন ৪ লাখ ৩২ হাজার টাকা, শেয়ার সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত ৬৬ লাখ ৭৪ হাজার টাকা।

রানা সোহেলের আয় বেড়েছে

নীলফামারী-৩ আসনে এমপি রানা মোহাম্মদ সোহেল এবারও জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী। তার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ২ কোটি ৬২ লাখ ২৩ হাজার টাকার। মোটরগাড়ি রয়েছে ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার। স্থাবর সম্পদ অকৃষি জমির মূল্য ১ কোটি ২৭ লাখ ৯১ হাজার টাকা।

ঋণ বেড়েছে আফতাবের

নীলফামারী-১ আসনের এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকার এবারও আওয়ামী লীগের প্রার্থী। হলফনামা অনুযায়ী তার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে নগদ ৯৮ লাখ টাকার। আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৯৮ লাখ টাকা। গাড়ি আছে ৬০ লাখ টাকার। বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ১২ লাখ ৩ হাজার টাকা। ব্যাংক ঋণ রয়েছে ১ কোটি ৯৮ লাখ টাকার।

আদেলের আয় ১৪ লাখ

নীলফামারী-৪ আসনের এমপি আহসান আদেলুর রহমান হলফনামায় উল্লেখ করেছেন তার বার্ষিক আয় করেন ১৪ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। নগদ টাকা রয়েছে ১০ লাখ। শেয়ার রয়েছে ৬ লাখ টাকার। দুটি মোটর গাড়ি রয়েছে যার মূল্য ১ কোটি ৯২ লাখ ৭২ হাজার টাকা।

জনের আয় বেড়েছে ১০ গুণ

নওগাঁ : নওগাঁ-৫ সদর আসনের এমপি আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত আবদুল জলিলের পুত্র ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জনের আয় ও সম্পদ বেড়েছে ১০ গুণ। অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে দেড় গুণের বেশি। গত পাঁচ বছরে এমপি হিসাবে সম্মানি ভাতা, ব্যবসা ও অন্যান্য উৎস থেকে জনের বার্ষিক আয় ৪৭ লাখ ১৪ হাজার টাকা। ২০১৮ সালের হলফনামায় তিনি বার্ষিক আয় ১২ লাখ ৪ হাজার টাকা উল্লেখ করেছিলেন। সংসদ সদস্য হওয়ার পর গত পাঁচ বছরের ব্যবধানে তার বার্ষিক আয় বেড়েছে ১০ গুণ। ২০১৮ সালের নির্বাচনের হলফনামায় জনের অস্থাবর সম্পদের মূল্য ছিল ৭৯ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। এবারের হলফনামায় তার অস্থাবর সম্পদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ২৬ লাখ ৭৭ হাজার টাকার। ব্যাংকে জমা রয়েছে ১ কোটি ২৬ লাখ ৩৭ হাজার টাকা।

 

সর্বশেষ খবর