বৃহস্পতিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

আমানসহ বিএনপির ২ শতাধিক নেতা কর্মীর বিচার শুরু

সোহেল মজনুসহ ১৮ জনের কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা নাশকতার এক মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুসহ বিএনপির ১৮ জন নেতা-কর্মীকে দুই বছর করে কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মইনুল ইসলাম গতকাল এ রায় দেন। এ ছাড়া ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় নাশকতার দুই মামলায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানসহ ২১৩ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছেন আরেকটি আদালত। এতে এই মামলার বিচার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। দন্ডিত অন্য আসামিরা হলেন- হাবিবুর রশিদ হাবিব, আরিফুল হক আরিফ, খন্দকার এনামুল হক এনাম, মশিউর রহমান বিপ্লব, মো. রেফাত উল্লাহ, আবদুস সালাম, আলমগীর কবীর, সাইদুর রহমান খোকন, কামাল হোসেন সুমন, আবদুল্লাহ আল মামুন, সোবহান মিয়া, রাজীব আহসান, আবুল কালাম আজাদ, মো. আলমগীর হোসেন ও আবদুস সালাম (পিতা কফিল উদ্দিন)। আসামিদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম নীরবকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মজনুকে কারাগার থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আদালতে হাজির দেখানো হয়। এ দুজনকে আদালত সাজা পরোয়ানা ইস্যু করেছেন। অন্য আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা অবৈধ সমাবেশ করে পুলিশের ওপর হামলা এবং পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় পল্টন থানা পুলিশ ১৯ জন বিএনপি নেতা-কর্মী ও অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা করার পর তদন্ত শেষে আদালত ৪৪ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করে। মামলা চলাকালে আসামি শফিউল বারী বাবু মৃত্যুবরণ করায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। বাকি ২৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে মামলা থেকে খালাস দেন আদালত।

আমানসহ বিএনপির ২১৩ নেতা-কর্মীর বিচার শুরু : ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় নাশকতার দুই মামলায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানসহ ২১৩ নেতা-কর্মীর বিচার শুরু হয়েছে। গতকাল তাদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের মাধ্যমে এই মামলার বিচার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো। দুপুরে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম রকিবুল হাসানের আদালত আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে চার্জ গঠনের আদেশ দেন। আগামী ২ জানুয়ারি সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করা হয়। সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবীর বাবুল বলেন, এক মামলায় আসামির সংখ্যা ১৭৯, আরেক মামলায় ৩৪ জন। শুনানির সময় আমানউল্লাহ আমানকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৭ সালের ২ জুন বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে কেরানীগঞ্জের হযরতপুর সাকিনে মেঘু মিয়া মাতুব্বর হাফেজিয়া মাদরাসা এবং আমান জামে মসজিদে গোপনে ইফতারের আয়োজন করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। সেখানে আমানউল্লাহ আমান উপস্থিত হলে আয়োজন নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। বিষয়টি জেনে সেখানকার চেয়ারম্যান আয়নালসহ আওয়ামী লীগের ৩০ থেকে ৪০ জন উপস্থিত হন। এ সময় বিএনপির ৩০০ থেকে ৪০০ জন নেতা-কর্মী পিস্তল, রিভলবার, ককটেল ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা করে। ককটেল বিস্ফোরণে চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনায় হযরতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহের আলী ৪ জুন মামলা করেন। ২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর মামলাটি তদন্ত করে আমানউল্লাহ আমানসহ ১৮১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন কলাতিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক শাহ আলম। ইতোমধ্যে মামলার দুই আসামি মারা গেছেন। আরেক মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৩ সালের ২৭ নভেম্বর ১৮ দলের ডাকা সড়ক, রেল, নৌপথ অবরোধের অংশ হিসেবে নেতা-কর্মীরা কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর এলাকায় জনসাধারণ ও যানবাহনের গতিরোধ করে ভাঙচুর করে। একটি ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশ বাধা দিলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কেরামত আলী ২৮ নভেম্বর এ মামলা করেন। ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই মামলার তদন্ত করে একই থানার উপপরিদর্শক অশোক কুমার ৩৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেন।

সর্বশেষ খবর