বৃহস্পতিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

হাতকড়া পরিয়ে চোখ বেঁধে ছিনতাই, দুই এসআই রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক

হাতকড়া পরিয়ে চোখ বেঁধে ছিনতাইয়ের অভিযোগে পুলিশের দুই এসআই গ্রেফতার হয়েছেন। তারা হলেন- রাজধানীর শাহ আলী থানায় কর্মরত এসআই তুহিন কাজী ও মশিউর রহমান তাপস। 

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টায় শেরেবাংলা থানা পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। শাহাদাৎ সরদার নামে এক ভুক্তভোগীর মামলায় ওই দুই এসআইকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের তিন দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই ঘটনায় সুফিয়ান মোল্লা (৪০) নামে আরেকজনকেও রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। শেরেবাংলা নগর থানার ওসি আহাদ আলী গতকাল জানান, দুজন পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল তাদের আদালতে হাজির করা হলে তিন দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন ঢাকা মহানগর হাকিম আলী হায়দার। মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ৯ ডিসেম্বর শাহাদাৎ সরদার শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত এক ছোট ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে যান। ছোট ভাইকে না পেয়ে একটি রিকশা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পান্থপথ রওনা করেন। ওই দিন আনুমানিক বিকাল সোয়া ৩টায় শেরেবাংলা নগর থানার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের নির্মাণাধীন ভবনের কাছে পৌঁছলে একটি নীল রঙের প্রাইভেটকার তাকে বহনকারী রিকশাটির গতি রোধ করে। ওই গাড়ি থেকে তিনজন লোক নেমে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয় দিয়ে তাকে সেটিতে তুলে নেন। প্রাইভেটকারে তুলে তাকে হাতকড়া পরিয়ে কালো কাপড় দিয়ে চোখ-মুখ বেঁধে ফেলেন। পরে তার প্যান্টের পকেট থেকে মানিব্যাগ, ভিভো ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন নিয়ে নেন। ফোনটিতে থাকা দুটি সিম খুলে তাকে দিয়ে দেন। এ ছাড়া তার পকেটে নগদ ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ছিল, সেগুলোও নিয়ে নেন ওই তিন ব্যক্তি। এরপর তারা তাকে একটি বাসায় নিয়ে যান। সেখানে তার মানিব্যাগ থেকে ডাচ বাংলা ব্যাংকের এটিএম কার্ড নেন; পরে সেটির পিন দাবি করেন। তিনি পিন কোড দিতে অস্বীকার করলে তারা তাকে এলাপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। এরপর এটিএম কার্ডের পিন কোড দিয়ে দেন। এটিএম বুথে গিয়ে কার্ডে থাকা টাকার পরিমাণ জেনে নেন। পরে তারা তার ফোনে নেক্সাস পে অ্যাপ ইন্সটল করে এর মাধ্যমে অ্যাকাউন্টের সব টাকা ট্রান্সফার করে নেন। তারা নগদ ও ব্যাংক মিলিয়ে মোট ৯ লাখ ১৯ হাজার ২৯ টাকা ছিনিয়ে নেন। এরপর একটি সাদা কাগজে তার কাছ থেকে সই রাখেন। আবার তাকে হাতকড়া পরিয়ে, চোখ-মুখ কালো কাপড় দিয়ে বেঁধে গাড়িতে তুলে নেন। রাত সাড়ে ৯টায় তাকে মিরপুর-১ নম্বরের পাশের একটি এলাকায় নামিয়ে দিয়ে চলে যান। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম-কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেছেন, বাহিনীর সদস্য হওয়ার পরও যদি কেউ উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে, অথবা ফৌজদারি কোনো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়, তখন সে পুলিশ না সাধারণ মানুষ এটি বিবেচনা করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা তখন তাকে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করি। যদি আমাদের বাহিনীর সদস্যও হয় অবশ্যই সে একজন অপরাধী। অপরাধী যেই হোক তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি ও ডিপার্টমেন্টাল সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ফৌজদারি ব্যবস্থায় মামলা হবে, আসামি গ্রেফতার হবে ও বিচারের জন্য সোপর্দ হবে। সে ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করেছি এবং সে ব্যবস্থা চলমান থাকবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর