শুক্রবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
নির্বাচন কমিশনে মতবিনিময়

স্বতন্ত্র ও ছোট দলের প্রার্থীদের শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে বলে মনে করছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। তবে স্বতন্ত্র ও ছোট ছোট দলের প্রার্থীরা ভোট নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। নানা শঙ্কার কথা তুলে ধরেছেন নির্বাচন কমিশনের কাছে। বলেছেন- তারা ঠিকমতো প্রচার করতে পারবেন কি না। ভোট কেন্দ্রে যেতে পারবেন কি না। তাদের প্রার্থীরা কেন্দ্রে থাকতে পারবেন কি না। এ ছাড়া বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে গ্রেফতারের দাবিও উঠেছে। তবে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে সব রকম সহযোগিতা করার। ইসি বলেছেন, কোনো প্রার্থীর এজেন্টদের কোনো সমস্যা হলে প্রিসাইডিং অফিসারদের জানাবেন। তিনি সমাধান করতে না পারলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থাকবে- সেখানে পুলিশ থাকবে, র‌্যাব থাকবে, আর্মি থাকবে, বিজিবি থাকবে। তাদের জানাবেন।

গতকাল নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রার্থী নানা অভিযোগ তুলে ধরেন। শঙ্কায় ছোট দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা : স্বতন্ত্র ও ছোট ছোট দলের প্রার্থীদের শঙ্কার বিষয়ে বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, প্রশাসন ও ইসির পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে- আপনাদের সব রকম সহযোগিতা করা হবে। আপনারা নিজেরা সেখানে থাকবেন। আপনাদের এজেন্টদের কোনো সমস্যা হলে প্রিসাইডিং অফিসারদের জানাবেন। তিনি সমাধান করতে না পারলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থাকবে- সেখানে পুলিশ থাকবে, র‌্যাব থাকবে, আর্মি থাকবে, বিজিবি থাকবে। তাদের জানাবেন।

বড় পক্ষের (বিএনপির অসহযোগ আন্দোলন) নতুন কর্মসূচি, প্রার্থীরা তো আছেই আপনারা কতটুকু শঙ্কিত, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রার্থীরা এ বিষয়ে খুব একটা শঙ্কা দেখাননি। তারা বরং উপদেশ দিচ্ছেন যে কমিশন যাতে শঙ্কিত না হয়। আমাদের তারা আরও সাহস দিয়েছেন, তারা শঙ্কিত নন। আমরা মোটেই শঙ্কিত নই। জ্বালাও-পোড়াও বাড়লে কী করবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ১৪ জেলায় ঘুরলাম। এমন কিছু দেখিনি, যা দেখি মিডিয়ায়। স্বাভাবিক জীবনযাপন দেখেছি। মানুষ ভোটকে অনেক উৎসাহের সঙ্গে দেখছে। মিছিল দেখেছি, সভা করতে দেখেছি। কিন্তু আমি কোনো নির্বাচনের বিপক্ষে কোনো অনুষ্ঠান বা কথা বলতে দেখিনি। পুলিশ কী চ্যালেঞ্জের কথা বলেছে জানতে চাইলে সাবেক ওই ইসি সচিব বলেন, তারা ক্ষমতাসীন দল ও তার স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং অন্যান্য দলের প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক, ইতিবাচক অর্থে উত্তেজনামূলক হবে বলেছে। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমেরিকার নির্বাচনে তো র‌্যাব ও পুলিশ থাকে না। এবার যেহেতু একটা দল আসছে না, তাদের পক্ষ থেকে নির্বাচন বাতিলের একটা হুমকি দেওয়া হচ্ছে, সেটার একটা চ্যালেঞ্জ আছে। এগুলোকে মোকাবিলা করে কীভাবে নির্বাচন করা যায় এবং ভোটাররা যাতে কেন্দ্রে আসেন সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনে আনন্দমুখর পরিবেশ আছে। আপনারা কি ভয় পাচ্ছেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, মোটেই না। সকালে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে নির্বাচন ভবনে ঢাকা অঞ্চলের পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে ইসি। বিকালে ঢাকার প্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল, ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলমসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে মতবিনিময় শেষে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম।

 তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে নয়, তার এই দাবি একজন প্রার্থী হিসেবে। কামরুল বলেন, অন্ধকার থেকে যেভাবে রিজভী প্রেস ব্রিফিং করছে, অবরোধের ঘোষণা দেয় অসহযোগের ঘোষণা দেয়। তাকে ধরা উচিত। তাকে ধরছে না। অবশ্যই তাকে ধরতে হবে। এই ব্যক্তি এবং এই ব্যক্তিদের যারা বাইরে আছে হাইকমান্ড, আওয়ামী লীগের নেতা নয় একজন প্রার্থী হিসেবে বলব জনস্বার্থে তাদের ইমিডিয়েট গ্রেফতার করা উচিত। আর ছাড় দেওয়া যায় না। তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরও কঠোর হবে, এটা আমি বিশ্বাস করি এবং কঠোর হতে বাধ্য। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গায় প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে বিভিন্ন জায়গায় কম হবে। অনেক জায়গায় ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাঈদ খোকন বলেছেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে। ভোটাররা যাতে ভোট কেন্দ্রে যায় তা প্রার্থীদের নিশ্চিত করতে হবে। সাঈদ খোকন বলেন, নির্বাচনে বর্তমানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে। আজকের মতবিনিময় সভায় এতে সবাই সমর্থন দিয়েছেন। তিনি বলেন, নির্বাচন ঘিরে কিছু দুর্বৃত্তায়ন হচ্ছে। আমাদের নির্বাচনি এলাকাগুলোতে বাস জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে, নির্মমভাবে একটি ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়েছে, সেখানে কয়েকজন মারা গেছেন। ঢাকা-১০ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ বলেছেন, সরকারবিরোধী দলগুলো প্রতিদিনই তো হরতাল, অবরোধ দিচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ শান্তি চায়। জ্বালাও, পোড়াও ও অবরোধের রাজনীতি তারা পছন্দ করে না। ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আসা নিয়ে তিনি বলেন, ভোট নিয়ে আমি শতভাগ আশাবাদী। মানুষ বলছে তারা ভোট কেন্দ্রে যাবে। অবাধ, সুষ্ঠু, সুন্দর, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক ভোট উৎসব হবে।

সর্বশেষ খবর