শুক্রবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

রূপগঞ্জে গাজীর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ১০

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

রূপগঞ্জে গাজীর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ১০

দেশীয় অস্ত্র হাতে নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

নারায়গঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে নৌকার প্রার্থী বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী সমর্থিত দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। এ সময় জনমনে সৃষ্টি হয় আতঙ্ক। গতকাল রাত ৭টার দিকে উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভার কাঞ্চন বাজার এলাকায় ওই  সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে আটজনকে আটক করেছে। কাঞ্চন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল কলি পক্ষের সঙ্গে কাঞ্চন পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবদুর রহিম লিটু পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এ সময় দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট হয়। সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া দুই গ্রুপই দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ মহড়া দেয়। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কাঞ্চন পৌর এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কাঞ্চন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল কলির সঙ্গে কাঞ্চন পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবদুর রহিম লিটুর দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলে আসছিল। প্রায় সময়ই এই দুই গ্রুপের মাঝে ধারালো অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে আসছে। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নৌকা প্রতীকের পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় দুই গ্রুপই মাঠে রয়েছে। এখানে উভয় গ্রুপ পেশিশক্তি দেখাতে এবং গ্রুপে জনসংখ্যা বাড়াতে এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের লোকজনকে বিভিন্ন কৌশলে এবং বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে টেনে আনছেন। এনিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। এর জের ধরে দুই গ্রুপই সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেয়। গতকাল রাত ৭টার দিকে আবদুর রহিম লিটুর লোকজন রামদা, চাপাতি, চাইনিজ কুড়ালসহ বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রথমে গোলাম রসুল কলির ছোট ভাই নূর হোসেনের মালিকানাধীন কাঞ্চন বাজারে মুসলিম সুইটস অ্যান্ড হোটেল নামের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় পুরো বাজার এলাকার ব্যবসায়ী এবং ক্রেতাদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে বাজার এলাকা ত্যাগ করে চলে যান। একপর্যায়ে গোলাম রসুল কলির লোকজন এসে প্রতিবাদ করলে উভয় পক্ষের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১০  জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। আহতদের স্থানীয় ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরে ঘটনাস্থলে ভোলাবো তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আটজনকে আটক করা হয়েছে। এদিকে সংঘর্ষের সূত্রপাত নিয়ে উভয় পক্ষ একে অপরকে দোষারোপ করছে বলে স্থানীয়রা জানান।

ভুক্তভোগী নূর হোসেন জানান, কোনো কারণ ছাড়াই অহেতুক আবদুর রহিম লিটুর সন্ত্রাসী বাহিনী আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে এসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে এবং নগদ টাকা ও মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।

অন্যদিকে লিটুর পক্ষের লোকজন জানান, তাদের ওপর প্রথম হামলা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপঙ্কর সাহা বলেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনার নেপথ্যের কারণ জানিয়ে তিনি আরও জানান, দুই গ্রুপের মধ্যে পূর্ব থেকে আধিপত্য নিয়ে বিরোধ ছিল। তবে মূল ঘটনা পুলিশ উদঘাটনে তদন্ত করছে। সংঘর্ষকারীদের আটকে অভিযান চলছে। কাঞ্চনের সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ জনকে থানা হেফাজতে আনা হয়েছে। এরা হলেন জহিরুল হক (২৯), রিফাত (১৮), আবুল কালাম (৩২), শরিফ (২৫), আলামিন (২০), শাকিল হোসেন (২৫), আমিনুদ্দিন (৩৪), কাজী অনিক (৩০), আফজাল (৩৮), মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন (৪৩)।

সর্বশেষ খবর