শিরোনাম
শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

জড়িতদের ধরতে লেক সেল প্রযুক্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে ভয়াবহ নাশকতার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করার দাবি করা হলেও গতকাল পর্যন্ত তাদের কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কেউই। তবে পুলিশ বলছে, গাজীপুরে রেললাইনে নাশকতা এবং তেজগাঁওয়ের ঘটনা একইসূত্রে গাঁথা। একই গোষ্ঠীর নির্দেশে এসব ঘটনা ঘটছে। অন্যদিকে, সংগ্রহকৃত বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজের অধিকতর বিশ্লেষণের পাশাপাশি নাশকতাকারীদের অবস্থান ও তাদের শনাক্ত করতে সম্ভাব্য ঘটনাস্থল এবং বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন এলাকার ২৫০ মিটারের                 মধ্যে ‘লেক সেল’ প্রযুক্তির সহায়তা নিচ্ছে তদন্ত সহায়ক একটি সংস্থা। তারা বলছেন, ওই এলাকার মধ্যে নাশকতায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা যদি মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকেন তাহলে তাদের বের করা সম্ভব হবে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) মিজানুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছেন, অন্যান্য সংস্থার পাশাপাশি পিবিআই শুরু থেকেই ছায়াতদন্ত করছে। বিমানবন্দর স্টেশন, তেজগাঁও স্টেশনের কোয়ার্টার কিলোমিটারের ফুটেজসহ আরও বেশকিছু ফুটেজ নিয়ে আমাদের এক্সপার্টরা কাজ করছেন। পাশাপাশি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নিয়েও কাজ করছি আমরা। নাশকতাকারীরা যদি এর মধ্যে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে থাকেন তাহলে তাদের নিখুঁতভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হবে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিমানবন্দর ষ্টেশনে মাস্ক ও ক্যাপ পরিহিত এক ব্যক্তির চলাফেরা সন্দেহের চোখে দেখলেও গতকাল পর্যন্ত তার পরিচয় সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এর বাইরে তেজগাঁও স্টেশনে টুপি পরিহিত দুজন এবং আরও দুই ব্যক্তির গতিবিধিকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে। তারা ট্রেন থেকে নেমেই দৌড়াচ্ছিলেন। পাঞ্জাবি ও টুপি পরা দুজন কিছুদূর এগোলেও পুলিশ দেখে তাদের পথ পরিবর্তন করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে বলেন, তাদের শরীরের ভাষা বলছে, তারা পুলিশ দেখে ভয় পেয়েছেন। আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছি। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নৃশংস এই ঘটনাটির শুরু থেকেই ছায়া তদন্ত করছে ডিবি। নাশকতায় জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে আমরা আমাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে কাজ করছি। আমাদের চেষ্টার কোনো ঘাটতি নেই। সূত্র আরও বলছে, গাজীপুর এবং তেজগাঁওয়ের ঘটনা একই সূত্রে গাঁথা। কারণ গাজীপুরে রেললাইনে নাশকতায় অংশ নেওয়া ঢাকার দুজন। মূল পরিকল্পনাকারীদের সঙ্গে অবশ্যই তাদের যোগাযোগ রয়েছে। যদিও গতকাল পর্যন্ত তাদের কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি কোনো সংস্থা। এ বিষয়ে গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহাদত হোসেন সুমা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা তাদের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছি। তবে এখনই তাদের নাম প্রকাশ করতে চাচ্ছি না। ঢাকা থেকে তারা গাজীপুরে অংশ নিয়েছেন। অবশ্যই তারা ঢাকার ঘটনার সঙ্গে জড়িত। র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মোশতাক আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছেন, বৃহস্পতিবার এক সাঁড়াশি অভিযানে আমরা মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগে জড়িত সন্দেহে নয়জনকে আটক করেছিলাম। এই অভিযানটি মূলত ছিল দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে বিশেষ বার্তা। এটি অব্যাহত থাকবে। এর বাইরে তেজগাঁওয়ের নৃশংস ঘটনাটির জড়িতদের খুঁজে বের করতে র‌্যাব-১ সহ র‌্যাবের অনেক ব্যাটালিয়ন এবং ইন্টেলিজেন্স ইউনিট কাজ করছে। আমরা বিশ্বাস করি খুব শিগগিরই তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।

সর্বশেষ খবর