রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিএনপি রাজনৈতিক নয় সন্ত্রাসী দল : শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি রাজনৈতিক নয় সন্ত্রাসী দল : শেখ হাসিনা

বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দল নয়। আর জামায়াত যুদ্ধাপরাধী দল। এ যুদ্ধাপরাধী এবং সন্ত্রাসীদের হাত থেকে দেশকে মুক্ত রাখতে হবে। তাহলে দেশে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে। সন্ত্রাসী বিএনপি আর যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের হাতে এ দেশ কোনো দিনই নিরাপদ নয়। গতকাল বিকালে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, নেত্রকোনা, রাঙামাটি এবং বরগুনা জেলার বামনা ও পাথরঘাটা উপজেলার জনসভায় ভার্চুয়ালি দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ অফিস থেকে ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এসব জেলার জনসভায় অংশ নেন। এ সময় উপস্থিত কুষ্টিয়ার নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ইনু ভাইও নৌকায় চড়েছেন। নৌকা যেন দোল খেয়ে পড়ে না যায়, সেদিকে একটু খেয়াল রাখবেন। 

আগামী ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয় হবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে দলটির প্রধান শেখ হাসিনা বলেন, নৌকা মার্কায় ভোট চাই। সবাই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আবারও জনগণের সেবা করার সুযোগ দেবেন। উন্নয়নের ধারা তখনই অব্যাহত থাকবে যখন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, জনগণ তার মনমতো প্রার্থী বেছে নেবে। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে হবে, উন্নয়নের ধারাও অব্যাহত রাখতে হবে। 

ভোট জনগণের সাংবিধানিক অধিকার উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এ নির্বাচন আমরা উন্মুক্ত করে দিয়েছি। আমরা চাই জনগণ অংশগ্রহণ করুক, শান্তিমতো ভোট দিক। তিনি বলেন, সবাই জনগণের কাছে যাবে। জনগণ যাকে ভোট দেবে, সে-ই নির্বাচিত হবেন। গণতন্ত্রকে আমরা সুরক্ষিত করতে চাই।

বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, বিএনপি নির্বাচনে আসেনি। নির্বাচন ঠেকানোর নামে ২০১৩-১৪ সালে যেভাবে তারা অগ্নিসন্ত্রাস করেছিল, আবার তারা সেই ভয়ঙ্কর রূপ নিয়ে (মাঠে) নেমেছে। মাত্র কয়েক দিন আগে রেলে আগুন দিল। ফিসপ্লেট খুলে ফেলল। পুড়িয়ে মানুষ মারল। বাসে আগুন দিল। ঘুমিয়ে থাকা হেলপার মারা গেল।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, জনগণের ভাগ্য নিয়ে আর কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেব না। সন্ত্রাসী বিএনপি আর যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের হাতে এ দেশ কোনো দিনই নিরাপদ নয়। কারণ এরা দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। কাজেই এদের হাত থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করে দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। লন্ডনে পলাতক তারেক রহমানের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, তারেক জিয়ার হুকুমে দেশে আগুনসন্ত্রাস হচ্ছে। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক এলে মুচলেকা দিয়ে আর কখনো রাজনীতি করবে না বলে নাকে খত দিয়ে বিদেশে পাড়ি দেয়। এখন বিদেশ থেকেও হুকুম করছে পুড়িয়ে মানুষ মারার। বিএনপির যেসব নেতা-কর্মী আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ায়, পাপের ভাগীদার তারাই হবে, তারেক জিয়ার কিচ্ছু হবে না। ও তো ওখানে জুয়া খেলে ভালোই আছে। আপনারা নাচেন, কার জন্য নাচেন? পালানোর পর সে (তারেক) তো দেশে আসেনি। মা মরে মরে, তাও তো দেখতে আসে না। সাহস থাকলে একবার দেশে এসে দেখুক। এ দেশের মানুষ এ হত্যাকান্ডের প্রতিশোধ নেবে।

শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন উৎসবমুখর ও সুষ্ঠু হবে। সব প্রার্থী ভোটারদের কাছে যাবেন। তাদের মনের কথা বোঝার চেষ্টা করবেন। তিনি বলেন, ‘মানুষ নিজের পছন্দমতো ভোট দিতে পারলেই গণতান্ত্রিক ধারা বজায় থাকবে। দেশটা এগিয়ে যাবে। এদের (বিএনপি-জামায়াত) হাত থেকে দেশ রক্ষা করার আহ্বান জানাই সবাইকে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। আজকে দেশ বদলে গেছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যেন বাংলাদেশকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারি সেভাবেই আমাদের দেশকে গড়ে তুলতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, ইতোমধ্যে আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছি। বাংলাদেশে প্রতিটি জনগণকে আধুনিক বিজ্ঞান প্রযুক্তি শিক্ষায় সুশিক্ষিত করব। স্মার্ট জনগোষ্ঠী হবে, স্মার্ট সরকার হবে, অর্থনীতি স্মার্ট হবে, সমাজব্যবস্থা স্মার্ট হবে। আমরা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলব। বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে চলব; এটাই আমাদের লক্ষ্য।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, নেত্রকোনা, রাঙ্গামাটি এবং বরগুনা জেলার বামনা ও পাথরঘাটা উপজেলা প্রান্তে অনুষ্ঠিত জনসভায় যুক্ত হয়ে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। এ ছয়টি জেলার নির্বাচনি জনসভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা ছাড়াও জেলা, উপজেলা, থানা, পৌর, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীসহ বিপুলসংখ্যক সর্বস্তরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী এসব জেলার মানুষের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাইলে উপস্থিত হাজার হাজার মানুষ দুই হাত তুলে তাঁর প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থনের কথা জানান।

সর্বশেষ খবর