শিরোনাম
রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

নির্বাচনি সহিংসতায় নিহত আরও ২

♦ মাদারীপুরে স্বতন্ত্রের কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা ♦ সিরাজগঞ্জে বোমায় আহত নৌকা সমর্থকের মৃত্যু ♦ ফরিদপুরে হামলা ♦ কুমিল্লায় প্রচারে গুলি, গাড়ি ভাঙচুর ♦ রূপগঞ্জে পানি-বিদ্যুৎ বন্ধের হুমকি ♦ ভোট প্রতিহতের চেষ্টা করলে সাত বছরের জেল : ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচনি সহিংসতায় নিহত আরও ২

কুমিল্লায় গতকাল স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রচারে গুলি গাড়ি ভাঙচুর -বাংলাদেশ প্রতিদিন

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর মধ্যে সংঘাত, সহিংসতায় খুনোখুনির ঘটনা ঘটছে। মাদারীপুরের কালকিনিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক কর্মীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। সিরাজগঞ্জে বোমা বিস্ফোরণে আহত নৌকা প্রতীকের এক সমর্থক গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে  মারা গেছেন। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রার্থীদের প্রচারণা জোরদারের পাশাপাশি সংঘাত-সহিংতার ঘটনা বাড়ছে। আমাদের জেলা প্রতিনিধিরা পাঠিয়েছেন সেসব খবর। এদিকে নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান গতকাল বলেছেন, ভোট প্রতিহত করার অধিকার কারও নেই। কেউ প্রতিহত করার চেষ্টা করলে সাত বছরের জেল হবে।

মাদারীপুর : মাদারীপুরের কালকিনিতে এসকান্দার খাঁ (৬৫) নামে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক কর্মীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহত এসকান্দার মাদারীপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা সিদ্দিকীর কর্মী ও উপজেলার লক্ষ্মীপুর এলাকার ভাটাবালী গ্রামের আয়ুব আলী খাঁর ছেলে। গতকাল ভোরে এ ঘটনা ঘটে। হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে জড়িতদের বিচার দাবি করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা।

নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এসকান্দার খাঁ গতকাল ফজরের নামাজ শেষে বাড়ির দিকে যাওয়ার সময় নৌকার প্রার্থীর কিছু সমর্থক এসকান্দারকে কুপিয়ে ও হাতুড়ি পেটা করে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা তাকে প্রথমে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। তার অবস্থার অবনতি হলে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় নির্বাচনি এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

নিহত এসকেন্দার খার ছেলে মিলন খাঁ বলেন, আমার বাবাকে নৌকার লোকজন হত্যা করেছে। আমি এ হত্যার বিচার চাই। আমার বাবা তাহমিনা বেগমের ঈগল মার্কার সমর্থক ছিল। এদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কর্মী লক্ষ্মীপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুল বেপারী বলেন, এসকান্দার মারা গেছে তার পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে, কোনো রাজনৈতিক কারণে নয়। বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য কুচক্রী মহল উঠেপড়ে লেগেছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলাউল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে পুলিশ ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। দোষীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

ফরিদপুর : স্বতন্ত্র প্রার্থীর ৫ সমর্থককে পিটিয়ে আহত : ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে ভোট চাওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদের ৫ জন সমর্থক আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। আহতদের ফরিদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের চৌধুরীবাড়ি মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদের সমর্থক খোকন মল্লিক, লালন ম ল, সোহাগ মাতুব্বর, বিল্লাল আলী শেখ এবং শাহিদ সরদার আহত হন।

আহত খোকন মল্লিক জানান, রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের চৌধুরীবাড়ি মসজিদের সামনে স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদের ঈগল প্রতীকের ভোট চাওয়ার সময় প্রতিপক্ষের সমর্থক স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম মজনু এবং তার সহযোগীরা তাদের গতিরোধ করে। এ সময় উভয় পক্ষে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে চেয়ারম্যান এবং তার সঙ্গের লোকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদের ঈগল মার্কার সমর্থকদের মারপিট করে।

কুমিল্লা : স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রচারণায় গুলি, গাড়ি ভাঙচুর : কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মুনতাকিম আশরাফ টিটুর নির্বাচনি প্রচারণায় বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পৌর মেয়রের ছেলে সাকিবের গাড়ি ভাঙচুর এবং কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। পৃথক ঘটনায় কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দুজনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

গতকাল এ অভিযোগ করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মুনতাকিম আশরাফ টিটু। তিনি বলেন, শুক্রবার বিকালে পৌরসভার হারং উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা প্রচারণায় গেলে উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সদস্য শামীম হোসেনের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা নৌকার স্লোগান দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। তাদের পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করা হয়। এ ছাড়া উপজেলার বরকাইট ইউনিয়নের শ্রীমন্তপুর মসজিদের সামনে অপর একটি প্রচারণা দলের ওপর হামলা চালায় নৌকা প্রার্থীর শাহজাহানসহ তাদের লোকজন।

বাউফল : নৌকা সমর্থকদের কুপিয়ে জখম : পটুয়াখালীর বাউফলে নৌকা সমর্থকদের কুপিয়ে ও গুলি করে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাউফল উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব হাওলাদারের ছেলে বগা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান ২০-২২ জন সহযোগী নিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে আহতরা দাবি করছেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি শর্টগানের গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। আহতরা হলেন মো. রেজাউল খান (৫০), অলিউল (২৫) ও ফেরদাউস মুন্সী (২০)। আহতদের ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, বগা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ও নৌকার সমর্থক মো. রেজাউল খান সহযোগীদের নিয়ে শুক্রবার রাতে ইউনিয়নের যাদুরকাঠি হিন্দু পাড়ায় নৌকা মার্কার একটি উঠান বৈঠক শেষে পার্শ্ববর্তী অসুস্থ কর্মী দিলীপ মাস্টারকে দেখতে যান। রাত পোনে ১০টার দিকে ওঁতপেতে থাকা দুর্বৃত্তরা রেজাউল খানের সহযোগীদের গতিরোধ করে এলোপাতাড়ি গুলি করে কুপিয়ে আহত করে।

কুষ্টিয়া : কুমারখালীতে সংঘর্ষে পাল্টাপাল্টি মামলা : কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও নির্বাচনি কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। কুমারখালী থানার ওসি আকিবুল ইসলাম বলেছেন, দুটি মামলায় দুই শতাধিক মানুষকে আসামি করা হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রউফের পক্ষে মামলা করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মুজিবুল হক। এতে ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে দেড় শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। অন্যদিকে নৌকার পক্ষে থানা ছাত্রলীগ নেতা তুষার ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেছেন। এসব মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া-৪ আসনে নৌকা ও স্বতন্ত্র ট্রাক প্রতীকের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ছয়জন আহত হন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কুমারখালী উপজেলার বহলবাড়িয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রউফের ট্রাক প্রতীকের নির্বাচনি অফিসে নৌকার প্রার্থী সেলিম আলতাফ জর্জের সমর্থকরা প্রথমে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। পরে তারা  ছাতিয়ান অফিস ভাঙচুর করে। এরপর জয়বাংলা অফিস ভাঙতে এলে তারা প্রতিরোধের মুখে পড়ে। কুমারখালী পৌরসভার প্যানেল মেয়র হারুন অর রশিদ বলেন, আমাদের লোকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর অফিসের সামনে দিয়ে নৌকার মিছিল করতে করতে যাচ্ছিল। সেই সময় যদুবয়রা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। পরে সংঘর্ষ হয়। এতে আমাদের লোকই বেশি আহত হয়েছে।

নওগাঁ : স্বতন্ত্র প্রার্থীর অফিসে হামলা : নওগাঁ-৪ আসন মান্দায় নৌকা প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম ব্রহানী সুলতান মামুদ গামার নির্বাচনি অফিস ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। হেলমেট পরে লাঠিসোঁটা নিয়ে নৌকার ৩০-৪০ জন নেতা-কর্মী এ হামলা চালিয়েছে বলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগ। গতকাল দুপুরে উপজেলার মৈনম বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থী গামার তিন কর্মী-সমর্থক আহত হন। তাদের নওগাঁ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন- আলাম সরদার (৪৫), সামসুল ইসলাম (৫০) ও এ বি এম হাসান রিপু (৫৫)। এ ঘটনার প্রতিবাদে কয়েক শ সমর্থক মৈনম-ভোলাবাজার রাস্তা অবরোধ করে।

ভোট প্রতিহতের চেষ্টা করলে সাত বছর জেল : এদিকে নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেছেন, ভোট প্রতিহত করার অধিকার কারও নেই। কেউ প্রতিহত করার চেষ্টা করলে সাত বছরের জেল হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেটকে যথাযথ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গতকাল আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এমন হুঁশিয়ারি দেন তিনি। তিনি বলেন, মাঠেও একই কথা বলেছি। কেউ ভোটে নাও আসতে পারেন, ভোট দিতেও নাও পারেন। ভোট প্রতিহত করার অধিকার কারও নেই। কিন্তু অন্যকে প্রতিহত করলে আমরা এবার সংশোধনী এনেছি যে সাত বছর পর্যন্ত জেল বা অর্থদন্ড করার জন্য। পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেট সবাইকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আনিছুর রহমান বলেন, দায়িত্ব অবহেলা করলে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকেই আমরা ছাড় দেব না। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে এই কমিশনার আরও বলেন, ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য লিফলেট বিতরণ হলে চোখে পড়লেই ব্যবস্থা নেবে। তিনি বলেন, আমাদের কাছে হেভি ওয়েট, লাইট ওয়েট বলে কেউ নেই। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসবে তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ শোডাউন করতে পারবে না। উৎসবমুখর ভোট থাকবে।

এদিক রূপগঞ্জে সাধারণ ভোটারদের সরাসরি হুমকি দিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট চাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগ অনুযায়ী, ‘নৌকা মার্কায় যদি ভোট না দেয় তাদের বাড়িতে পানি ও বিদ্যুৎ বন্ধ’ করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ফরিদ ভুইয়া মাসুম।

বগুড়া : যুবলীগের দুই গ্রুপে মারামারি : বগুড়ায় নির্বাচনি সাধারণ সভা শেষে যুবলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এই সময় যুবলীগের ৩ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। গতকাল বিকালে শহরের টেম্পল রোডে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহত দুই যুবলীগকর্মী শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন ও দেশ টিভির ক্যামেরাপারসন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

মুন্সীগঞ্জ : আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুর : নির্বাচনের প্রচারণাকে কেন্দ্র করে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় আওয়ামী লীগের নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে দ্বন্দ্বে আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বিকালে উপজেলার ভবেরচর পার্টি অফিসে এ ভাঙচুরের ঘটনাটি ঘটে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। স্থানীয়রা জানান, বিকালে ভবেরচর এলাকায় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে দিয়ে স্বতন্ত্র কাঁচি প্রতীকের হাজি মো. ফয়সাল বিপ্লবের একটি মিছিল গান বাজিয়ে  যাচ্ছিলো। এ সময় পার্টি অফিসেও নৌকার পক্ষে নির্বাচনি গান বাজছিল। সেই গান বাজানো নিয়ে তর্কবির্তকের একপর্যায়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা পার্টি অফিসে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চলায়।

বোমায় আহত নৌকা সমর্থকের মৃত্যু : সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের বেলকুচি পৌর এলাকায় নৌকার প্রার্থী এমপি মমিন মন্ডলের সমর্থক শ্রমিক লীগ নেতা মোতালেব সরকারের বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণে আহত ফজলুল হক (৪৫) মারা গেছেন। এ ঘটনায় জিন্নাহ নামে আরও একজন আহত হয়েছেন। শুক্রবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এর আগে মঙ্গলবার বেলকুচি পৌর এলাকার সুবর্ণসাড়া গ্রামে মোতালেব হোসেন সরকারের বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে। নিহত ফজলুল হক কুষ্টিয়া জেলার সদর উপজেলার মিনপাড়া গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অস্ত্র মামলাসহ মোট ছয়টি মামলা রয়েছে। আহত জিন্না সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার সদিয়া চাঁদপুর গ্রামের তাছের আলীর ছেলে।  স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে বিকট শব্দ শোনার পর মোতালেব সরকারের বাড়ির সামনে গেলে ভিতরে প্রবেশ করতে দেয়নি। তবে কিছুক্ষণ পর কালো রঙের একটি মাইক্রোবাসে আহত অবস্থায় দুজনকে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। তারা আরও জানান, বোমা তৈরি করতে গিয়ে বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটতে পারে।  বেলকুচি পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা বলেন, বোমা বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছি। নৌকার প্রার্থী আব্দুল মমিন মন্ডল এমপির সমর্থক মোতালেব সরকার নির্বাচনে নাশকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বাড়িতে বোমা তৈরি করছিলেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও রয়েছে।

নিহত ফজলুর ভাই মজনু বলেন, বুধবার জানতে পারি আমার ছোট ভাই ফজলু বোমা হামলায় আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে আমরা ঢাকা মেডিকেল যাই। সেখানে জানতে পারি সিরাজগঞ্জের বেলকুচির মোতালেব নামে এক আওয়ামী লীগ নেতা বোমা তৈরির জন্য আমার ভাইকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে বোমা বিস্ফোরণেই ফজলু আহত হয়েছেন। তাকে একদিন লুকিয়ে রেখেছিল মোতালেব। পরে তার চিৎকার সইতে না পেরে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।

সর্বশেষ খবর