বুধবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
সাংবাদিকদের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

তদন্ত কমিটির সামনে অর্থমন্ত্রীর ছোট ভাই

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার লালমাই উপজেলার হাজতখোলায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আ হ ম মুস্তফা কামালের প্রচারণার সময় দুই সাংবাদিকের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক। কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) সালমা ফেরদৌস। সদস্য সচিব সিনিয়র সহকারী সচিব ইমদাদুল হক তালুকদার, সদস্য লালমাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌমিতা দাস। গতকাল সালমা ফেরদৌস ঘটনায় সম্পৃক্ত সাংবাদিক ও অভিযুক্ত অর্থমন্ত্রীর ছোট ভাই সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ারের বক্তব্য শোনেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সালমা ফেরদৌস। এ সময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আরও আসেন অর্থমন্ত্রীর ভাতিজা লালমাই উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুল হাসান শাহীন, দৈনিক সংবাদের মাসুদ রানা, দৈনিক আমাদের কুমিল্লার সাংবাদিক গাজী মামুন। তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব সিনিয়র সহকারী সচিব ইমদাদুল হক তালুকদার বলেন, তদন্তে দুই পক্ষের কথা শুনেছি। এ বিষয়ে এখন কিছু বলা যাচ্ছে না।

তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সালমা ফেরদৌস বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মহোদয় আমাদের বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। তাই দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তদন্ত-পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অর্থমন্ত্রীর ছোট ভাই সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার বলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সালমা ফেরদৌসের কক্ষে গেছি। আমি বলেছি, তারা (সাংবাদিক) আগে ছাত্রলীগ করত। কখন সাংবাদিক হয়েছে জানি না। ভুল বোঝাবুঝিতে এমনটা হয়েছে। সূত্র জানান, গোলাম সারওয়ার মঙ্গলবার রাত ৮টার পর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আসেন। এ সময় তিনি স্থানীয় সংবাদকর্মীদের দেখে সুর নরম করে বলেন, ‘বুজ্জনি বয়স হয়েছে। অনেকের নাম ও চোহারা মনে থাকে না। তাই এমনটি হয়েছে।’এ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী দৈনিক সংবাদের লালমাই প্রতিনিধি মাসুদ রানা বলেন, আজ (গতকাল) আমাদের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে তদন্ত কমিটি ডেকেছিল। আমরা সেখানে বলেছি, অর্থমন্ত্রীর মেয়ে নাফিসা কামাল সোমবার লালমাই উপজেলার হাজতখোলায় নৌকার প্রচারে আসেন। উপজেলায় কর্মরত সংবাদকর্মীরা সংবাদ সংগ্রহের জন্য হাজতখোলা বাজারে যাই। সবাই ভিডিও করছিল। এমন সময় অর্থমন্ত্রীর ছোট ভাই গোলাম সারওয়ার সাহেব এসে এক সাংবাদিকের ক্যামেরা নিয়ে নেন, আরেকজন সাংবাদিকের ক্যামেরা নিয়ে যাওয়ার জন্য ধস্তাধস্তি করেন। সাংবাদিক গাজী মামুন বলেন, এ ঘটনার পর চেয়ারম্যান সাহেব বলেছেন, তিনি আমাকে চিনতে পারেননি। তাই এমনটি হয়েছে। আমি পাঁচ বছর সাংবাদিকতা করি। চেয়ারম্যান সাহেবের নিউজ বেশি করেছি। তিনি আমাকে না চেনার কথা নয়। এদিকে আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, প্রচারণায় নেতা-কর্মীদের সমন্বয়হীনতায় তিনি ক্ষিপ্ত ছিলেন। তাই তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন আচরণ করেন। উল্লেখ্য, অর্থমন্ত্রীর মেয়ে নাফিসা কামাল সোমবার লালমাই উপজেলার হাজতখোলায় নৌকার প্রচারে আসেন। সাংবাদিকরা প্রচারের ছবি তোলার সময় লালমাই বার্তার স্টাফ রিপোর্টার কাজী নিমেলের ক্যামেরাটি ছিনিয়ে নেন অর্থমন্ত্রীর ছোট ভাই উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার। এ ছাড়া দৈনিক আমাদের কুমিল্লার লালমাই প্রতিনিধি গাজী মামুনের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি ওই সংবাদকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, সাংবাদিকের এত ভিডিওর দরকার নেই। সারাক্ষণ খালি ছবি তোলা আর ভিডিও করার কোনো দরকার নেই। আমরা ছবি তুলতে ঢাকা থেকে টাকা দিয়ে লোক এনেছি।

সর্বশেষ খবর