রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
পুলিশের ব্যাখ্যা

রাজনৈতিক পরিচয়ে নয়, গ্রেফতার হচ্ছে নির্দিষ্ট মামলায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘কাউকেই রাজনৈতিক পরিচয়ে নয়, নির্দিষ্ট মামলায় গ্রেফতার করা হচ্ছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুলিশের কাছে সব প্রার্থীই সমান। প্রচারের ক্ষেত্রে সব প্রার্থী যেন সমান সুযোগ পান, তার নির্দেশনা দেওয়া আছে।’ এ মন্তব্য করেছেন পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (অপারেশন) মো. আনোয়ার হোসেন।

গতকাল দুপুরে পুলিশ সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘নির্বাচন সামনে রেখে নাশকতা অব্যাহত থাকলেও পুলিশ সেগুলো প্রতিরোধে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে। যারা গ্রেফতার হয়েছেন তারা রাজনৈতিক কারণে নয়, মামলার আসামি থাকায় গ্রেফতার হয়েছেন।’ বিএনপি-জামায়াতসহ বিরোধী পক্ষের ২৬ হাজার নেতা-কর্মী গ্রেফতার করা হয়েছে এ তথ্য সঠিক কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পরোয়ানা তামিলসহ বিভিন্ন মামলা ও অভিযোগে সারা দেশে গড়ে ১ হাজার ৬০০ জনের মতো গ্রেফতার হয়েছে। তাদের মধ্যে রাজনৈতিক দলের পদধারী সংখ্যা কত আমাদের কাছে তার হিসাব নেই। সারা দেশ থেকে তথ্য নিয়ে সে হিসাব তৈরির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কেউ ফৌজদারি অপরাধে সম্পৃক্ত হলে পুলিশ শুধু তাদেরই গ্রেফতার করছে।’ ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে বাড়তি ফোর্স মোতায়েন রয়েছে। কোনো কোনো দুর্গম এলাকার কেন্দ্রও ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। সেগুলোর বিষয়েও পুলিশ বাড়তি ফোর্স দিয়ে কাজ করছে। পুলিশ অবাধ ও শান্তিপূর্ণ একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সর্বাত্মক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।’ বিভিন্ন এলাকায় বৈধ অস্ত্র প্রদর্শন করে হুমকি দেওয়া হচ্ছে- অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দফতরের এই ডিআইজি বলেন, ‘অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে আমাদের বিশেষ অভিযান চলমান। বৈধ অস্ত্র প্রদর্শন ও বহন নিষিদ্ধ করে একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছে। নির্বাচনকালে কেউ বৈধ অস্ত্র প্রদর্শন বা বহন করতে পারবে না। আমাদের কাছে নির্দিষ্ট এলাকায় বৈধ অস্ত্র প্রদর্শনের দুটি অভিযোগ এসেছে। আমরা তদন্ত করে দেখেছি সেগুলো ছিল খেলনা অস্ত্র।’ নির্বাচনকেন্দ্রিক মারামারি ও দাঙ্গাহাঙ্গামা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যে কোনো ঘটনার পরই মামলা হচ্ছে। পুলিশ ওইসব ঘটনায় দায়ীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ কোনো ধরনের ছাড় দিচ্ছে না। পুলিশ পেশাদারি ও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করছে। পুলিশের কোনো কর্মকর্তার নিরপেক্ষতা হারানোর অভিযোগ এলে তৎক্ষণাৎ তাকে বদলি বা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এর পরও ওই কর্মকর্তার বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে। নিরপেক্ষতা হারানোর প্রমাণ পাওয়া গেলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ভোট কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনি এলাকায় রিটার্নিং কর্মকর্তা কোনো অভিযোগ পেলে সেগুলোর প্রতিকারে ব্যবস্থা নিচ্ছেন। পুলিশ তাদের সহযোগিতা করছে। কেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসাররা যেভাবে নিরাপত্তা নির্দেশনা দেবেন পুলিশ সেভাবে কাজ করবে।’

ডিআইজি অপারেশন আরও বলেন, ‘নির্বাচনের সময় সারা দেশে ১ লাখ ৮৯ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকছে। নির্বাচনের দায়িত্বে, মোবাইল টিম, স্ট্রাইকিং টিম, ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গেও ডিউটিতে থাকবে পুলিশ সদস্য। এমনকি ওইদিন যিনি থানার সিসি লেখেন, তিনিও নির্বাচনি দায়িত্বে থাকবেন।’ দাগি আসামি ও তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীরা জামিনে বেরিয়ে নির্বাচনি এলাকায় প্রচারে অংশ নেওয়ার বিষয়ে ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কোনো আসামি জামিনে বেরিয়ে নতুন করে অপরাধে না জড়ালে পুলিশের গ্রেফতার করার সুযোগ নেই। জামিন পাওয়া আসামিদের বিষয়ে পুলিশের বিশেষ নজরদারি অব্যাহত আছে। তারা কোনো অপরাধ করলে সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনা হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এআইজি এনামুল হক সাগর ও পুলিশ সদর দফতরের উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা এ কে এম কামরুল আহসান।

সর্বশেষ খবর