বুধবার, ৩ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

নারায়ণগঞ্জের এসপি রূপগঞ্জের ওসির ওপর অনাস্থা তিন প্রার্থীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ রূপগঞ্জ আসনে পক্ষপাতমূলক আচরণের কারণে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল ও রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহার ওপর অনাস্থা এনেছেন হেভিওয়েট তিন প্রার্থী। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর গতকাল তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শাহজাহান ভূঁইয়া ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার ও রূপগঞ্জের ওসির নেতৃত্বে রূপগঞ্জের নির্বাচন পরিচালিত হলে সংসদ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। একই সঙ্গে ভোটাররা কেন্দ্রে যেতে নিরুৎসাহিত হবে এবং সাহস পাবে না। সুষ্ঠু ভোটের স্বার্থে শিগগিরই ঊর্ধ্বতন এই দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তারা।

অভিযোগে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার বলেন- স্থানীয় সংসদ সদস্য বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর নিয়ন্ত্রিত সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীরা কর্মীদের প্রচারণায় বাধা দিচ্ছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। প্রতিবাদ করতে গেলেই নির্যাতিত হতে হচ্ছে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিতে গেলে নিচ্ছেন না তারা। উল্টো ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এসব বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল ও রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহাকে অবহিত করার পরও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। তারা একপক্ষীয় কাজ করছেন। আমি তাদের ওপর অনাস্থা প্রকাশ করছি। অবিলম্বে তাদের প্রত্যাহার করা না হলে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়।

স্বতন্ত্র আরেক প্রার্থী মো. শাহজাহান ভূঁইয়া অভিযোগে উল্লেখ করেন, নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে গিয়ে আমি এবং আমার কর্মী-সমর্থকরা গাজী গোলাম দস্তগীর এবং তার সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে বাধার সম্মুখীন হচ্ছি। যা নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল। একই সঙ্গে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় আয়েশা আক্তার নামে এক নারীর ওপর হামলা ও মারধর করেছে গাজীর অনুসারীরা। দাউদপুরে অস্থায়ী নির্বাচনি প্রচারণা কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে এবং নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নেওয়া কর্মী-সমর্থকদের প্রতিনিয়ত হুমকি-ধমকি দিচ্ছে তারা। এই সন্ত্রাসী বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও রংধনু গ্রুপের মালিক রফিকুল ইসলাম। শুধু হুমকিই নয়, এসব কর্মীর বসতবাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালাচ্ছে। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। উল্টো কর্মী-সমর্থকদের ভয় দেখানো, এলাকা থেকে বিতাড়িত করা এবং মিথ্যা মামলায় জড়াচ্ছে। এ কাজে সরাসরি ইন্ধন দিচ্ছেন রূপগঞ্জ থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা এবং নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল। পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণের কারণে তাদের ওপর অনাস্থা প্রকাশ করছি এবং তাদের দ্রুত প্রত্যাহার করা হোক। এ ছাড়া জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম অভিযোগে উল্লেখ করেন, নৌকার প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজীর সন্ত্রাসীরা নির্বাচনি প্রচারণা শেষে কর্মীরা বাড়ি ফেরার পথে বিভিন্ন স্থানে হামলা করছে। তারা নারী কর্মীদের আক্রমণ করছে। ভোটের পর গুম-খুনের হুমকি দিচ্ছে। জমি ও বাড়ি দখল করে এলাকাছাড়া করা হবে বলেও হুমকি দিচ্ছে। অধিকাংশ জায়গায় লাঙল প্রতীকের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। সন্ত্রাসীরা অস্ত্র উঁচিয়ে প্রকাশ্যে কর্মীদের হুমকি দিচ্ছে। ভুক্তভোগীরা থানায় গেলে অভিযোগ নেওয়া হচ্ছে না। উল্টো যারা সন্ত্রাসী তাদের দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সাধারণ ভোটারদের ও ভুক্তভোগীদের হয়রানি করছে। এ ছাড়া সৎ প্রিসাইডিং অফিসারদের ভয় ও চাকরিচ্যুত করার হুমকি দিচ্ছে। এই সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্রটিকে নিয়ন্ত্রণ করছে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও রংধনু গ্রুপের মালিক রফিকুল ইসলাম। সে শুধু হুমকিই নয়, কর্মীদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালাচ্ছে। সার্বিক বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। একপক্ষীয় আচরণের কারণে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল ও রূপগঞ্জের ওসি দীপক চন্দ্র সাহার ওপর অনাস্থা প্রকাশ করছি। অবিলম্বে তাদের প্রত্যাহার দাবি করছি।

 

সর্বশেষ খবর