শুক্রবার, ৫ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
নারায়ণগঞ্জে জনসভায় শেখ হাসিনা

বিএনপি নির্বাচনে ভয় পায়

রোমান চৌধুরী সুমন ও এম এ শাহীন, নারায়ণগঞ্জ

বিএনপি নির্বাচনে ভয় পায়

২০০৮ সালের নির্বাচনে ৩০ সিট পেয়ে হেরে যাওয়ার পর থেকে বিএনপি নির্বাচনে আসতে ভয় পায় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের উন্নয়ন এগিয়ে নিতে নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জ্বালাও-পোড়াও, মানুষ খুন বিএনপির একমাত্র গুণ। এটা তারা পারে, আর কিছু পারে না।

গতকাল বিকালে নারায়ণগঞ্জ শহরের ইসদাইর এলাকায় শামসুজ্জোহা ক্রীড়া কমপ্লেক্স মাঠে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিকাল সোয়া ৩টার দিকে শহরের এ কে এম শামসুজ্জোহা ক্রীড়া কমপ্লেক্স মাঠের জনসভাস্থলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৌঁছালে নেতা-কর্মীরা তাকে স্লোগানে স্লোগানে বরণ করে নেন। প্রধানমন্ত্রীও হাত নেড়ে উপস্থিত জনতাকে শুভেচ্ছা জানান। দুপুর ১২টার মধ্যেই সমাবেশ স্থলের মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে। জেলার বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড থেকে সেই সকাল ১০টায় শুরু হয়ে একের পর এক মিছিল আসতে থাকে সমবেশ স্থলে। মিছিলকারীরা বাদ্য-বাজনা বাজিয়ে, নানা রঙের টি-শার্ট ও ক্যাপ পরে নৌকা প্রতীক নিয়ে তারা সমাবেশ স্থলে পৌঁছায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় ঐক্যজোট, আর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আমাদের মহাজোট ছিল। সেই নির্বাচনে শুধুমাত্র নৌকা মার্কায় আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ২৩৩টি সিট। আর বিএনপি পেয়েছিল মাত্র ৩০ সিট। বাকিগুলো আমাদের যারা জোটে ছিল তারা পেয়েছিল। তারপর থেকে বিএনপি আর নির্বাচনে আসতে চায় না, ভয় পায়। যার জন্য তারা সন্ত্রাস করে। নারায়ণগঞ্জের ওপর দিয়ে তিনটি মেট্রোরেল লাইন স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, নারায়ণগঞ্জকে স্মার্ট সিটিতে পরিণত করা হবে। যে কোনো আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিল নারায়ণগঞ্জের মানুষ।

শেখ হাসিনা বলেন, ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘কেউ দাবায় রাখতে পারবা না’। তো বাংলাদেশকে কেউ দাবায় রাখতে পারবে না। নির্বাচন ঘিরে অনেক চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র হয়েছিল। নির্বাচন যাতে না হয়, সেই চক্রান্ত এখনো আছে। যেহেতু নিজেরা নির্বাচন করে জিততে পারবে না, কাজেই দেশের মানুষকে বঞ্চিত করতে চায় ভোটের অধিকার থেকে। তিনি বলেন, মিলিটারি ডিক্টেটররা যখন একে একে ক্ষমতায় এসেছে, জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এখন আবার তারা একই কাজ করতে চায়। আমরা বলেছি নির্বাচন হবে। তিনি বলেন, সবাই ভোট কেন্দ্রে যাবেন, ভোট দিয়ে প্রমাণ করবেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র বিদ্যমান। ২০০৯ থেকে ২০২৩, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে। আজ আমরা ২০২৪ সালে পা দিয়েছি। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলে বাংলাদেশের এত উন্নতি হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, এখন মানুষ সেবা পাচ্ছে, বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আর বিএনপি সেখানে কী করে, আপনারা দেখেছেন। ২৮ অক্টোবর তারা কী ভয়ংকরভাবে পুলিশের ওপর আক্রমণ করেছে। পুলিশকে ফেলে পিটিয়ে হত্যা করেছে। পুলিশ হাসপাতালে ঢুকে অ্যাম্বুলেন্স জ্বালিয়ে দিয়েছে। রোগী নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স যাচ্ছে, সে অ্যাম্বুলেন্সে আক্রমণ করেছে এবং সেখানে অনেক পুলিশ সদস্যকে আহত করেছে।

 ঠিক ২০১৩ সালে যেভাবে হত্যা করেছিল, ঠিক একইভাবে আবারও করেছে। তিনি বলেন, প্যালেস্টাইনে (ফিলিস্তিন) ইসরায়েল যেভাবে হামলা করছে, হাসপাতালের ওপর বোম্বিং (বোমাবর্ষণ) করছে, ঠিক বিএনপিও সেই ইসরায়েলকে অনুসরণ করে আজ পুলিশ হাসপাতালে আক্রমণ, অ্যাম্বুলেন্সে আক্রমণ করছে। ওদের মনুষ্যত্ব বলে কিছু নেই। আজকে নির্বাচনে তারা আসেনি, সেটি তাদের ইচ্ছা। কিন্তু মানুষের ভোটের অধিকারে বাধা দেওয়া কখনোই দেশের জনগণ মেনে নেবে না। এ অধিকার মানুষের অধিকার। সুতরাং, ৭ জানুয়ারির নির্বাচন ইনশা আল্লাহ হবে। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে দলকে বিজয়ী করার জন্য সবাইকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদের মার্কা নৌকা মার্কা, এ নৌকায় ভোট দিয়ে দেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে, এ নৌকা আজ উন্নয়ন দিয়েছে, এই নৌকা-ই আগামী উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। তাই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদের প্রার্থীদের আপনারা জয়যুক্ত করবেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই-এর সভাপতিত্ব জনসভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ কে এম শামীম ওসমান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম সেলিম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু ও যুবলীগের সভাপতি শেখ ফজলে শামস পরশসহ অনরা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর