শনিবার, ৬ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

যাত্রীবাহী ট্রেনে নাশকতার আগুন, চার লাশ উদ্ধার

ডেমরায় বাস, দুই জেলায় পাঁচ ভোট কেন্দ্রে আগুন

নিজস্ব প্রতিবেদক

যাত্রীবাহী ট্রেনে নাশকতার আগুন, চার লাশ উদ্ধার

ঢাকার গোপীবাগে গতকাল রাতে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক দিন আগে এবার রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। গত রাতে এ ঘটনায় দুই শিশুসহ চারজন অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যায়। ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন জানান, নিহতের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে আহত হয়েছে কমপক্ষে ৩০ জন। তাদের অনেকেই শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ট্রেনের আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট কাজ করে। এ ঘটনায় ট্রেনের দুই যাত্রীকে পুলিশি নজরদারিতে রাখা হয়েছে। তাদের বয়স ৩০ থেকে ৩২। তারা কুষ্টিয়া থেকে আসছিলেন। এদিকে গত রাতে ডেমরায় বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে।

ভোট ঠেকানোর আন্দোলনে থাকা বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা দলগুলোর ৪৮ ঘণ্টার হরতাল শুরুর আগের রাতে রাজধানীতে যাত্রীবাহী চলন্ত ট্রেনে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বেনাপোল থেকে পদ্মা সেতু হয়ে আসা ঢাকাগামী ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’ নামে নতুন এ ট্রেনটি কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছার আগেই গোপীবাগে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। রাজধানীতে চলন্ত ট্রেনে আগুন লাগানোর ১৬ দিনের মাথায় একই কায়দায় ফের আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটল। এদিকে এ ঘটনায় হতাহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নাশকতা কি না খতিয়ে দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন। এদিকে গত রাতে বাংলাদেশ রেলওয়ে বিভাগীয় সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী মো. সৌমিক শাওন কবিরকে প্রধান করে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। জানা গেছে, রাত ৯টা ৫ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত ঘটলে অন্যান্য বগিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিস সংবাদ পেয়ে রাত ৯টা ২৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছৈ আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। ততক্ষণে পাঁচটি বগিতে দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে থাকে। ফায়ার সার্ভিস একটি বগি থেকে জীবন্ত দগ্ধ লাশ উদ্ধার করে। অগ্নিদগ্ধ বেশ কয়েকজনকে উদ্ধারের পর শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।

আগুনের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বগিগুলো দাউদাউ করে জ্বলছে। অসহায় এক যাত্রী প্রাণ বাঁচানোর জন্যে জানালা পর্যন্ত এলেও বের হতে পারেননি। সেখানেই জীবন্ত দগ্ধ হতে দেখা যায়। এ সময় প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ভেতরে আগুন দেখতে পেয়ে নিজেরা বের হয়ে আসেন। এ সময় এক যাত্রী বের হওয়ার চেষ্টা করেন। তারা তাকে সাহায্য করেন। কিন্তু তাঁর স্ত্রী-সন্তান পুড়ে মারা যাওয়ায় তিনি বের হতে চাচ্ছিলেন না। আবার পায়ের একটা অংশ পুড়ে যাওয়ায় তাকে জোর করে বের করাও সম্ভব হয়নি। জ্বলন্ত আগুনে পুড়ে মারা যান তিনি। ফায়ার সার্ভিস কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান জানান, শুক্রবার রাত ৯টা ৫ মিনিটের দিকে তারা আগুন লাগার খবর পান। প্রথমে খিলগাঁও ও পোস্তগোলা ফায়ার স্টেশনের চারটি ইউনিট সেখানে ছুটে যায়। পরে আরও তিনটি ইউনিট পাঠানো হয়।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘শুক্রবার রাত ৯টা ৫ মিনিটে গোপীবাগে চলন্ত ট্রেনে আগুন লাগার খবর পাই।’ প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, আগুন লাগার পরপরই দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে ট্রেনটি। ট্রেনে কত যাত্রী ছিল তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা আহত একজনের সঙ্গে কথা বলেছি। তাকে পর্যাপ্ত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে।’

ট্রেনের অগ্নিদুর্ঘটনায় আহত অমিত পেশায় একজন ইঞ্জিনিয়ার। ফরিদপুর থেকে ঢাকায় আসছিলেন। আগুনের ধোঁয়ায় শ্বাস না নিতে পেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তবে কোনোরকমে নামতে পেরে শ্বাসকষ্ট নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে আসনে। সেখানে তাকে স্যালাইন ও অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ট্রেনে আগুন লাগার সময় জানালা দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করছিলেন অনেকে। হাত বাড়িয়েছিলেন সাহায্যের জন্য, বের হতে পারেননি। অর্ধেক শরীর ট্রেনের জানালার বাইরে, অর্ধেকটা ভিতরে। শত শত মানুষের চোখের সামনে আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত হলেন যাত্রী।

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ট্রেনটির ?‘চ’ বগির একটি সিটে প্রথমে আগুন লাগে। প্রাথমিক পর্যায়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন যাত্রীরা। পরে আগুন ছড়িয়ে পড়লে যাত্রীরা নিচে নেমে আসেন। তবে এ সময় অনেক যাত্রী ভিতর থেকে বের হতে পারেননি বলে শঙ্কা রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী ফারুক হোসেন বলেন, আমরা এলাকাবাসী যখন আগুন লেগেছে দৌড়ে এসেছি। যার কাছে যতটুকু পানি ছিল আমরা সেভাবে চেষ্টা করেছি, কিছুই করতে পারিনি। তিনি বলেন, অনেক মানুষ আমার চোখের সামনে মারা গেছে। এলাকাবাসী সবাই মিলে অনেক চেষ্টা করেছি; কিন্তু উদ্ধার করতে পারিনি। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত পানি ছিল না।

প্রত্যক্ষদর্শী এ ব্যক্তি আরও বলেন, ফায়ার সার্ভিস আগুন লাগার এক ঘণ্টা পরে এসেছে। আগে এলে হয়তো আরও কিছু মানুষের প্রাণ বাঁচানো যেত। এত বড় আগুন, আমাদের কিছুই করার ছিল না। স্থানীয় আরেকজন বলেন, ট্রেনটি চলন্ত অবস্থাতেই আগুন লেগে এখানে আসে। দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসে। পার্শ্ববর্তী বাড়িগুলো থেকে যে যেভাবে পেরেছে পানি দিয়ে সহযোগিতা করেছে।

ছোট ভাইয়ের বউকে খুঁজে পাচ্ছি না : ‘ছোট ভাইয়ের বউকে খুঁজে পাচ্ছি না, বাচ্চাকে নিয়ে ওর মামা নেমে গেছে। ছোট ভাইয়ের বউ কোথায় আছে? কীভাবে আছে জানি না! গতকাল রাত ১০টা ২০ মিনিটে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিলেন সৈয়দ মুরাদ হোসেন নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘আমার ছোট ভাই সাজ্জাদ হোসেনের স্ত্রী, ছেলে, শ্যালক মিলে কয়েকজন রাজবাড়ী থেকে ট্রেনে উঠেছিল। আগুন লাগার পর আমার ছোট ভাইকে ফোন দিয়ে বলেছে, ‘বিপদে আছি। আমার বাচ্চাকে নিয়ে ওর মামা নেমে গেছে।’ এরপর আর কথা বলা সম্ভব হয়নি। ঢাকা মেডিকেলে গেলাম ওখানে নেই, বার্ন ইউনিটের এখানে এলাম। এখানেও নেই। আমরা খোঁজ করছি।’ মুরাদ হোসেন বলেন, ‘তারা রাজবাড়ী থেকে আসছিলেন। ১৫ দিন আগে তার বাবা মারা গেছেন। আজ ঢাকায় ফিরছিলেন। পাঁচ মাস বয়সী আরফান সুস্থ আছে।’ রেলওয়ে পুলিশের ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জানা গেছে ট্রেনের পাওয়ার কার থেকে আগুনের সূত্রপাত। এটি নাশকতা নাকি গোলযোগ বিষয়টি যাচাই করা হচ্ছে।’ জানা গেছে, রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে মারা গেলেন নাতাশা জেসমিন (২৫) নামে এক নারী। এ ঘটনায় তার স্বামী আসিফ রহমান খান (৩০) দগ্ধ হয়ে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। আসিফ রহমান খান বিষয়টি নিশ্চিত করে হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, দগ্ধ আসিফ চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার শরীরের ৮ শতাংশ পুড়ে গেছে।

ট্রেনে আগুন নাশকতা, তা স্পষ্ট- ডিএমপি : বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের ঘটনাকে নাশকতা বলছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) খ. মহিদ উদ্দিন বলেছেন, পরিকল্পিতভাবে ট্রেনটিতে আগুন দেওয়া হয়েছে। গতকাল রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ কর্মকর্তা মহিদ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, যাত্রীবেশে ট্রেনে উঠে আগুন দেওয়া হয়েছে। যারা সাধারণ মানুষ, নারী ও শিশুর বিরুদ্ধে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।

মানুষের স্বাভাবিক জীবনধারা ব্যাহত করার উদ্দেশ্যে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে মনে করছেন খ. মহিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, এটা নাশকতা, তা স্পষ্ট। কোনো মানুষ এ ধরনের সহিংসতা গ্রহণ করতে পারে না। ট্রেনের পুড়ে যাওয়া একটি বগির ভেতরের দৃশ্য। এখানে যে কিছুক্ষণ আগেও প্রাণের ছোঁয়া ছিল, তা বোঝার উপায় নেই। নিহত যাত্রীদের মধ্যে ভারতীয় নাগরিক আছেন কি না, এক সাংবাদিকের এ প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির এই অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ট্রেনে কতজন যাত্রী ছিলেন, কারা ছিলেন, তা এখনো জানা যায়নি।

নাশকতা রোধে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে উল্লেখ করে খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ঢাকায় নাশকতার অন্তত ৪০টি চেষ্টা নস্যাৎ করা হয়েছে। এর বাইরে নাশকতার অনেক পরিকল্পনাও নস্যাৎ করা হয়েছে। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বেনাপোল এক্সপ্রেস (৭৯৫) ট্রেনটি কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে নেওয়া হয়েছে। রাত ১১টা ৫০ মিনিটে ঢাকা-মাওয়া রেলপথের গোপীবাগ অংশে লাইনে থাকা দগ্ধ ট্রেনের ক্ষতিগ্রস্ত লোকোমোটিভ দিয়েই কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের দিকে নেওয়া হয়। ট্রেনটি আপাতত ওয়াশপিটে নেওয়া হবে। কমলাপুরে নেওয়ার সময় লোকমোটিভের সঙ্গে আটটি কোচ ছিল। বাকি আটটি বগি আগেই অন্য লোকোমোটিভ লাগিয়ে কমলাপুর নেওয়া হয়েছে। এদিকে প্রায় একই সময়ে ডেমরা এলাকায় রমজান পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। প্রায় কাছাকাছি সময়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দুটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে কেউ হতাহত হয়নি। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ রহমান হলের সামনেও দুটি ককটেল বিস্ফোরণ হয়। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকে রেলে একাধিক নাশকতার ঘটনা ঘটে। গত ১৩ ডিসেম্বর ভোরে গাজীপুরের শ্রীপুরে রেললাইন কেটে ফেলায় মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনসহ সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়। নিহত হন একজন। আহত হন ১০ জনের বেশি। ১৬ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের ঘারিন্দা রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি কমিউটার ট্রেনে আগুন দেয় নাশকতাকারীরা। এতে ট্রেনটির দুটি বগি পুড়ে যায়। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ট্রেনটির আরেকটি বগি। ১৯ ডিসেম্বর রাজধানীর তেজগাঁও স্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়। ওই ঘটনায় চারজন নিহত হন।

দুই জেলায় পাঁচ ভোট কেন্দ্রে আগুন : রাজশাহী ও ফেনী দুই জেলার পাঁচ ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে ফেনীর একটি কেন্দ্রে বিকট শব্দে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ দুটি তাজা ককটেল উদ্ধার করে। এ ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও পুড়ে গেছে স্কুলের আসবাবসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম। ফেনীর সোনাগাজীতে চর সাহাভিকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি ভবনে গতকাল সকাল ৭টার দিকে আগুন দেওয়া হয়। আগুনে বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিলনায়তনের আসবাবপত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পুড়ে যায়। ভোটের আগে নাশকতা, অগ্নিসন্ত্রাস ও জনমনে আতঙ্ক ছড়ানোর এ ঘটনা খতিয়ে দেখছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো।

নিজস্ব প্রতিবেদক রাজশাহী জানান, শুক্রবার রাতে রাজশাহীর চারটি নির্বাচন কেন্দ্রে আগুন দেওয়া হয়। ভোট কেন্দ্রগুলো হলো- বাঘা উপজেলার পাকুরিয়া জোতনাশী প্রাথমিক বিদ্যালয়, আড়ানী ইউনিয়নের জিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাগমারা উপজেলার গনিপুর আক্কেলপুর উচ্চ বিদ্যালয় এবং মোহনপুর উপজেলার মতিহার উচ্চ বিদ্যালয়।

ফেনী প্রতিনিধি স্থানীয় সূত্রের বরাতে জানান, গতকাল সকাল ৭টার দিকে ফেনীর সোনাগাজী চরদরবেশ ইউনিয়নের চরসাহাভিকারী উচ্চবিদ্যালয়ের একটি কক্ষে আগুন দেওয়া হয়। আধাঘণ্টার মধ্যে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র করা হয়েছে ওই স্কুলটিতে।

তবে যেখানে আগুন দেওয়া হয়েছে, সেখানে কোনো বুথ রাখা হয়নি। থানা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই ও অন্যান্য সংস্থা এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ফেনীর পুলিশ সুপার মো. জাকির হাসান।

 

 

সর্বশেষ খবর