রবিবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন

বিএনপি নেতা নবীউল্লাহ নবীসহ গ্রেফতার ৮

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের ঘটনায় বিএনপির আটজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তারা হলেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নবীউল্লাহ নবী, যুবদল নেতা কাজী মনসুর আলম, মো. ইকবাল হোসেন স্বপন, মো. রাসেল, দেলোয়ার হাকিম বিপ্লব, মো. সালাউদ্দিন, মো. কবির ও মো. হাসান আহমেদ। এদের মধ্যে ট্রেনের বগিতে আগুন দেওয়ার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ও জনবলদাতা কাজী মনসুর আলম এবং আশ্রয় ও অর্থদাতা হিসেবে নবীউল্লাহ নবী ছিলেন। রাজধানীতে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে ডিবির ওয়ারী ও লালবাগ বিভাগ। গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, ট্রেনে আগুন লাগার আগে বিএনপির ১০/১১ জন ভিডিও কনফারেন্স করেন। সেখানে তারা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবকিছু পরিকল্পনা করেছেন। কনফারেন্সে প্রথমে আসেন মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনাম। এরপর আসেন সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ গাফফার, ইকবাল হোসেন বাবলু, একজন দফতর সম্পাদক ও কাজী মনসুর। যে মোবাইল থেকে ভিডিও কনফারেন্স করা হয়েছিল সেই মোবাইলটি জব্দ করা হয়েছে। মোবাইলটি কাজী মনসুরের। তাকে গ্রেফতার করা হয়। যারা এক সময় জেলখানায় দাগি আসামি হিসেবে পরিচিত ছিল তারা এই অগ্নিসংযোগ করেছে। তাদের লক্ষ্য ছিল জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করা। এদিকে, ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের করা মামলায় নবীউল্লাহ নবীর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর আগে, তাকে আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন ডিবির ওয়ারী বিভাগের এসআই মো. আশরাফুল আলম। গতকাল বিকালে শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিল সুমু চৌধুরীর আদালত তার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গ্রেফতারের পর ট্রেনে আগুন দেওয়ার পরিকল্পনার বিষয়ে ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যুবদল নেতা কাজী মনসুর আলম জবানবন্দির এক ভিডিওতে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন।

কাজী মনসুর বলেন, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেওয়ার আগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনামের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি একটি মিটিং হয়। মিটিংটি শুক্রবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয়। ১৭ মিনিটের এই মিটিংয়ে ট্রেনে আগুন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিদ্ধান্ত হওয়ার পর একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয় ট্রেনে আগুন দেওয়ার জন্য। এরপর শুক্রবার রাতে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়। তারা শুক্রবারও একটি ভার্চুয়াল মিটিং করেন।

মিটিংয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনাম, যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়নসহ আরও অনেকে ছিলেন। ভার্চুয়ালি মিটিংয়ে দুটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রথম সিদ্ধান্ত ভোট কেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণ এবং নির্বাচনি ক্যাম্পে আগুন দেওয়ার জন্য। যাতে ভোটাররা ভয়ে সেখানে না আসে। আর দ্বিতীয় সিদ্ধান্ত হয় ট্রেনে আগুন দেওয়ার। এ সময় মিটিংয়ে যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়ন জিজ্ঞাসা করেন ট্রেনে আগুন দিতে পারবে কে। তখন মিটিংয়ে উপস্থিত একজন রাজি হয় ট্রেনে আগুন দেওয়ার বিষয়ে। তার নাম-ঠিকানা পেয়েছে ডিবি। তাকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানান ডিবিপ্রধান হারুন।

সর্বশেষ খবর