বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। এ নির্বাচনের মাধ্যমে সেটির প্রমাণ হয়ে গেছে। বিএনপির মূল উদ্দেশ্য এখন দেশ, জনগণ এবং আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে এটি প্রমাণ করা। গতকাল নয়াপল্টনে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে ‘৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত প্রহসনের নির্বাচনের বিষয়ে’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিশ্বাস করে একদলীয় বাকশালীয় কায়দার শাসন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম টাইমস ম্যাগাজিন বাংলাদেশ সরকারকে এ জন্য নাম দিয়েছে ‘বাকশাল-টু’। এ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৯টি আসনে কারা নির্বাচিত হবে তা নির্ধারণ হয়েছে ঢাকার একটি সর্বোচ্চ টেবিলে। গত তিন দিনে আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে এই নির্বাচন নিয়ে বলা হয়েছে, ‘এ নির্বাচন একটি ভুয়া এবং প্রহসনের নির্বাচন’। মিডিয়ার পাশাপাশি সারা বিশ্বে যে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো রয়েছে, সবাই তাদের বিবৃতিতে এ কথাই বলেছে। যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘের বিবৃতি তার বড় উদাহরণ। মঈন খান বলেন, আমেরিকা বলেছে, এ নির্বাচন কোনোভাবেই অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। এ কথাটিই আমরা জাতীয়তাবাদী দল গত ১৫ মাস ধরে বলে আসছি। বিএনপি সরকারের নির্বাচনের নানা কর্মকাণ্ডের ২৫০টি ঘটনার ওপর প্রমাণসহ একটি বই বের করেছেন উল্লেখ করে মঈন খান বলেন, এর সঙ্গে ভিডিও ক্লিপও রয়েছে। এ ধরনের আরেকটি ভলিয়ম আমরা অল্প কিছুদিনের মধ্যে জনগণের সামনে আবার উপস্থাপন করব। সবচেয়ে লজ্জা এবং দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এত দিন সরকার গোপনে ভোট চুরি করলেও এ নির্বাচনে তারা ভোট ডাকাতি করেছে প্রকাশ্যে। তারা দিনের আলোতে প্রকাশ্যে আলোচনা করেছে, সিট ভাগাভাগি করেছে কে কোন আসন পাবে। মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচন করতে পারবে না। বিশ্ববাসীর কাছে আমরা এত দিন যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছি তা সত্য হয়েছে। প্রমাণ হয়ে গেছে, এভাবে একটি ভুয়া নির্বাচনের আবহ সৃষ্টি করে, বিদেশি ক্ষমতা দিয়ে গণতন্ত্র চলতে পারে না। বাংলাদেশের গণতন্ত্র আজকে মৃত এমন মন্তব্য করে মঈন খান বলেন, লাখ লাখ মানুষ তাদের বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে এ বাংলাদেশ তৈরি করেছিল।

আজকে আওয়ামী লীগ সরকারকে আমরা প্রশ্ন করতে চাই, আওয়ামী লীগ নিজেদের মুক্তিযোদ্ধার পক্ষের শক্তি বলে দাবি করে, তাহলে কেন তারা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। এ প্রশ্ন শুধু বিএনপির প্রশ্ন নয়, এটা বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের প্রশ্ন। এ প্রশ্ন মানুষ করেছে ৭ জানুয়ারি ভোট বর্জন করার মাধ্যমে। জনগণ শুধু যে ভোটই বর্জন করেছে বিষয়টি এমন নয়, তারা বাকশালী আওয়ামী লীগকেও বর্জন করেছে। সরকারি একটি গৃহপালিত বিরোধী দল রেখেছে। আমরা দেখেছি, তারা ১১টি আসনে জয় পেয়েছে। এ সরকারকে নিজেদের ক্ষমতার মাধ্যমে কুক্ষিগত করে নিয়েছে।