শুক্রবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
নির্বাচনে অনিয়ম

অভিযোগ জমছে ইসিতে

গোলাম রাব্বানী

সংসদ নির্বাচনের অনিয়ম নিয়ে প্রতিদিনই নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ আসছে। ৭ জানুয়ারি ভোটের পরে চার দিনে অর্ধশত অভিযোগ জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশনের টেবিলে। আবারও কেউ কেউ কমিশনে এসে খোঁজখবর নিচ্ছেন কোথায় কীভাবে অভিযোগ করবেন। ভোটের দিন ভোট কেন্দ্র দখল, জাল ভোট, এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়াসহ নানা অভিযোগে ভোটের দিন নির্বাচন বর্জন করার কথা জানান অর্ধশতাধিক প্রার্থী। ইসি কর্মকর্তারা বলেছেন, যারা অভিযোগ করেছেন তাদের মধ্যে ১৯ জনই আওয়ামী লীগের নেতা। তাদের মধ্যে কয়েকজন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। দুজন ১৪ দলীয় জোটের নেতা এবং নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছেন। ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী গেজেট প্রকাশের আগে ভোটের অনিয়ম নিয়ে অভিযোগ এলে তা যাচাই করে ফল স্থগিত করতে পারে সংস্থাটি। এ ছাড়া তারা হাই কোর্টেও যেতে পারবেন। এক্ষেত্রে প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি সেখানে অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন। আইন অনুযায়ী গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে হাই কোর্টে অভিযোগ দায়ের করতে হবে। এদিকে সদ্য অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গেজেট প্রকাশ হয়ে গেছে। এখন কোনো অভিযোগ আমলে নেওয়ার সুযোগ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নেই। এ জন্য যেতে হবে হাই কোর্টে। ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ এমন তথ্য জানিয়েছেন। ভোটের পর অনেকেই ফল বাতিল চেয়ে অভিযোগ করছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন- ঢাকা-৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী সানজিদা খানম, পিরোজপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. রুস্তম আলী ফরাজী, রাজবাড়ী-২ আসনের নূরে আলম সিদ্দিকী, গোপালগঞ্জ-১ আসনের মো. কবির মিয়া, ঝিনাইদহ-১ আসনের নজরুল ইসলাম, ময়মনসিংহ-৩ আসনের সোমনাথ সাহা, রাজশাহী-২ আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ১৪ দলীয় জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির ফজলে হোসেন বাদশা, মেহেরপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আবদুল মান্নানসহ প্রায় অর্ধশত প্রার্থী ভোটে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ইসির কাছে প্রতিকার চেয়েছেন। এ ছাড়া ফলাফল ঘোষণার পরপরই কারচুপির অভিযোগ করেছেন ঢাকা-৫ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী হারুনুর রশিদ মুন্না। ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলছেন, ৯ জানুয়ারি ২৯৮ আসনের বিজয়ীদের গেজেট প্রকাশ হয়েছে। এখন আর ইসির করার কিছু নেই। কারও কোনো অভিযোগ থাকলে হাই কোর্টে যেতে হবে। তবে গেজেট প্রকাশের আগের কোনো অভিযোগ যেগুলো আছে, সেগুলো কমিশনে নথি আকারে উত্থাপন করা হবে। কমিশন যে সিদ্ধান্ত দেবে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে হাই কোর্টে অভিযোগ দায়ের করতে হবে। ৭ জানুয়ারি ৩০০ আসনে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নওগাঁ-২ আসনের বৈধ প্রার্থীর মৃত্যুতে আসনটির নির্বাচন বাতিল করে ইসি। এ ছাড়া একটি কেন্দ্রে অনিয়মের কারণে ময়মনসিংহ-৩ আসনের ফল প্রকাশ স্থগিত রাখে সংস্থাটি। ওই কেন্দ্রে আগামী ১৩ জানুয়ারি আর নওগাঁ-২ আসনের নির্বাচন হবে ১২ ফেব্রুয়ারি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৮টির ফলাফল অনুযায়ী, নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন ২২২টিতে, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি আসনে। লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা ১১টি আসনে এবং জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি ও কল্যাণ পার্টি ১টি করে আসনে বিজয়ী হয়েছে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর