সোমবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

নির্বাচনবিরোধী আন্দোলনে জনগণ সাড়া দেয়নি

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

নির্বাচনবিরোধী আন্দোলনে জনগণ সাড়া দেয়নি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি যতবার নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছে, বাংলাদেশের মানুষ তাতে সাড়া দেয়নি।

গতকাল বিকালে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত নেতা-কর্মী, জনপ্রতিনিধি এবং সুধীজনদের সঙ্গে নির্বাচন পরবর্তী শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানা, শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল এমপি, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জি এম সাহাবউদ্দিন আজম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।  শেখ হাসিনা বলেন, মানুষ কিন্তু তার ভোটটা চুরি করলে সে ঠিকই ধরে নেয়। দৃষ্টান্ত হচ্ছে ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন। খালেদা জিয়া নির্বাচন করেছিল ক্ষমতায় থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারিতে ৯৬ সালে। সেখানে কিন্তু সারা দেশে সমস্ত প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্রবাহিনী সবাইকে নামিয়ে দিয়ে তার নির্বাচন তিনি অনুষ্ঠিত করেন। কিন্তু সেখানে ভোটার যায়নি। তারপর সিল মেরে বাক্স ভরে ভোট নেওয়ার পরও মাত্র শতকরা ২১ ভাগ ভোট হয়েছিল। জনগণ কিন্তু মেনে নেয়নি তার ভোট চুরি। যে কারণে আন্দোলন হয়। তিনি বলেন, ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হলো। ৩০ মার্চ খালেদা জিয়া পদত্যাগে বাধ্য হয়। ভোট চুরির অপরাধে নাকে খত দিয়ে খালেদা জিয়ার বিদায়। তারা এখন আন্দোলন করে গণতন্ত্রের জন্য। যারা গণতন্ত্রের ‘গ’-ও বোঝে না। তারা গণতন্ত্র বানানও করতে পারবে না। তাদের আন্দোলন হলো মানুষ পুড়িয়ে মারা। তারা জানে জ্বালাও-পোড়াও। জীবন্ত মানুষগুলোকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মারা, বাসে আগুন, গাড়িতে আগুন, রেলে আগুন, ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালে যা করেছে এখন আবার তা শুরু করেছে। এই নির্বাচন ঠেকাও আন্দোলন করতে গিয়ে ট্রেনে আগুন দিয়ে মা-সন্তানকে পুড়িয়ে মেরেছে। এই দৃশ্য কোনো মানুষ সহ্য করতে পারে না। যে কারণে তারা যতই চিৎকার করুক তাদের কথায় জনগণ সাড়া দেয়নি। তিনি বলেন, যারা এ ধরনের জঘন্য কাজ করেছে, তাদের কোনো ছাড় নেই। তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। যারা এ ধরনের কাজ করেছে তাদের খুঁজে খুঁজে বের করে এনে বিচার করব। ইতোমধ্যে অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে, আর যারা হুমুকদাতা, যারা জ্বালাও-পোড়াও করার জন্য হুকুম দিয়েছে, তাদেরও আমরা গ্রেফতার করছি। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেব, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ যেন মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা বা এ ধরনের জঘন্য কাজ করতে সাহস না পায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত কখনো শেষ হয় না। এই ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। কোটালীপাড়াবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, শক্ত একটা ঘাঁটি আছে বলেই আমি যে কোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে পারি। সেই শক্তি আপনারা দিয়েছেন। টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়ার মানুষ আমার বড় শক্তি, বাংলাদেশের মানুষ আমার বড় শক্তি। আগামীতেও বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, করোনাভাইরাসে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। আবার হামলা শুরু হয়েছে। এজন্য সামনে আরও দুর্দিন আসতে পারে। আমাদের দেশের মাঠি উর্বর। আমাদের মানুষ আছে। এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল পালন করতে হবে। আমাদের খাদ্য আমাদের উৎপাদন করতে হবে। কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্র নাথ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টাম লীর সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনি এলাকার উন্নয়ন প্রতিনিধি সাবেক সিনিয়র সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান এবং কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ বক্তব্য রাখেন। গোপালগঞ্জ-৩ (টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া) আসন থেকে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২ লাখ ৪৯ হাজার ৪৬৯ ভোট পেয়ে অষ্টমবার এমপি নির্বাচিত হন। এ আসনে শতকরা ৮৭ দশমিক ২৪ ভোট পড়ে। 

সর্বশেষ খবর