বুধবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
তৃণমূল বিএনপি বিএনএম সুপ্রিম পার্টি

ভোটে হেরে দিশাহারা নতুন দল

হাসান ইমন

ভোটে হেরে দিশাহারা নতুন দল

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন তিন দল তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন বেশ সরগরম ছিল। সর্ব মহলে এ তিনটি রাজনৈতিক দল কিংস পার্টি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। এর মধ্যে তৃণমূল বিএনপি ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন নির্বাচনের আগে প্রধান বিরোধী দল হওয়ারও জোড় দাবি করেছিল। কিন্তু নির্বাচনে নতুন দলগুলোর ভয়াবহ ভরাডুবি হয়। এসব দলের হেভিওয়েট প্রার্থীরাও জামানত হারান। নির্বাচনে ভরাডুবির কারণে হতাশা ও দিশাহারা এখন দলগুলোর নেতারা। হেরে ভোটের কারচুপি ও জাল ভোটসহ নানা অভিযোগ তোলেন তারা। বিএনপিবিহীন নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল হবে তৃণমূল বিএনপি ও বিএনএম। ভোটের আগে নতুন নিবন্ধিত দল দুটির নেতারা একাধিকবার এ কথা বলেছিলেন। নির্বাচনের আগে এ দল দুটি রাজনৈতিক মাঠে বেশ উত্তাপ ছড়ায়। এর মধ্যে গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশন থেকে নিবন্ধন লাভ করে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার নেতৃত্বাধীন তৃণমূল বিএনপি। গত ১০ আগস্ট একই দিনে নতুন করে নিবন্ধন পায় বাংলাদেশ জাতীয়বাদী আন্দোলন (বিএনএম) ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)। এ তিনটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা শমসের মবিন চৌধুরী ও তৈমূর আলম খন্দকারের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল বিএনপি এবারের নির্বাচনে ১৩৫টি আসনে মনোনয়ন দিয়েছিল। নির্বাচনে দলটির ১৩৫ আসনের সব প্রার্থীই জামানত হারালেন। বিএনপির আরেক বহিষ্কৃত নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোহাম্মদ আবু জাফরের নেতৃত্বাধীন বিএনএম মনোনয়ন দিয়েছিল ৫৬টি আসনে। নির্বাচনে এ দলেরও সব প্রার্থীই জামানত হারায়। আর ৭৯ আসনে মনোনয়ন দিয়েছিল বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)। নির্বাচনে হেরে কোনো আসন না পাওয়ায় এই রাজনৈতিক দলগুলোর শিবিরে বিরাজ করছে চরম হতাশা।

এ বিষয়ে তৃণমূল বিএনপির মহাসচিক তৈমূর আলম খন্দকার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা কি বুদ্ধির কাছে হারলাম না সরলতার কাছে, নাকি বেশি আত্মবিশ্বাসের কাছে হারলাম, নাকি জেনারেল ইবরাহীমের মতো এরকম বুদ্ধি আমাদের ছিল না। সেগুলো নিয়ে আমরা পর্যালোচনা করছি। তিনি বলেন, এ নির্বাচন হয়েছে গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট। নৌকাও গভর্নমেন্ট, স্বতন্ত্রও গভর্নমেন্ট। মনে হচ্ছে, দেশটা একদলীয় শাসনব্যবস্থার দিকে এগোচ্ছে। তবে তৃণমূল বিএনপি রাজনীতি করবে, মাঠে থাকবে। বিএনএম-এর মহাসচিব ড. মো. শাহজাহান বলেন, আমরা সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রতিশ্রুতিতে ভোটে অংশগ্রহণ করি। কিন্তু নির্বাচনের দিন সকাল ১০টা থেকে ১১টার পরই বিশেষ রাজনৈতিক দলের নেতারা দাপট খাটাতে শুরু করে। নির্বাচনি দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টদের সহায়তায় ব্যালট কেটে প্রিসাইডিং অফিসারদের বিশেষ কক্ষে নিজ নিজ বাক্স ভরতে শুরু করে। একপর্যায়ে এটা তাদের জন্য ভোট কারচুপির উৎসবে পরিণত হয়। তাদের এই ভোট কারচুপিতে আমাদের নিশ্চিত জয়ের প্রার্থীরা পরাজিত হয়। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আমাদের কমপক্ষে ২৫ জন প্রার্থী জয়ী হতো। তিনি আরও বলেন, এখন আমরা দল গোছাতে কাজ করছি। শিগগির আমরা বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা কমিটি দেব। দল গুছিয়ে আমরা পরবর্তীতে কর্মসূচিতে যাব। একই অবস্থা বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি)। দলটি ৭৯ আসনে প্রার্থী দেয়। তবে ভোটের মাঠে কেউই দাঁড়াতে পারেনি। সবপ্রার্থীই ভোটের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে। এ বিষয়ে দলটির দফতর সম্পাদক মো. ইবরাহীম মিয়া বলেন, নির্বাচন নিয়ে আমরা হতাশ নই। কারণ আমরা প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি, কিছু জায়গা ছাড়া নির্বাচন ভালোই হয়েছে। পরাজিত হওয়ার পেছনে দলীয় সাংগঠনিক ভিত্তি না থাকাই মূল কারণ। এখন আমরা দল গোছাতে কাজ করছি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর