বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
টিআইবির সংবাদ সম্মেলন

প্রতিপক্ষহীন নির্বাচন পাতানো খেলা

দুই বড় দলের অবস্থানের কারণে অবাধ নির্বাচন হয়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রতিপক্ষহীন নির্বাচন পাতানো খেলা

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে দুই বড় দলের বিপরীতমুখী ও অনড় অবস্থানের কারণে অংশগ্রহণমূলক ও অবাধ নির্বাচন হয়নি। নিজ নিজ এজেন্ডা বাস্তবায়নের লড়াইয়ে দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জিম্মিদশা আরও প্রকট হয়েছে। এমন নির্বাচনের অভিজ্ঞতা দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ভবিষ্যতের জন্য অশনিসংকেত।

গতকাল রাজধানীর ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি কার্যালয়ের মাইডাস সেন্টারে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নিজেদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তাদের প্রকাশিত পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে বলা হয়, ভোট প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক দেখাতে নিজ দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়া হলেও বেশির ভাগ আসনে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়নি। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ছিল না ২৪১টি আসনের ভোট। ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনকে ‘একপক্ষীয়’, ‘প্রতিপক্ষহীন’ এবং ‘পাতানো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ’ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করে টিআইবি।

নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা ও আইনগত সীমারেখার নামে কখনো অপারগ হয়ে, কখনো কৌশলে একতরফা নির্বাচনের এজেন্ডা বাস্তবায়নের অন্যতম অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেছে নির্বাচন কমিশন। অন্যান্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং প্রশাসনও অনুরূপভাবে একই এজেন্ডার সহায়ক ভূমিকায় ব্যবহৃত হয়েছে বা লিপ্ত থেকেছে।

সংবাদ সম্মেলনে ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়া ট্র্যাকিং’ শীর্ষক গবেষণা প্রসঙ্গে বলা হয়, দৈবচয়ন ভিত্তিতে ৫০টি সংসদীয় আসন নির্ধারণ করে গবেষণা পরিচালনা করেছে টিআইবি। গবেষণা দলের সদস্য মাহ্ফুজুল হক গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে বলেন, নির্বাচনের শেষের এক ঘণ্টায় ১৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ ভোটসহ মোট ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পড়া বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত আসনগুলোয় তফসিল ঘোষণার পূর্ব থেকে নির্বাচন পর্যন্ত সময়ে নির্ধারিত ব্যয়সীমার বেশি ব্যয় করেছেন ৬৫ শতাংশ প্রার্থী। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা গড়ে ১১ দশমিক ৪৫ গুণ বেশি ব্যয় করেছেন। এ ছাড়া এসব আসনের শতকরা ৮৫ ভাগে বিধি লঙ্ঘনের ঘটনায় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা; ৭৫ ভাগ আসনে প্রতিপক্ষের পোলিং এজেন্টকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে না দেওয়া; ৫৫ ভাগ আসনে জোর করে নির্দিষ্ট মার্কায় ভোট দিতে বাধ্য করা; ৫১ ভাগ কেন্দ্রে বুথ দখল, প্রকাশ্যে সিল মারা ও জাল ভোট প্রদান ও ৪২ শতাংশ কেন্দ্রে ভোট গণনায় জালিয়াতির ঘটনা সংঘটিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির উপদেষ্টা (নির্বাহী ব্যবস্থাপনা) অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের ও পরিচালক (গবেষণা) মোহাম্মদ বদিউজ্জামান, গবেষণা দলের সদস্য নেওয়াজুল মওলা ও সাজেদুল ইসলাম।

সর্বশেষ খবর