শুক্রবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

তীব্র শীতের মধ্যেই বৃষ্টি

কয়েক জায়গায় স্কুল বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক

তীব্র শীতের মধ্যেই বৃষ্টি

কনকনে শীতের মধ্যে গতকাল দেশের বিভিন্ন এলাকায় হয়েছে বৃষ্টি। এতে জনজীবনে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। একই সঙ্গে শৈত্যপ্রবাহ জেঁকে বসেছে উত্তরবঙ্গে। রংপুর বিভাগের পাঁচটি জেলার সব আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে     গতকাল সকালে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল দিনাজপুরে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামায় সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বিভিন্ন জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে হযবরল পরিস্থিতি। তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলে সংশ্লিষ্ট জেলার সব স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। আবহাওয়া অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গতকাল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় কিশোরগঞ্জের নিকলী, নওগাঁর বদলগাছী, রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারীর সৈয়দপুর ও ডিমলা, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া, কুড়িগ্রামের রাজারহাট পর্যবেক্ষণাগারে। রংপুর বিভাগের সব পর্যবেক্ষণাগারেই ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় দিনাজপুরে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া বাগেরহাট, পটুয়াখালী, গোপালগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গতকাল বৃষ্টিপাত হওয়ায় শীতের অনুভূতি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন আমাদের প্রতিনিধিরা। কুড়িগ্রামে গতকাল সকালে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হওয়ায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাঈদুল আরীফ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার নির্দেশ দেন। এদিকে বুধবার চুয়াডাঙ্গার মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো বন্ধ ঘোষণা করা হলেও খোলা ছিল প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো। গতকাল রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর ও পঞ্চগড় জেলার সব প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হলেও খোলা ছিল মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো। এদিকে রংপুর বিভাগের নীলফামারী ও রংপুর জেলায় তাপমাত্রাও গতকাল ১০ ডিগ্রির নিচে ছিল। তবে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়নি। এদিকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হওয়ায় গতকাল দিনাজপুরের সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত আসে বেলা সাড়ে ১০টার দিকে। ততক্ষণে শিশু শিক্ষার্থীরা কনকনে শীত আর কুয়াশা উপেক্ষা করে পৌঁছে গেছে স্কুলে। এ ছাড়া সিদ্ধান্তহীনতার কারণে খোলা ছিল মাধ্যমিক স্কুলগুলো। এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. নজরুল ইসলাম জানান, বুধবার দিনাজপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি ছিল। এ কারণে স্কুল খোলা ছিল। গতকাল সকালে আবহাওয়া অফিস থেকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস জানার পর সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। অন্যদিকে স্কুল খোলা রাখা প্রসঙ্গে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (মাধ্যমিক) রফিকুল ইসলাম বলেন, দিনাজপুরে মাঘের সকালে একটু শীত পড়েই। পরে তাপমাত্রা বাড়ে। আমরা শনিবার এটা নিয়ে বৈঠক করে একটা সিদ্ধান্ত নেব। এদিকে চুয়াডাঙ্গায় গত বুধবার সকালে তাপমাত্রা ৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হওয়ায় সন্ধ্যায় জেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো বন্ধের নির্দেশনা দেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে খোলা ছিল প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তবিবুর রহমান জানান, বিদ্যালয় বন্ধের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের স্পষ্ট নির্দেশনা না পাওয়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছুটি ঘোষণা করা হয়নি। অভিভাবকরা বলছেন, কনকনে শীতের মধ্যে ভোরে বাচ্চাকে স্কুলে পাঠানোর পর ছুটি দেওয়া হচ্ছে। কুয়াশার মধ্যে শীতে কাঁপতে কাঁপতে স্কুলে যাচ্ছে শিশুরা। ঠান্ডা-কাশি লেগেই থাকছে। স্কুলে যাওয়ার পর যদি দেখে স্কুল বন্ধ, বা স্কুল ছুটি দেয়, তাহলে লাভ কী? কখন স্কুল বন্ধ, কখন খোলা এটাই জানতে পারছি না। শিক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, সকাল ৬টায় আবহাওয়া অফিস সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পরিমাপ করে। আমরা সেটা জানতে পারি ৯টার পরে। তখন ওপর মহলে জানিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে নিতে এক-দেড় ঘণ্টা সময় লেগে যায়। ততক্ষণে শিক্ষার্থীরা স্কুলে চলে আসে। তাপমাত্রা কম হলে স্কুল ছুটি দেওয়া হয়, কিন্তু শিক্ষার্থীদের স্কুলে না পাঠানোর জন্য অভিভাবকদের জানানোর কোনো সুযোগ নেই। এ ছাড়া আজ তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রিতে নামলেও পরের দিন ১১ ডিগ্রি হতে পারে। তখন স্কুল খোলার নোটিস অভিভাবকদের পাঠাতে হবে। এটা নিয়ে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

সর্বশেষ খবর