রবিবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
শেয়ারবাজার

ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারে জাগবে আশার আলো

আলী রিয়াজ

বছরের বেশি সময় পর ফ্লোর প্রাইস (সর্বনিম্ন দরসীমা) প্রত্যাহার করায় নতুন করে আশার আলো জাগবে শেয়ারবাজারে। শেয়ার দর নিয়ন্ত্রণের সীমা থাকায় এতদিন বাজারে তালিকাভুক্ত বেশির ভাগ কোম্পানির লেনদেন স্থবির ছিল। এই স্থবিরতা কাটাতে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করার ঘোষণা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করায় বাজারে গতি ফিরবে। সাময়িক কিছুটা দরপতন হতে পারে বলে আশঙ্কা থাকলেও দীর্ঘ মেয়াদে লাভবান হবেন বিনিয়োগকারীরা। তারা বলছেন, এখন বাজারে বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় হবেন। বিদেশি বিনিয়োগও আসবে শেয়ারবাজারে। এতে বাজারে গতিশীলতা বাড়বে। জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৮ জুলাই প্রথমবারের মতো ফ্লোর প্রাইস আরোপ করা হয়। ডিসেম্বরের ১৬৯ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে শেয়ারের দরপতনের সর্বোচ্চ ১ শতাংশ দর সীমা বেঁধে দেয় বিএসইসি। এরপর আবারও বড় ধরনের দরপতনের মুখে পড়লে ২০২৩ সালের মার্চে আবার এসব কোম্পানিতে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করা হয়। এর ফলে শেয়ারবাজারে লেনদেন প্রায় তলানিতে নেমে আসে। তবে নির্বাচনের পর বাজারে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। বিনিয়োগও বেড়েছে গত কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ৭ জানুয়ারির ভোটের পর শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। গত দুই সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেন ৩০০ কোটি টাকা থেকে ৮০০ কোটি টাকায় পৌঁছে। এ সময় গড় লেনদেন ছিল ৭০০ কোটি টাকার বেশি। মূলত ফ্লোরে আটকে থাকায় বাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির একটি বড় অংশের লেনদেন বন্ধ ছিল। দর কমে যাওয়ার কারণে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে বাজার থেকে বের হতেও পারছিলেন না। এ ছাড়া ফ্লোর প্রাইস থাকায় বাজারে স্বাভাবিক লেনদেন হয়নি। এতে বাজার এক ধরনের অকার্যকর ছিল বলে বিনিয়োগকারীদের অনেকে মনে করছেন। জানতে চাইলে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা ও আস্থা রাখতে ফ্লোর প্রাইস দেওয়া হয়েছিল। শেয়ারবাজারের উন্নয়ন আরও সমৃদ্ধ করতে এখন প্রত্যাহার করা হয়েছে। বাজারের গতিবিধির ওপর ভিত্তি করে ফ্লোর প্রাইস আরোপ এবং প্রত্যাহার করা হয়। তিনি বলেন, যে কোনো স্টক এক্সচেঞ্জে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাজারকে আরও গতিশীল করে তোলে। আমাদের শেয়ারবাজারেও অনেক বিদেশি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তাদের চাওয়া ছিল শেয়ারমূল্য সার্কিট ব্রেকারে আটকে না রেখে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হোক। চলতি বছরে আমাদের সূচক এবং লেনদেন বেশ বেড়েছে। আমরা ইতিবাচক বাজারের দিকে নজর রেখেই ফ্লোর প্রাইস তুলেছি। এতে লেনদেন যেমন বাড়বে, পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগের কারণে বাজারের কয়েকগুণ গতি পাবে। বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, ‘ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দেওয়ায় বাজার গতিশীল হবে। এক-দুইদিন হয়ত কিছুটা সমস্যা হতে পারে। পরে স্বাভাবিকভাবেই বাজার ঠিক হয়ে যাবে। জোর করে বাজারে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ ভালো কিছু বয়ে আনে না। বাজার বিনিয়োগকারীদের ওপর ছেড়ে দিতে হবে। অবাধ কেনাবেচার প্ল্যাটফর্ম করতে হবে। তবেই বাজারে তারল্য সংকট থাকবে না।’

সর্বশেষ খবর