ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চোরাচালান সিন্ডিকেট। প্রশাসনের দুর্বল নজরদারির কারণে সীমান্ত উপজেলা মহেশপুরে চোরাচালান সিন্ডিকেটের শক্তিশালী বলয় গড়ে উঠেছে। সিন্ডিকেটের সদস্যরা প্রতিনিয়ত ভারত থেকে নিয়ে আসছেন অস্ত্র, স্বর্ণ, গরু, বিস্ফোরক ও মাদক। সেই সঙ্গে চলছে মানব পাচার। সম্প্রতি মহেশপুর সীমান্তে এক চোরাকারবারির গুলিতে দুই ব্যক্তি নিহত হওয়ার পর ওই এলাকায় এখন আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে চোরাচালান সিন্ডিকেট নিয়ে।
এই সিন্ডিকেট মূলত ভাড়ায় অস্ত্র আনা-নেওয়া, সোনার বার চোরাচালান, গরু ও মানব পাচার করে থাকে। আর এই কাজে প্রধান সহযোগীর ভূমিকা পালন করে আসছে সীমান্তে বসবাসকারী কতিপয় জনপ্রতিনিধি, বিজিবির সোর্স ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারা। সম্প্রতি বাঘাডাঙ্গা গ্রামে শামিম হোসেন ও মন্টু মিয়া নামের দুই ব্যক্তি নিহত হওয়ার নেপথ্যে ছিল স্বর্ণ চোরাকারবারির টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্ব। অনুসন্ধানে জানা গেছে, মহেশপুর সীমান্তের বিভিন্ন গ্রামে একাধিক চোরাচালান সিন্ডিকেট রয়েছে। বিজিবির সোর্স পরিচয় দিয়ে কতিপয় ব্যক্তি এই চোরাচালান সিন্ডিকেট পরিচালনা করে থাকে। উপজেলার ৯টি গ্রাম একেবারেই সীমান্ত ঘেঁষা হওয়ায় সেখান দিয়ে সোনা, অস্ত্র, গরু, বিস্ফোরক ও মানব পাচার করা হয়। গ্রামগুলোর মধ্যে রয়েছে বাঘাডাঙ্গা, পলিয়ানপুর, যাদবপুর, জুলুলী, লেবুতলা, মরকধ্বজপুর, শ্যামকুড়, রায়পুর ও কচুয়ারপোতা। এর মধ্যে মকরধ্বজপুর, বাঘাডাঙ্গা ও রায়পুর দিয়ে ভারতীয় গরু ও মানব পাচার, বাঘাডাঙ্গা ও শ্যামকুড় সীমান্ত দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র এবং লেবুতলা ও রায়পুর সীমান্ত দিয়ে সোনা পাচার হয়ে থাকে। বিজিবির সোর্স পরিচয় দিয়ে একাধিক ব্যক্তি সীমান্তের এই এলাকাগুলো নিয়ন্ত্রণ করে। রায়পুর সীমান্তের কুটি মিয়া, শ্যামকুড় এলাকায় আলী, নেপা এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে নওশের খোড়া, হুদাপাড়া, কাঞ্চনপুর ও বাঘাডাঙ্গা এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে আল-আমিন ও রতনপুর এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে আল-আমিন মিয়া (২)। এরা সবাই বিজিবির কথিত সোর্স পরিচয় দিয়ে চোরাকারবারিদের সহায়তা করে বলে স্থানীয়রা জানান। এ ব্যাপারে মহেশপুর ৫৮ অধিনায়ক লে. কর্নেল সালাউদ্দিন জানান, আমি এখানে সদ্য যোগদান করেছি। এ বিষয়ে আমি অবগত নই। সে জন্য এখনই কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।
