মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

বাসাবাড়িতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস শিগগিরই

২০২৮ সালের পর হবে ঘাটতির সমাধান

জিন্নাতুন নূর

বাসাবাড়িতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস শিগগিরই

নসরুল হামিদ

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, নতুন সরকার গঠনের পর এই মেয়াদে অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্পগুলোর মধ্যে প্রথম হচ্ছে প্রাকৃতিক গ্যাস আহরণ করা। এরপর নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ করা এবং জ্বালানির ব্যবস্থা করাসহ এর মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা। আর বিদ্যুতের বিষয়ে আমাদের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে হবে। এটিও এই মেয়াদে অগ্রাধিকার পাবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হবে। তৃতীয় অগ্রাধিকারমূলক কাজ হচ্ছে, নবায়নযোগ্য জ্বালানির পরিধি বৃদ্ধি করা। প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গত রবিবার বিকালে সচিবালয়ে নিজ দফতরে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন। প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ ফুরিয়ে আসছে, এর বিকল্প হিসেবে আগামী দিনে সরকার কী চিন্তা-ভাবনা করছে এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রাকৃতিক গ্যাস যে জায়গায় যে পরিমাণ ফুরিয়ে আসবে আগামী তিন থেকে চার বছরে এর কাভার আপ হবে। ২০২৮ সালের পরে গিয়ে গ্যাসের ঘাটতির সমাধান হবে। তবে আমরা গ্যাস আহরণে ভালো অবস্থা দেখতে পাচ্ছি। দুই বছরের মাথায় আমরা ৪৬টি গ্যাস কূপ খনন করতে পারলে প্রায় ৫০০ এমএমসিএফ গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে। এতে দুই-তিন বছরের মাথায় গ্যাসের অবস্থার উন্নতি হবে। শিগগিরই বাসাবাড়িতে আমরা নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সংযোগ দিতে পারব। আমরা চেষ্টা করছি আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে সব লাইন বিশেষ করে আমাদের যত গ্রাহক আছেন তারা যেন নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস পান। গ্যাসের গ্রাহকদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি গ্রাহকদের গ্যাসের বিল দেওয়ার জায়গা থেকে সরে আসতে হবে। ব্যবহারকারী যতটা গ্যাস ব্যবহার করবেন সে হিসেবে তারা বিল দেবেন। এ পর্যায়ে যাওয়ার জন্য ইতোমধ্যে আমরা মিটার লাগানোর ব্যবস্থা করেছি। আগামী দু-তিন বছরের মধ্যে দেশের সব গ্যাসের গ্রাহকদের মিটার স্থাপনের ব্যবস্থা শেষ করব। গ্রাহকদের আমরা ধীরে ধীরে মিটারের মধ্যে নিয়ে আসছি। এরই মধ্যে সাড়ে ৪ লাখ গ্যাস মিটার বসানো হয়েছে। আমরা বহুদিন ধরে গ্যাস মিটার বসানোর জন্য চেষ্টা করছিলাম। এ জন্য অর্থের প্রয়োজন ছিল। সেই অর্থ জোগান দিতে দেরি হয়েছে। বর্তমানে এর ব্যবস্থা হয়েছে। বিশ্বকব্যাংক, এডিবি এবং জাপান এক্ষেত্রে অর্থায়ন করছে। নসরুল হামিদ বলেন, আমরা প্রায় সাড়ে ৭ লাখ অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি। কিন্তু আবারও অবৈধ গ্যাস সংযোগ লাগানো হচ্ছে। এ জন্য একটি বিরাট এলাকাজুড়ে গ্যাস সংকট দেখা যাচ্ছে। আমি গ্রাহকদের একটু ধৈর্য্য ধরতে অনুরোধ করছি। আমরা জানি সাময়িক সমস্যা হচ্ছে। আমরা এলপিজির ব্যবহার বৃদ্ধির চেষ্টা করছি। এলপিজির দামও আমরা ‘ডাইনামিক প্রাইসিং’-এর আওতায় নিয়ে গিয়েছি। প্রতি মাসে এলপিজির দাম নির্ভর করে বিশ্ববাজারের দামের ওপর। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের এই মুহূর্তে গ্যাসের চাহিদা প্রায় ৩ হাজার ৮০০ এমএমসিএফ। আমরা সরবরাহ করতে পারছি ৩ হাজার ২০০ এমএমসিএফ। অর্থাৎ ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। বিশেষ করে শিল্প খাত ও বিদ্যুতের ক্ষেত্রে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা এরই মধ্যে আরও ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ অতিরিক্ত উৎপাদন করতে দিয়েছি। আগামী দুই বছরের মধ্যে আমরা ২ হাজার মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ সিস্টেমে দেখতে চাই। আগামী পাঁচ বছরে আমরা ১২ হাজার মেগাওয়াট সোলার বিদ্যুৎ নিয়ে কাজ করছি। আমরা এই বিদ্যুৎও নিয়ে আসতে চাই। আমরা মনে করি, যে গতিতে আমরা যাচ্ছি তা সন্তোষজনক। তেলের ডাইনামিক প্রাইসিং বিষয়ে জানতে চাইলে নসরুল হামিদ বলেন, আমরা বেসরকারি খাতে তেলের বাজার ছেড়ে দিয়েছি। আমরা চাচ্ছি চলতি বছর এপ্রিলের মধ্যে দেশে জ্বালানি তেলের বাজারে ডাইনামিক প্রাইসিং ব্যবস্থা চালু হবে।

 

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর