মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধন করলেন নরেন্দ্র মোদি

সংহতি যাত্রা মমতার

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

অযোধ্যায় হিন্দু সম্প্রদায়ের জনপ্রিয় দেবতা রামের নামে তৈরি বিশাল মন্দিরের উদ্বোধন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গতকাল মন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে অংশ নেন মোদি। এ সময় রামমন্দিরের প্রধান কক্ষে রামের মূর্তির চোখের বাঁধন খুলে দেওয়া হয়। এদিকে মোদি যখন অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধনে ব্যস্ত ঠিক তখন সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তা দিতে কলকাতায় ‘সংহতি যাত্রা’য় হেঁটেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনের সময় মোদির সঙ্গে ছিলেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, উত্তর প্রদেশের রাজ্যপাল আবন্দীবেন প্যাটেল, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত। এর আগে দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে রামমন্দিরে প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর ধর্মীয় আচার-রীতিনীতি মেনে ১২টা ১০ মিনিটে পূজায় বসেন। এরপর ৮৪ সেকেন্ডের মাহেন্দ্রক্ষণে রামলালার মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন প্রধানমন্ত্রী। রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার পর পদ্ম ফুল দিয়ে রামের চরণে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার পাশাপাশি পঞ্চ প্রদীপ জ্বালিয়ে, শাঁখ বাজিয়ে বিশেষ আরতি করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে রামলালার মূর্তির চারধার প্রদক্ষিণ করে মাটিতে শুয়ে পড়ে ভগবান রামকে প্রণাম করেন প্রধানমন্ত্রী। রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার পর ১১ দিনের উপবাস ভাঙেন প্রধানমন্ত্রী। মন্দির উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাম বিবাদ নয়, সমাধানের এক নাম। কেউ কেউ বলেছিলেন রামমন্দির তৈরি হলে আগুন জ্বলবে, আসলে তারা ভারতের স্বরূপ চেনে না। রাম আগুন নয়, শক্তির উৎস। রাম বিবাদ নয়, সমাধানের নাম। রাম কেবল আমাদেরই নয়, রাম সবার। রাম কেবল বর্তমান নয়, রাম অনন্তকাল ধরে থাকবে। রাম ভারতের আত্মা, বিচার, বিধান, চেতনা, চিন্তন, বন্ধু, প্রবাহ ও বিশ্বাসের নাম।’ রামমন্দিরের উদ্বোধন কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল মন্দির চত্বর ও গোটা অযোধ্যা শহর। এক দিন আগে থেকেই অযোধ্যার সব রাস্তা সিল করে দেওয়া হয়। বারকোড লাগানো নির্দিষ্ট পরিচয়পত্র ছাড়া কাউকেই ঢুকতে দেওয়া হয়নি। উত্তর প্রদেশ রাজ্য পুলিশের বিশেষ ট্রাস্ট ফোর্স, সন্ত্রাস দমন শাখা, সিআরপিএফ, এনএসজি, এসপিজির পাশাপাশি গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তাদের কড়া নজরদারি ছিল। সেই সঙ্গে ড্রোন উড়িয়েও চালানো হয় নজরদারি। দেশটির অন্য রাজ্যগুলোয়ও এ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। এদিকে কলকাতায় ‘সংহতি যাত্রা’য় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি কলকাতার হাজরা মোড় থেকে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত সম্প্রীতি পদযাত্রা করেন। মিছিলের সামনের সারিতে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীসহ বিভিন্ন ধর্মের সম্প্রদায়ের গুরুরা। মিছিল শুরুর আগে দুপুরে কালীঘাটের কালীমন্দিরে ফল, মিষ্টি দিয়ে পুজো দেন, মন্ত্র উচ্চারণ করেন মমতা। আর মিছিলের মাঝে স্থানীয় একটি গুরুদুয়ারা, গির্জা ও একটি মসজিদে গিয়ে প্রার্থনাও করেন তিনি। কলকাতার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি জেলায়, ব্লক ও বুথ স্তরেও এ সংহতি যাত্রার আয়োজন করে ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস।

সর্বশেষ খবর