বুধবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

অবৈধ যানের দখলে কুমিল্লার ১০৫ কিমি

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার ১০৫ কিলোমিটার যেন গ্রামীণ সড়কে রূপ নিচ্ছে। অবৈধ তিন চাকার যানবাহন চলাচলের কারণে মহাসড়কে ধীরগতি, যানজট ও দুর্ঘটনা ঘটছে। হাইওয়ে পুলিশের দাবি- সার্ভিস লেন হলে এ সমস্যা কমে যাবে। মহাসড়কের কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকায় চলছে ইঞ্জিনচালিত থ্রি-হুইলার, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, রিকশা, ভ্যান। কোথাও কোথাও প্রকাশ্যেই চলছে নসিমন, করিমন, ভটভটিও।

সরেজমিন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, মহাসড়কের ওপরই সারি সারি সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা দাঁড়িয়ে রয়েছে। মহাসড়ক হয়েই এসব যান চলাচল করছে বিভিন্ন স্থানে। এ এলাকায় মহাসড়কের ঢাকা ও চট্টগ্রামগামী দুটি লেনই অবৈধ তিন চাকার যানবাহনের দখলে।

মহাসড়কের এই অংশে প্রায়ই যানজট লেগে থাকে, ঘটে দুর্ঘটনাও। জরুরি যান চলাচলে সৃষ্টি হয় প্রতিবন্ধকতা। চৌদ্দগামের মিয়াবাজার এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন মালামাল নিয়ে নছিমন, করিমন ও ভটভটি অবাধে চলাচল করছে। সদর দক্ষিণ উপজেলার সুয়াগাজি এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, মহাসড়কের ওপরেই সিএনজিচালিত অটোরিকশার অঘোষিত স্ট্যান্ড। এখান থেকে যাত্রী তুলে ছুটছে বিভিন্ন গন্তব্যে। একই অবস্থা মহাসড়কের পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড, কোটবাড়ি বিশ্বরোড, আলেখারচর বিশ্বরোড, সেনানিবাস এলাকায়। ওই এলাকায় দেখা গেছে, বিভিন্ন ক্রসিং দিয়ে প্রতি মুহূর্তেই এপার-ওপার চলাচল করছে নিষিদ্ধ তিন চাকার যান। এসব ক্রসিং দিয়ে অবাধে তিন চাকার যান চলাচল করায় যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনাও। এসব স্থানে উল্টো পথেও চলাচল করে এসব নিষিদ্ধ যান। মহাসড়কের নিমসার, চান্দিনা, ইলিয়টগঞ্জ, গৌরীপুরসহ দাউদকান্দির বিভিন্ন এলাকায়ও অবাধে অবৈধ তিন চাকার যান চলাচল করতে দেখা গেছে। আবুল হোসেন, মোহাম্মদ হোসেনসহ তিন চাকার যানবাহনের কয়েক চালক বলেন, মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করলে দ্রুত সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছা যায়। এমন কিছু স্থান আছে যেগুলো মহাসড়ক দিয়ে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই। তারা মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচলের জন্য আলাদা লেন চান। নুরে আলম, কামাল হোসনসহ কয়েকজন বাসচালক জানান, অবৈধ এসব তিন চাকার যানবাহনের অনেক চালক জানেন না কীভাবে মহাসড়কে গাড়ি চালাতে হয়। অনেক সময় তারা হুট করে দ্রুতগতির গাড়ির সামনে চলে আসে। যখন ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে একটি বাস চলে, তখন এসব নিষিদ্ধ যান হুট করে সামনে চলে আসলে আমাদের হার্ডব্রেক করে গাড়ি থামাতেও বেকায়দায় পড়তে হয়। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।

গৌরীপুর বাজারের ব্যবসায়ী আবদুল মজিদ বলেন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ অবৈধ তিন চাকার যানবাহনের দখলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গৌরীপুর এলাকা। এতে মহাসড়কে চলাচলরত দূরপাল্লার যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসসহ জরুরি সেবার যানবাহনগুলোকে যানজটের কবলে পড়তে হচ্ছে। যাত্রীদেরও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলম বলেন, মহাসড়কে নিষিদ্ধ তিন চাকার যানবাহনগুলো অনেক সময় গোপনে চলার চেষ্টা করে। এসব নিষিদ্ধ যানবাহনের বিরুদ্ধে সারা বছরই ব্যবস্থা চলমান আছে। সার্ভিস লেন হলে এ সমস্যা কমে যাবে।

 

সর্বশেষ খবর