রবিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

গোটা রূপগঞ্জে মেলে সব মাদক, হটস্পট চনপাড়া

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা রাজধানী ঢাকার লাগোয়া। গোটা রূপগঞ্জে পাওয়া যায় সবরকম মাদক। রূপগঞ্জে মাদকের হটস্পট চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রটি রাজধানীর ডেমরা থানা সীমান্তবর্তী। প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার মাদক বেচাকেনা হয় এ কেন্দ্রে। হাত বাড়ালেই পাওয়া যায় ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইন, গাঁজাসহ সব ধরনের মাদক। চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে মাদক সরবরাহের নিরাপদ রুট কুমিল্লার ভারতীয় সীমান্ত এলাকা। গত কয়েক বছরে নেশার কাজে বাধা ও প্রতিবাদে চনপাড়ায় বেশ কয়েকজন খুন হয়েছে। রূপগঞ্জের মাদক ব্যবসা পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করেন সরকারদলীয় রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা। ঢাকার খুব কাছে হওয়ায় চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে রাজধানীসহ আশপাশ এলাকায় মাদক সরবরাহ হয় খুব সহজে। চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রটির তিন দিকে নদী। উত্তর, দক্ষিণ, পুবে শীতলক্ষ্যা নদী আর পশ্চিম দিকের অনেকাংশে বালু নদ। পশ্চিম দিকের রাস্তা দিয়ে যোগাযোগ হয় রাজধানী সঙ্গে। চরম ঘনবসতিপূর্ণ এ পুনর্বাসন কেন্দ্রে প্রতিদিন মাদকের হাট বসে। বেশির ভাগ পরিবার মাদকের ব্যবসায় জড়িত। অনেক পরিবারে মা-বাবা, ভাই-বোন সবাই মাদক ব্যবসা করে। এ ছাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রটি সারা বাংলাদেশের সব ধরনের অপরাধীর অভয়ারণ্য। খুনি, দাগি আসামি, মাদকসেবী, ছিনতাইকারী, খর পার্টি, মলম পার্টিসহ বিভিন্ন প্রকার সন্ত্রাসী এ পুনর্বাসন কেন্দ্রে বসবাস করে। প্রায় চার দিকে নদনদী ও চরম ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় মাদকসেবী ও সন্ত্রাসীদের নিরাপদ স্থান এটি। রাজধানীর খুব কাছে ও মাদকসেবী-সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য হওয়ায় চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রটি মাদকের বিশাল হাট। সারা রূপগঞ্জে যত মাদকের স্পট আছে এর বেশির ভাগই চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে। প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার মাদক বেচাকেনা হয় এখানে। হাত বাড়ালেই মেলে ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইন, গাঁজাসহ সব ধরনের মাদক। এ কেন্দ্রে মাদক সরবরাহের নিরাপদ রুট কুমিল্লার ভারতীয় সীমান্ত এলাকা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা টোল প্লাজায় র‌্যাব, পুলিশের অভিযানে যেসব মাদক ধরা পড়ে এর সিংহভাগ আসে কুমিল্লা সীমান্ত থেকে। চনপাড়া থেকে কুমিল্লার ভারতীয় সীমান্ত সবচেয়ে কাছে। প্রতিদিন দেড় শতাধিক স্পটে চলে এসব মাদক বেচাকেনা। চনপাড়া ছাড়াও গোটা রূপগঞ্জে পাওয়া যায় সব ধরনের মাদক। অনুসন্ধানে জানা যায়, ইয়াবা ও ফেনসিডিল বহন করা হয় লাউ, নারকেল আর ম্যাচবাক্সের ভিতরে করে। হেরোইন বহন করা হয় মিষ্টির প্যাকেটের ভিতরে করে। গাঁজা ছালার চটের ভিতরে করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে মহিলাদের দিয়ে মাদক বহন করা হয়। মহিলাদের বিশেষ স্পর্শকাতর জায়গায় ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইন ও গাঁজা রেখে বহন করা হয়। এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, ‘মাদক নিয়ে পুলিশের রীতিমতো অভিযান চলে। আমি জয়েন করার পর গত এক মাসে ২০-২৫ জন মাদক ব্যবসায়ী ও সেবী আটক করে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছি। এ ছাড়া ইয়াবা, ফেনসিডিল, মদসহ বেশ কিছু মাদক জব্দ করা হয়েছে।’

 

সর্বশেষ খবর