রবিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
জ্বালানি তেলে স্বয়ংক্রিয় মূল্য সমম্বয় চালু এপ্রিলে

প্রয়োজন ইনভয়েস ভ্যালুতে শুল্ক মূল্যায়ন

♦ ট্যারিফ ভ্যালুর পরিবর্তে ইনভয়েস ভ্যালুতে শুল্ক মূল্যায়ন করে দাম নির্ধারণ চান উদ্যোক্তারা ♦ ট্যারিফ ভ্যালুতে প্রাইসিং ফর্মুলা থাকলে তেল পাচার রোধ সম্ভব হবে না ♦ প্রাইসিং ফর্মুলা পরিবর্তন না করলে স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হবে ♦ অবাধে পাচার হচ্ছে আমদানিকৃত জ্বালানি তেল, অপচয় হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা, চাপ পড়ছে রিজার্ভে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রতিবেশীসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশই এখন আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমন্বয় করে জ্বালানি তেল বিক্রি করছে। দাম আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়ে গেলে দেশের বাজারেও বাড়ছে। আবার আন্তর্জাতিক বাজারে কমলে দেশের বাজারেও কমিয়ে আনা হয়। এখন প্রায় প্রতিটি দেশই এভাবে চলছে। এতে তেল পাচারের ঝুঁকিটা থাকে না। কিন্তু বাংলাদেশই উল্টো পথে চলছে। যার কারণে যখন বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যায়, তখন পাশের দেশগুলোয় দরে ব্যাপক পার্থক্য তৈরি হয়। এতে বাংলাদেশ থেকে পাশের দেশগুলোয় তেলের পাচার বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বালানি তেলের দাম বিশ্ববাজারের সঙ্গে স্বয়ংক্রিয় সমন্বয় পদ্ধতি চালুর আগেই ইনভয়েস ভ্যালুতে শুল্ক মূল্যায়ন করে প্রাইসিং ফর্মুলা প্রণয়ন করতে হবে। তাহলে তেল পাচার রোধ করা সম্ভব হবে। তা না হলে কোনোভাবেই এ তেল পাচার বন্ধ করা সম্ভব হবে না বলেও তারা জানান। একই সঙ্গে বিশেষজ্ঞরা ভারতের কলকাতার জ্বালানি তেলের দামের সঙ্গে বাংলাদেশের মূল্য সমন্বয় করারও পরামর্শ দিয়েছেন।

জ্বালানি খাত সংশ্লিষ্টরা বলেন, বর্তমানে জ্বালানি তেল ট্যারিফ ভ্যালুতে শুল্ক মূল্যায়ন করে প্রাইসিং ফর্মুলা করা হচ্ছে। এ প্রাইসিং ফর্মুলা থাকলে কখনোই তেল পাচার রোধ সম্ভব হবে না। এমনকি স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতিও বাস্তবায়ন হবে না। কারণ ইনভয়েস ভ্যালুতে শুল্ক মূল্যায়ন করে মূল্য পরিশোধ করে ট্যারিফ ভ্যালুতে শুল্ক মূল্যায়ন করে (ব্যারেলপ্রতি ৪০ ডলারে) মূল্য নির্ধারণ করা হচ্ছে।

খাতসংশ্লিষ্টরা আরও বলেন, আমরা এলসি করার সময় বেসরকারি ব্যাংকগুলো ডলারের মূল্য ১১০ টাকা হারে ধরলেও পেমেন্ট করার সময় তাদের দিতে হচ্ছে ১২৫ টাকা। এতে প্রতি ডলারে বাড়তি ১৫ টাকা দিতে হচ্ছে তেলের কাঁচামাল আমদানিকারকদের। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) জ্বালানি আমদানিতে ট্যারিফ ভ্যালু হিসেবে যে পরিমাণ শুল্ক (৪০ ডলার) দিচ্ছে, বেসরকারি পর্যায়ে তার চেয়ে ৫০ শতাংশের বেশি শুল্ক দিতে হচ্ছে। এতে ভ্যাট-ট্যাক্স দিতে হচ্ছে; যা মুক্তবাজার অর্থনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি (অটোমেটেড প্রাইসিং ফর্মুলা) কার্যকরের শর্ত দিয়েছিল। আইএমএফের শর্তপূরণে ডিজেল, পেট্রল, অকটেনসহ জ্বালানি তেলের দাম বিশ্ববাজারের সঙ্গে মিল রেখে নিয়মিত সমন্বয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার। শুরুতে এটি তিন মাস পরপর নির্ধারণের পরিকল্পনা ছিল। তবে এখন প্রতি মাসে দাম নির্ধারণের চিন্তা চলছে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে মূল্য সমন্বয়ের প্রক্রিয়াটির এখন চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজ করছে বিপিসি।

জানতে চাইলে পারটেক্স পেট্রো কেমিক্যালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুবীর কুমার ঘোষ বলেন, ‘সমন্বয়ের অভাবে আমরা ট্যারিফ মূল্য পাচ্ছি না। ট্যারিফ মূল্য না পাওয়ায় আমাদের প্রকৃত মূল্যের ওপর ডিউটি দিতে হচ্ছে। ফলে আমাদের খরচ বেশি হয়ে যাচ্ছে। আমরা পাঁচটি কোম্পানি শতভাগ তেল বিপিসিকে দিই। অর্থাৎ আমরা সরকারের একটা অংশ। দ্বিতীয়ত, সরকার ট্যারিফ ভ্যালু ঘোষণা করার পরও ট্যারিফ ভ্যালুতে যেতে পারছি না, ফলে বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমার পরও আমরা তেলের দাম কমাতে পারছি না। আমরা পাঁচটি কোম্পানি তেলের যখন কাঁচামাল আমদানি করি, তখন আমরা প্রকৃত মূল্যের ওপর ডিউটি দিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছি। সেখানে সরকার যখন আমদানি করে, তখন ট্যারিফ ভ্যালুর ওপর ডিউটি দিচ্ছে। এতে আমরা একটা ডিস্ক্রিমিনেশনে পড়ে যাচ্ছি। আমাদের কথা হচ্ছে, আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য হোক। সরকারি বা বেসরকারি সবার জন্য এক আইন প্রযোজ্য হোক।’

তিনি বলেন, ‘তৃতীয়ত, আমরা পাঁচটি রিফাইনারি কোম্পানি গত অর্থবছরে প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করেছি। আমরা তেলের কাঁচামাল আমদানি করি; ধরা যাক আজকে তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৭০ ডলার, কিন্তু যদি আমরা ফিনিশড গুডস আমদানি করতাম সেখানে প্রতি ব্যারেল ১০০ ডলার মূল্য দিয়ে আমদানি করতে হতো। এতে ৩০ ডলারের যে পার্থক্য সেটা সরকারের সাশ্রয় হলো। বর্তমানে ডলারের যে ক্রাইসিস, সে সময় আমরা পাঁচটি কোম্পানি সরকারের ডলার সাশ্রয় করছি। আমাদের রেমিট্যান্সের ওপর যে আড়াই শতাংশ দেওয়া হয়, সেটা দেওয়া উচিত। কিন্তু উল্টো আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে না। আমরা চাচ্ছি, আইন সবার জন্য সমভাবে প্রযোজ্য হোক। বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআর, জ্বালানি মন্ত্রণালয় একযোগে সবার জন্য একটা দিকনির্দেশনা প্রদান করুক।’

সুবীর কুমার ঘোষ আরও বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছ থেকে অতিরিক্ত কোনো সুবিধা চাচ্ছি না। সরকার যখন এলসি ওপেন করে, তখন বাংলাদেশ ব্যাংক বিপিসিকে সহযোগিতা করে, আমরা সে ক্ষেত্রে ডলারের বিষয়ে কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না। আমরা সরকারের কাছে আবেদন করছি, বিষয়টি সার্বিক বিবেচনা করে সবার জন্য প্রযোজ্য আইন করে, এ সমন্বয়হীনতা দূর করা হোক। এটাই আমাদের দাবি ও কথা। আমরা ইনভয়েস (প্রকৃত) মূল্যের ওপর ডিউটি দিচ্ছি, আর সরকার ট্যারিফ ভ্যালুতে ডিউটি দিচ্ছে। এক দেশে দুই আইন থাকতে পারে না। আমরা চাচ্ছি আমাদের জন্য যে আইন, সরকারের জন্যও সেই একই আইন হোক।’

জ্বালানি তেলের ডায়নামিক প্রাইসিং বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘আমরা বেসরকারি খাতে তেলের বাজার ছেড়ে দিয়েছি। চলতি বছর এপ্রিলের মধ্যে দেশে জ্বালানি তেলের বাজারে ডায়নামিক প্রাইসিং ব্যবস্থা চালু হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা অধিকাংশই পরিশোধিত তেল আমদানি করি যা আমাদের জন্য ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে। আমরা বেসরকারি খাতে রিফাইনারি উš§ুক্ত করে দিচ্ছি একই সঙ্গে ডিস্ট্রিবিউশনও উন্মুক্ত করে দিচ্ছি।’

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম বিষয়ে বাংলাদেশে কখনোই সুষ্ঠু প্রাইসিং সিস্টেম ছিল না। মন্ত্রণালয় যখন মনে করেছে প্রাইস বাড়ানো কিংবা কমানো দরকার তখন তারা সেভাবেই করেছে। এটাকে বলা হয় অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ প্রাইসিং। তারা সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রাইসটা জানিয়ে দিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ সিস্টেম আর নেই। এমনকি পাশের দেশ ভারত অনেক আগেই ফর্মুলা বেইজড সিস্টেমে চলে গেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে গেলে বেড়ে যাবে, কমলে কমে যাবে। আমরা আমাদের দেশে এমন ফর্মুলা এলপি গ্যাসের ক্ষেত্রে ব্যবহার করছি। প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন থেকে একটা প্রাইস দিয়ে দেওয়া হয়। আগের মাসে প্রতিদিনের যে দাম ছিল, তার একটি গড় করে দাম নির্ধারণ করা হয়। এতে আমরা দেখছি এলপিজির দাম বাড়লে ভোক্তা পর্যায়ের দাম বেড়ে যায়। কমলে কমে যায়। অনুরূপভাবে আমরা জ্বালানি তেলের দামও নির্ধারণ করতে পারি।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দাম নির্ধারণে ট্যারিফ ভ্যালুর যে মেকানিজম আছে, সরকার আমদানিকৃত একটা জিনিস নিয়ে আসে, নিয়ে আসার পর এর সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের ভ্যাট-ট্যাক্স যুক্ত করে, তারা নিজেরাই ঠিক করে এটার দাম কত হবে। সাধারণত দেখা যায়, কোনো কিছুর যখন উচ্চমূল্য থাকে, তখন এ ফর্মুলা করে। ধরলাম ১০০ ডলার ব্যারেলের জন্য এটা করল, যখন এটা ৮০ ডলার হয়ে গেল, তখন একটা পরিমাণ টাকা উদ্বৃত্ত রয়ে গেল, সেই উদ্বৃত্ত টাকা বিপিসির পকেটে চলে যায়। বিপিসি যদি সে টাকা সংরক্ষণ করে দাম বেড়ে গেলে সে টাকা থেকে সমন্বয় করত, তাহলে এ সমস্যা থাকত না।’

ইজাজ হোসেন আরও বলেন, ‘ট্যারিফ ভ্যালুতে আমরা দেখেছি ভোক্তারা একটা ফিক্সড ভ্যালুতে তেল পায়। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমে গেলেও সেই মূল্যেই ভোক্তাদের কিনতে হয়। আমরা যদি ইনভয়েস ভ্যালুতে চলে আসি, তাহলে আন্তর্জাতিক বাজারে গত এক মাসে আমদানিকৃত পণ্যের মূল্য কত, সেই আমদানি মূল্যের একটা গড় করা হবে। সে গড় মূল্যের সঙ্গে সরকারের যে ভ্যাট-ট্যাক্স আছে সেগুলো যোগ করে দেওয়া হবে। এর সঙ্গে আর কিছুই যোগ হবে না। এ অবস্থায় আমাদের ইনভয়েস ভ্যালুর ওপর স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে যাওয়াই ভালো।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি শুনেছি এর সঙ্গে বিপিসির একটা মুনাফার কথা বলা হচ্ছে, এটা আমি কখনো গ্রহণ করব না। এতে যেটা হবে, আমরা দেখব আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে আমাদের দাম বাড়বে, কমলে আমাদেরও কমবে। এলপিজির ক্ষেত্রে যেমন, তেলের ক্ষেত্রেও তেমন দাম নির্ণয় হবে। এ পদ্ধতিতে দাম কমলে ভোক্তারা সুবিধা পাবে।’

এই জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে দাম নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে ভারত যে ফর্মুলা নির্ধারণ করছে সে ফর্মুলায় আমাদের যেতে হবে। এতে দেখা যাবে প্রতি মাসে তেলের দাম পরিবর্তন হচ্ছে। এতে দাম কমলে ভোক্তারা সুবিধা পাবে। এটা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গেছে। আমি অনেকদিন ধরেই বলছি কিন্তু তারা লাভটা ছাড়তে চায় না।’

আইএমএফের কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইজাজ হোসেন বলেন, ‘এ ফর্মুলাটি যেন শোধরানো হয়। যাতে জ্বালানি তেলে ভর্তুকিও না দিতে হয়, আবার ভোক্তাদেরও অতিরিক্ত টাকা দিতে না হয়। ভারতে প্রতিদিন দাম সমন্বয় করা হয়। ভারতের ভোক্তারা এতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। আমি মনে করি আমাদেরও স্বয়ংক্রিয় দাম নির্ধারণের পদ্ধতি চালু করা উচিত। এ পদ্ধতি অনুসরণ করলে চোরাচালানও কমে যাবে।’ গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের নির্বাহী চেয়ারম্যান মাশরুর রিয়াজ মনে করেন, রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি প্রতিষ্ঠান বিপিসির দীর্ঘমেয়াদি লোকসান কমিয়ে আনতেই ‘প্রাতিষ্ঠানিকভাইে’ আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে দাম কমানো হচ্ছে না। জ্বালানি খাতের এ ট্যারিফ বেইজড প্রাইসিংকে ‘ওয়ান ওয়ে টিকিট’ উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংকের সাবেক এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘আমাদের দেশে শুধু বিশ্ববাজারের মূল্যবৃদ্ধিই অনুসরণ করা হয় যা অনেকটা ওয়ান ওয়ে টিকিট। আমাদের মনে রাখতে হবে কৃষি, উৎপাদনমুখী শিল্প, ফ্রেইট কস্ট (পরিবহন খরচ)সহ ব্যক্তিপর্যায়ে জ্বালানির প্রভাব ব্যাপক।’ সার্বিক অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্য পরিস্থিতি অনুযায়ী দাম নির্ধারণের বিকল্প নেই। জ্বালানির ‘মূল্য না বাড়িয়ে’ রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্নীতি ও কাঠামোগত দুর্বলতা কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ মাশরুর রিয়াজ।

 

সর্বশেষ খবর