সোমবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গারা আমাদের জন্য বোঝা : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি কোনো সময় পুরোপুরি ভালো ছিল না। কখনো একটু ভালো হয়, আবার কখনো একটু খারাপ হয়। এ পরিস্থিতি সবসময় বিরাজমান। আমরা আশা করি, এ পরিস্থিতি সবসময় থাকবে না। আমরা অতি দ্রুত  রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে পারব। রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আমাদের দেশের জন্য একটি বোঝা। গতকাল দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চীন ও নেপালের রাষ্ট্রদূত এবং জাতিসংঘের বাংলাদেশ সমন্বয়কের সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকালে চীন ও নেপাল উভয় দেশের রাষ্ট্রদূত তাদের নিজ নিজ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিনন্দনপত্র পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের হাতে তুলে দেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী মানবিক কারণে ২০১৭ সালে সীমান্ত খুলে দিয়েছিলেন। সেই সময় ওই এলাকার মানুষ তাদের হৃদয়ও খুলে দিয়েছিল। কিন্তু মিয়ানমারের শরণার্থীরা কক্সবাজারে যে এলাকায় আছে, সে এলাকার বাসিন্দারা এখন মাইনরিটি হয়ে গেছে। মিয়ানমারে সব রাইটসহ তাদের প্রত্যাবর্তন একমাত্র সমস্যার সমাধান। এটা নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে আলোচনা হয়েছে। আমরা চীনের সহযোগিতা কামনা করেছি। তারা আমাদের জানিয়েছে, তারা মিয়ানমারের সঙ্গে এনগেজমেন্টের মধ্যে আছে। তারা মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করেছে। তারা মিয়ানমারকে বলছে, অন্তত বাংলাদেশ থেকে প্রত্যাবর্তনটা শুরু করার জন্য। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের সরকার বাংলাদেশের জনগণের নির্বাচিত সরকার, জনগণের সরকার এবং ভারত-রাশিয়া-চীন, যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপীয় ইউনিয়ন-যুক্তরাজ্যসহ কূটনৈতিক সম্পর্কের সব দেশের সঙ্গেই আমাদের চমৎকার সম্পর্ক। মন্ত্রী বলেন, চীন আমাদের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী। চীন থেকে আমরা বেশি আমদানি করি, কম রপ্তানি করি। আমাদের রপ্তানি বৃদ্ধির আলোচনায় চীন বাংলাদেশ থেকে পাট, চামড়া, মাংস, সি-ফুড এবং আম আমদানিতে আগ্রহ ব্যক্ত করেছে। জুলাই বা আগস্ট মাসে আমরা আম রপ্তানি শুরু করতে পারি। চীন একটি বড় বাজার। সেখানে আমাদের পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার নিয়ে আলোচনা করেছি। মন্ত্রী জানান, চীন আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে, সুবিধাজনক সময়ে সেটি হওয়ার জন্য আলোচনা চলছে। জাতিসংঘের কো-অর্ডিনেটর গুয়েন লুইসের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে ড. হাছান জানান, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধ ও পরে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের পর সেদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি বেশি নিবদ্ধ হয়েছে। রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তাও অর্ধেকে নেমে এসেছে। আমি বলেছি, রোহিঙ্গা ইস্যু যেন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্পটলাইটে থাকে। জাতিসংঘের কো-অর্ডিনেটর বলেছেন, এটি নিয়ে জেনেভায় আন্তর্জাতিক ওয়ার্কিং গ্রুপ কাজ করছে এবং এ নিয়ে বৈঠক আসন্ন। নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারীর সঙ্গে মানুষে-মানুষে যোগাযোগ, যাতায়াত বৃদ্ধি, বাণিজ্য সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের উত্তরের সীমান্ত থেকে নেপাল মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে। ১ লাখ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতার সম্ভাবনার দেশ নেপালের সঙ্গে ইতোমধ্যেই আমাদের বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তি হয়েছে, এর ট্যারিফ নিয়ে আলোচনা চলছে।

সর্বশেষ খবর