সোমবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
জামিনের পর ড. ইউনূস

শ্রমিকরা নয় মামলা করেছে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

শ্রমিকরা নয় মামলা করেছে সরকার

শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে আপিল আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজন। গতকাল শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এম এ আউয়াল আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাদের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

আদেশের পর ড. ইউনূস সাংবাদিকদের বলেন, সরকার বারবার বলছে, এই মামলা সরকার করেনি। কিন্তু এই মামলা সরকার করল নাকি শ্রমিক করল আপনারা তো কিছুই বললেন না। কলকারখানা অধিদফতর সরকারের। এ মামলা তারাই করেছে। শ্রমিকরা এ মামলা করেনি। তিনি বলেন, আমরা একটা স্বপ্নের পেছনে ছুটেছি। এই স্বপ্ন বুনতে গিয়ে কারও বিরাগভাজন হয়েছি। কিন্তু কেন এই মামলা করল সেটা বলতে পারব না। আমার প্রত্যাশা হচ্ছে, আমরা নতুন পৃথিবী গড়ব। তিন শূন্যের পৃথিবী গড়ব। এ মামলার সাজা একটি ছোটখাটো ব্যাপার, এ নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই।  এর আগে গতকাল সকালে সাজা বাতিল চেয়ে আপিল আবেদন করেন তাদের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। এ সময় আপিলকারীদের পক্ষে আত্মসমর্পণ পূর্বক জামিনের আবেদনও করা হয়। ইউনূসসহ অন্য তিন বিবাদী গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

গত ১ জানুয়ারি ঢাকার শ্রম আদালত-৩ এর বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা তাদের বিরুদ্ধে সাজার রায় দেন। তাদের শ্রম আইনের ৩০৩ (ঙ) ধারায় সর্বোচ্চ ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১০ দিনের কারাদন্ড দেওয়া হয়। অপরদিকে ৩০৭ ধারায় ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদন্ড দেন আদালত। এরপর আসামি পক্ষ আপিলের শর্তে জামিন আবেদন করেন। আদালত সে আবেদন মঞ্জুর করে ৫ হাজার টাকা বন্ডে এক মাসের জন্য জামিন দেন। সেই সময়সীমার মধ্যেই আপিল করা হলো।

গত বছরের ২২ আগস্ট এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ৮ নভেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য রাখেন তারা। এরপর থেকে মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। ২৪ ডিসেম্বর এ মামলায় উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ১ জানুয়ারি রায়ের দিন ধার্য করেন শ্রম আদালতের বিচারক। ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ শ্রম বিধিমালা ১০৭ বিধি ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

সর্বশেষ খবর