বুধবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গুলিবিদ্ধ তাজেল

রফিক বাহিনীর প্রধানসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার নাওড়া গ্রামে রফিক বাহিনীর হামলায় গুলিবিদ্ধ তাজেল ইসলাম এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ভয়ংকর রফিক বাহিনীর তাণ্ডবে চোখে গুলিবিদ্ধ হন তাজেল। এ ঘটনায় আহত ১৩ জনের ৫ জন এখনো বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদিকে হামলার ঘটনায় ভুক্তভোগীরা রূপগঞ্জ থানায় মামলা করতে গেলেও গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ তা নেয়নি। ঘটনার সত্যতা পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দীপক চন্দ্র সাহা। অভিযোগ তদন্তের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। সোমবার দুপুরে কায়েতপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও তার ভাই মিজানুর রহমানের উপস্থিতিতে ৫০ থেকে ৬০ জন সন্ত্রাসী নাওড়া গ্রামের নিরীহ বাসিন্দাদের ওপর বর্বর হামলা চালায়। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ ৮ জনসহ আহত হয় ১৩ জন। এর মধ্যে পাঁচজন বর্তমানে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানিয়েছে তাদের পরিবার। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সন্ত্রাসীদের ভয়ে এলাকা ছাড়া হয়েছেন বলে জানা গেছে।

তাজেল ইসলাম নাওড়া গ্রামের মোক্তার হোসেনের ছেলে। সোমবার দুপুরে সন্ত্রাসী তার বাড়িতে হামলা শুরু করে। আশপাশের লোকজন তাকে রক্ষা করতে এলে সন্ত্রাসীরা ব্যাপকভাবে গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তাজেল। এ সময় রফিক বাহিনীর সদস্য আবদুর রহমান তাকে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে আঘাত করে। এতে তার মুখমণ্ডলে আঘাতপ্রাপ্ত হন। এরপর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বেসরকারি হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়। তাজেলের শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি বলে জানিয়েছেন তার বাবা মোক্তার হোসেন। চিকিৎসকের বরাত দিয়ে মোক্তার হোসেন বলেন, তার অবস্থা খুবই গুরুতর। হামলার ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত মুহাম্মদ জাগু প্রধান, আলাদি প্রধান, মোহাম্মদ আল আমিন, জয়নাল প্রধানও গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে বলে জানা গেছে। সরেজমিন গতকাল দুপুরে নাওড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পুরো গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। গ্রামটিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। গ্রামের বাসিন্দা নুরজাহান বেগম জানান, রফিক বাহিনীর ফের সন্ত্রাসী হামলার ভয়ে অধিকাংশ বাড়ির পুরুষরা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান করছেন। হামলার ঘটনায় মোস্তাফিজুর রহমান নীরব বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। এতে হামলাকারীদের মধ্যে রফিকুল ইসলাম ও তার ভাই মিজানসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৩০ থেকে ৪০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। মামলার বাদী মোস্তাফিজুর রহমান নিরব জানান, আমরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অস্ত্র উদ্ধার অথবা একজন হামলাকারীকে আইনের আওতায় আনতে পারেনি পুলিশ।

সর্বশেষ খবর