রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
কী করবে দুই দল

বিএনপি কঠোর না হলে পাল্টা কর্মসূচি নয় আওয়ামী লীগের

শরিফুল ইসলাম সীমান্ত

বিএনপি ও সমমনাদের পক্ষ থেকে কঠোর কোনো কর্মসূচি না এলে রাজপথে পাল্টা কর্মসূচি দেবে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিরোধীদের রাজনৈতিক কর্মসূচিকে দল ও সরকারের জন্য হুমকি মনে না করলে পাল্টা কর্মসূচি না দেওয়ার এই নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। নির্বাচনি ইশতেহারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণসহ ১১টি খাতকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছিল দলটি। আপাতত এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে মনোযোগী ক্ষমতাসীনরা। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে দলটি। ক্ষমতাসীনরা মনে করছে দ্রব্যমূল্য জনগণের জন্য সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে পারলে বিরোধীদের সব আন্দোলন কর্মসূচি মাঠে মারা যাবে।

নির্বাচনের পর সরকার বেকায়দায় পড়বে বলে যে আশঙ্কা করা হচ্ছিল তা ঝেড়ে ফেলেছে টানা চতুর্থবার সরকার গঠন করা আওয়ামী লীগ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিশ্বের প্রায় সব দেশের সরকার প্রধান এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা সরকারকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছে। আগ্রহ প্রকাশ করেছে নতুন সরকারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়ন ও পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রসারের বিষয়ে। এদিকে, নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি ও তাদের মিত্ররা নির্বাচন পরবর্তী সময়ে এখনো জনগণকে তাদের দাবি দাওয়ার সঙ্গে একাত্ম করতে পারেনি। গড়ে তুলতে পারেনি সরকারের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো গণআন্দোলন।

বিএনপির আন্দোলন-কর্মসূচি সম্পর্কে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, হেরে যাওয়ার ভয়ে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তাদের আন্দোলনেও জনগণ সাড়া দেয়নি। দেশে-বিদেশে তাদের যে বন্ধুরা আছে, তাদের কাছে মুখ রক্ষার জন্য এখন নামেমাত্র বিভিন্ন কর্মসূচি চালু রেখেছে। এসব নিয়ে আমরা বিচলিত নই। আমরা এখন দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করছি। দলীয় সূত্রে জানা যায়, বিরোধীদের আন্দোলন-কর্মসূচি নিয়ে বিচলিত নয় আওয়ামী লীগ। সরকারের সামনে নানা সংকট থাকলেও বর্তমানে সব মনোযোগ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দিকে। জনগণ যাতে দ্রব্যমূল্যের চাপে অসহনীয় হয়ে না ওঠে সেটি নিয়ে তারা চিন্তিত। যে কোনো মূল্যে দ্রব্যমূল্য জনগণের জন্য সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনার বিষয়ে চ্যালেঞ্জ অনুভব করছে ক্ষমতাসীনরা। নির্বাচনি ইশতেহারে ১১টি খাতে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। ১১টি খাতের মধ্যে প্রথম খাতটি হলো- দ্রব্যমূল্য সবার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন। দেশের মানুষের কাছে নির্বাচনি ইশতেহারে যেসব অঙ্গীকার তিনি করেছেন, সেসব বাস্তবায়নে তৎপরতা চালাচ্ছেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে ডেকে পরামর্শ ও কর্মপরিকল্পনা দিচ্ছেন। কথা বেশি না বলে কাজ করার জন্য দায়িত্বশীল সবাইকে নির্দেশ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আওয়ামী লীগ জনকল্যাণকর ও সময়োপযোগী সরকার। বিএনপি দেশের মানুষের কষ্টকে পুঁজি করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায়। তাদের সে সুযোগ দেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগ যে কোনো চ্যালেঞ্জ শক্তভাবে মোকাবিলা করতে জানে। জনগণের কাছে দেওয়া আমাদের যে প্রতিশ্রুতি, সেই নির্বাচনি ইশতেহার বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে অপশক্তিদের সব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। তবে রাজপথে কেউ বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের মোকাবিলা করা হবে।

সর্বশেষ খবর