রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

চুলের রং নিয়ে খুনোখুনি

আলী আজম

আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া (৩৫)। সুনামগঞ্জ সদর থানার সৈয়দপুরের মো. উছমান আলী ভুঁইয়ার ছেলে। তার ছোট ভাই আশরাফুল ইসলাম (১১)। একই গ্রামের বিল্লাল হোসেনের সেলুনে ক্রিকেট খেলার ব্যাট ও চুলে রং করা নিয়ে হৃদয় মিয়ার সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ায়। এক পর্যায়ে আশরাফুলের গলা চেপে ধরে হৃদয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। আশরাফুল বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি জানালে পরিবারের কয়েকজন সেলুনে আসে। সেখানে তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাটি ২০২২ সালের ৪ এপ্রিলের।

এ আক্রোশের জেরে ৬ এপ্রিল স্থানীয় মো. রফিকুল ইসলামের হোটেলের সামনে আলমগীরকে একা পেয়ে হৃদয়ের লোকজন অতর্কিত হামলা করে। এরপর সোহেল, হিরন, নাজির, জুয়েল ও হৃদয় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আলমগীরকে হত্যা করে। এ ঘটনায় ৮ এপ্রিল নিহতের বাবা সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০/১২ জনকে আসামি করা হয়। মামলাটি তদন্ত শুরু করেন এসআই মো. সাব্বির আহসান। তিনি প্রথমে ঘটনায় জড়িত সোহেল ও জুয়েলকে গ্রেফতার করেন। পরে তাদের দেওয়া তথ্য মতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু, দা, রড, স্টিলের পাইপ জব্দ করেন। এরপর নাজির ও হিরনকে নরসিংদী থেকে গ্রেফতার করা হয়। ১২ এপ্রিল অন্য আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। ১৭ এপ্রিল আসামি হৃদয় আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ওই বছরের ১৪ জুলাই সোহেল, জুয়েল, নাজির, হিরন, হৃদয়ের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। এ ছাড়া আসামি ইছব, খুর্শেদ, মো. অদুদ, জাকির, সাইফুল ও সুজন মিয়ার জড়িত থাকার তথ্য না পেয়ে মামলা থেকে তাদের অব্যাহতির আবেদন করেন। কিন্তু নিহতের বাবা মো. উছমান আলী ভুঁইয়া আদালতে এ চার্জশিটের বিরুদ্ধে নারাজি দেন। পরে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআই সিলেটকে নির্দেশ দেন আদালত। ৬ নভেম্বর মামলাটি তদন্ত শুরু করেন পিবিআই সিলেট জেলার এসআই সুদীপ দাস। তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলছেন, ক্রিকেট খেলার ব্যাট চাওয়াকে কেন্দ্র করে বাদীপক্ষের সঙ্গে আসামিপক্ষের মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জের ধরে ২০২২ সালের ৬ এপ্রিল বিকালে সোহেল, জুয়েল, নাজির, হিরন ও হৃদয় স্থানীয় রফিকুলের হোটেলে প্রবেশ করে। তারা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আলমগীরকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মামলার তদন্তে ও প্রাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণে আসামি সোহেল, জুয়েল, নাজির, হিরন ও হৃদয় ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। পিবিআই সিলেট জেলার এসআই সুমন দাস বলেন, মামলার তদন্তে আলমগীরকে হত্যায় সৈয়দপুর গ্রামের জাহের আলীর পাঁচ সন্তানের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। তারা হলো- সোহেল মিয়া, জুয়েল মিয়া, নাজির মিয়া, হিরন মিয়া ও হৃদয় মিয়া। মামলায় ক্রিকেট ব্যাট ও চুলে রং করার বিষয় উল্লেখ থাকলেও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর