বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

বাইডেনের নির্বাচনি অফিসে হামলা গ্রেফতার ২১

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে কালক্ষেপণ এবং জলবায়ু পরিবর্তন রোধে টালবাহানার নিন্দা ও প্রতিবাদে সোমবার শতাধিক ক্ষুব্ধ ছাত্র-ছাত্রী প্রেসিডেন্ট বাইডেনের পুনর্নির্বাচনি প্রচারণার সদর দফতর ভাঙচুর এবং অফিসের সামনে অবস্থান নেয়। এ সময় কর্তব্যরত পুলিশ অন্তত ২১ জনকে গ্রেফতার করে বলে উইলমিংটন পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বাইডেনের নিজ বাড়ি দেলওয়ারে স্টেটের উইলমিংটন সিটিতে ব্র্যান্ডিওয়াইন ভবনের অষ্টম তলায় নির্বাচনি প্রচারণা কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘটের সময় স্লোগান ওঠে, ‘ফান্ড ক্লাইমেট, নট জেনোসাইড’ (জলবায়ুর জন্যে তহবিল চাই, গণহত্যার জন্যে নয়)। বিক্ষোভকারীদের হাতে প্লেকার্ডেও এমন বক্তব্য লেখা ছিল। ‘সানরাইজ মুভমেন্ট’ নামে একটি সংগঠনের ব্যানার ছাড়াও বিক্ষোভকারীদের পরনে ছিল ‘সানরাইজ মুভমেন্ট’ লেখা টি-শার্ট। এ কর্মসূচির প্রচারণার সময় ‘এক্স’ এ পোস্ট দেওয়া হয়, যুবসমাজ কখনোই প্রেসিডেন্ট পদে এমন কাউকে সমর্থন জানাতে পারে না যিনি জলবায়ু পরিবর্তন রোধে পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে (ফ্লিপ-ফ্লপ) থাকেন এবং গণহত্যায় তহবিল প্রদান করেন। উইলিমিংটন সিটির পুলিশ সুপার গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে বেআইনি তৎপরতায় লিপ্ত হওয়া এবং জোরপূর্বক নির্বাচনি প্রচারণার অফিসে ঢুকে পড়ার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতার করে গাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময়েও তারা ‘ফান্ড ক্লাইমেট, নট জেনোসাইড’ স্লোগানে গোটা এলাকা প্রকম্পিত করেন। অবস্থান ধর্মঘটে থাকা অন্যেরা বলতে থাকেন বাইডেনকে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে জরুরি পদক্ষেপ এবং গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ঘোষণা দিতে হবে, অন্যথায় নভেম্বরের নির্বাচনে তিনি জয়ী হতে পারবেন না। প্রসঙ্গত গত ৭ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্ক সিটিতে তহবিল সংগ্রহের অনুষ্ঠানে যোগদানের সময় গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদকারীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন। সে সময় পুলিশ গ্রেফতার করেছিল ৬১ জনকে এবং গ্রেফতারকৃত সবাই ছিলেন ইহুদি। কলম্বিয়া সার্কেলের পর নিকটস্থ মেট্রোপলিটন আর্ট অব মিউজিয়ামের তহবিল সংগ্রহের অনুষ্ঠানস্থলের বাইরেও শত শত মানুষ বাইডেনের ইসরায়েলি নীতির কঠোর সমালোচনা করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। সেখানেই ছিলেন উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ইহুদি (জুইশ)। ‘জুইশ ভয়েস ফর পিস’ নামক একটি ব্যানারও দেখা গেছে গাজায় ইসায়েলিদের বর্বরতার প্রতিবাদের সময়। এসব ইহুদির গায়ে ছিল ‘ইহুদিরা এক্ষুনি যুদ্ধ বিরতি চায়’, ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’। এদিকে অন্তত ৬ সপ্তাহের জন্য গাজায় যুদ্ধ বিরতির অভিপ্রায়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেন কার্যকর একটি প্রক্রিয়া অবলম্বন করছেন বলে সোমবার হোয়াইট হাউস থেকে বাইডেন নিজেই গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। এ জন্য ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে একটি সমঝোতার চেষ্টা চলছে- যার মধ্য দিয়ে ৭ অক্টোবর অপহৃত জিম্মির মধ্যে অবশিষ্টদেরকেও হামাসের কবজা থেকে মুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। জর্ডানের বাদশা আবদুল্লাহর সঙ্গে বৈঠকের পর প্রেসিডেন্ট বাইডেন আরও বলেছেন, গাজায় কিছুটা সময় যুদ্ধ বিরতি চলার পর আমরা আরও সময় নিতে সক্ষম হব পুরো পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার পক্ষে। বাইডেন উল্লেখ করেন তিনি এ লক্ষ্যে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু এবং কাতার ও মিসরের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। বাইডেন অবশ্য উল্লেখ করেন, যুদ্ধ বিরতির পর স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় সুনির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব এখনো উপস্থাপন বা তৈরি হয়নি। তা নিয়ে এখনো কিছুটা মতভেদ রয়েছে। তবে আমি ইসরায়েলি নেতাদের আহ্বান জানিয়েছি সমঝোতায় উপনীত হওয়ার জন্যে। আর এ জন্যে যুক্তরাষ্ট্র সবকিছু করবে।

সর্বশেষ খবর