শিরোনাম
শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
কিশোরী গৃহকর্মীর মৃত্যু

এড়িয়ে যাওয়া প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে তদন্তে ডিবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

চার দিনের রিমান্ডে থাকা ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক ও তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকারকে গতকাল তৃতীয় দিনের মতো জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ডিবি বলছে, থানা পুলিশের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গেছেন সৈয়দ আশফাক ও তার স্ত্রী। এসব উত্তর খুঁজতে ডিবিতে এনে তাদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

সৈয়দ আশফাকুলের বাসার কিশোরী গৃহকর্মী প্রীতি ওরাংয়ের মৃত্যুর ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় করা মামলার তদন্ত বৃহস্পতিবার রাতে থানা থেকে ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপরই ওই দুজনকে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। আজ (শনিবার) তাদের রিমান্ড শেষ হবে। ডিবির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম বলেন, মামলাটি তদন্তের জন্য আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। থানা পুলিশ জানায়, প্রীতির মৃত্যুর ঘটনায় অনেক প্রশ্নের উত্তর কৌশলে এড়িয়ে গেছেন ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক ও তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকার। এ ছাড়া ঘটনাস্থলে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও কোনো মেমোরি কার্ড পাওয়া যায়নি। মেমোরি কার্ড জব্দ ও ফুটেজ উদ্ধারের জন্য জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মঙ্গলবার আশফাকুল হক ও তানিয়া খন্দকারকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার এসআই নাজমুল হাসান। আদালতের আদেশে চার দিনের রিমান্ডে দুই দিন থানায় রেখেও ওই দুজন মেমোরি কার্ডের বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি সাপেক্ষ মামলার তদন্ত ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে।

মোহাম্মদপুর থানার এসআই নাজমুল হাসান বলেন, মেমোরি কার্ড জব্দ ও ফুটেজ উদ্ধার নিয়ে এখন ডিবি কাজ করছে। আমরা তাদের তদন্তে সহযোগিতা করছি।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টায় মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের জেনেভা ক্যাম্প সংলগ্ন একটি ভবনের নবম তলায় আশফাকুল হকের বাসা থেকে পড়ে মারা যায় প্রীতি ওরাং নামে ১৫ বছর বয়সী ওই কিশোরী। ওই বাসায় প্রীতি প্রায় দুই বছর ধরে গৃহকর্মীর কাজ করছিল। প্রীতির মৃত্যুর ঘটনায় তার বাবা মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মিত্তিঙ্গা গ্রামের লোকেশ ওরাং পরদিন অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। এ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আশফাক ও তার স্ত্রীকে আদালতে পাঠায় পুলিশ।

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে এসআই নাজমুল হাসানের রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামিদের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে তারা আলাদা আলাদা কারাগারে থাকায় ঘটনার বিষয়ে তাদের একত্রে জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হয়নি। যার ফলে তারা বিভিন্নভাবে ঘটনার মূল রহস্য কৌশলে এড়িয়ে গেছেন। এ মামলার ঘটনাস্থলে সিসি ক্যামেরা থাকলেও কোনো মেমোরি কার্ড পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা কৌশলে বিভিন্ন যুক্তি দেখিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান। ধারণা করা যাচ্ছে- ক্যামেরায় ঘটনার ভিডিও ধারণ থাকার ফলে আসামিরা ঘটনার পরপরই সেখান থেকে মামলার আলামত নষ্ট বা গোপন করার জন্য মেমোরি কার্ড লুকিয়ে রাখতে পারেন। এমতাবস্থায় তাদের নিয়ে বাসায় অভিযান চালালে মেমোরি কার্ড জব্দ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যা এ মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এবং প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের লক্ষ্যে আসামিদের নিয়ে ঘটনার ভিডিও ধারণ করা ক্যামেরার মেমোরি কার্ড জব্দ অভিযান চালানো এবং উভয়কে মুখোমুখি নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ রিমান্ডে পাওয়া একান্ত আবশ্যক।

 

সর্বশেষ খবর