বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

ভোটের জেরে হত্যা আওয়ামী লীগ কর্মীকে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর তানোরে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে জিয়াউর রহমান (৩৬) নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মী খুন হয়েছেন। তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। তার কান কেটে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে তানোর উপজেলা সদরের শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে তালন্দ ইউনিয়নের বিলশহর ফেরার পথে খুন হন আওয়ামী লীগের ওই কর্মী। জিয়াউর রহমান বিলশহর গ্রামের মহির আলী মণ্ডলের ছেলে। গতকাল ভোরে গ্রামের একটি সড়কের প্রান্ত থেকে তার ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। পুলিশ জানায়, সদ্যসমাপ্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রাব্বানীর কাঁচি প্রতীকের পক্ষে কাজ করায় জিয়াউরকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে পরিবারসূত্রে দাবি করা হয়েছে। বিষয়টি তিনি কয়েকবার পুলিশকেও জানিয়েছিলেন। পুলিশ এ ঘটনার পর তিন আওয়ামী লীগ কর্মীকে আটক করেছে। এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার গভীর রাতে তানোর উপজেলা সদরে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে নিজের মোটরসাইকেলে ৫ কিলোমিটার দূরে নিজ বাড়ি বিলশহরের দিকে চলে যান জিয়াউর রহমান। বুধবার ভোরে পুকুরে মাছ ধরতে যাওয়া লোকজন সড়কের পাশে তার লাশ পড়ে থাকতে দেখে থানায় খবর দেন। পুলিশ জানিয়েছে, জিয়াউর রহমানকে শক্ত কিছু দিয়ে প্রথমে মাথায় আঘাত করা হয়। এরপর পেট, মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয়। অন্য কোথাও হত্যা করে লাশ বিলশহরের উত্তর প্রান্তে ফেলে দেওয়া হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। শত্রুতার জেরে এ হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিক ধারণা পুলিশের। লাশের পাশে তার মোটরসাইকেলটি পড়ে ছিল। জিয়াউর রহমান রাজশাহী-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রাব্বানীর চাচাতো ভাই। সদ্য সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে তালন্দ ইউপি চেয়ারম্যান নাজিমুদ্দিন বাবু ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান মেম্বারের কর্মীসমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।

জিয়াউর ছিলেন বাবু চেয়ারম্যানের পক্ষের লোক। গত সংসদ নির্বাচনে বাবু চেয়ারম্যানসহ তার পক্ষের নেতা-কর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন। ৭ জানুয়ারি ভোটের ফলাফল প্রকাশের পরদিন এলাকার এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হাসান মেম্বারের নির্দেশে জিয়াউরের একটি গভীর নলকূপে তালা মেরে দেওয়া হয়। কয়েকদিন আগে জিয়াউরের একটি কাঁচামালের গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। জিয়াউর রহমানকে এলাকাছাড়া করার হুমকিও দেওয়া হচ্ছিল। এ ঘটনার পর বুধবার সকালে পুলিশ ফরহাদ, শাওন ও হাসান মেম্বারের দ্বিতীয় স্ত্রী ফুলবানুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে গেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। রাজশাহীর তানোর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন জানান, জিয়াউর হত্যায় জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। শিগগিরই জড়িতদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা হবে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর