বিশ্বের শক্তিশালী পাসপোর্ট সূচকে এক ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১০২তম। যা গত বছরের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১০১তম। যুক্তরাজ্যভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘হ্যানলি অ্যান্ড পার্টনার্সের’ করা ২০২৪ সালের সংস্করণে এ তথ্য উঠে এসেছে। বিশ্বের ১৯৯টি দেশের পাসপোর্ট সূচক প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ এই পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। সর্বশেষ প্রকাশিত তালিকায় বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে ১০২তম অবস্থানে রয়েছে উত্তর কোরিয়া। কোন দেশের পাসপোর্ট দিয়ে কত দেশে ভিসা ছাড়া বা অন অ্যারাইভাল ভিসায় প্রবেশ করা যায়, ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (আইএটিএ) সেই তথ্যের ভিত্তিতে শক্তিশালী পাসপোর্টের সূচক তৈরি করে দ্য হ্যানলি অ্যান্ড পার্টনার্স। বিশ্বের ১৯৯ দেশের সূচকে কিছু কিছু দেশ যৌথ অবস্থান পাওয়ায় এ বছর মোট ১০৯টি অবস্থান নির্ধারণ করেছে হ্যানলি। গত ১৯ বছর ধরে বিশ্বের কোন দেশের পাসপোর্ট কতটা শক্তিশালী তা নিয়ে প্রত্যেক বছর প্রতিষ্ঠানটি র?্যাঙ্কিং প্রকাশ করে আসছে। প্রতি তিন মাস অন্তর এই সূচক প্রকাশ করা হয়।
চলতি বছরের সংস্করণ অনুযায়ী, বাংলাদেশের পাসপোর্ট দিয়ে বিশ্বের ২২৭টি গন্তব্যের মধ্যে বর্তমানে ৪২টিতে ভিসা ছাড়া কিংবা অন অ্যারাইভাল ভিসায় ভ্রমণ করা যায়। বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করে আগাম ভিসা ছাড়া ইউরোপের কোনো দেশে ভ্রমণ করা সম্ভব নয়। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে মালদ্বীপের পাসপোর্ট (৫৮তম)। মালদ্বীপের পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়াই ৯৬টি দেশে ভ্রমণ করতে পারেন। এরপরই আছে ভারত (৮৫তম), ভুটান (৯২তম) এবং মিয়ানমার (৯৭তম)। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের তুলনায় একধাপ ওপরে আছে শ্রীলঙ্কা (১০১তম)। এ ছাড়া নেপাল (১০৩তম), পাকিস্তান (১০৬তম) এবং আফগানিস্তানের পাসপোর্ট একেবারে তলানিতে (১০৯তম) অবস্থানে আছে। হ্যানলির এই সূচকে চলতি বছর বিশ্বের মোট ছয়টি দেশ সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্টের সূচকে যৌথভাবে শীর্ষ অবস্থান দখল করেছে। আর এই ছয় দেশ হলো ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, সিঙ্গাপুর এবং স্পেন। এসব দেশের নাগরিকরা ভিসা ছাড়া কিংবা অন অ্যারাইভাল ভিসায় বিশ্বের ১৯৪টি গন্তব্যে ভ্রমণ করতে পারেন। ১৯ বছর আগে হ্যানলি বৈশ্বিক পাসপোর্ট সূচক প্রকাশ শুরু করার পর থেকে এবারই প্রথম সর্বাধিক ছয়টি দেশ যৌথভাবে শীর্ষ স্থানে রয়েছে। শীর্ষস্থানে থাকা ৬টি দেশ ছাড়াও, হ্যানলি পাসপোর্ট সূচকে দ্বিতীয় স্থানে যৌথভাবে রয়েছে ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, দক্ষিণ কোরিয়া এবং সুইডেন। এই তিন দেশের পাসপোর্টধারীরা ১৯৩টি দেশে ভিসা ছাড়া বা অন-অ্যারাইভাল ভিসায় ভ্রমণ করতে পারেন। তৃতীয় স্থানে যৌথভাবে থাকা অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, আয়ারল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ এবং যুক্তরাজ্যের নাগরিকরা ১৯২টি দেশে ভিসা ছাড়া বা অন-অ্যারাইভাল ভিসায় প্রবেশ করতে পারেন। চতুর্থ স্থানে রয়েছে যৌথভাবে বেলজিয়াম, নরওয়ে এবং পর্তুগাল। এই তিন দেশের নাগরিকরা বিশ্বের ১৯১টি দেশে ভিসা ছাড়া বা অন-অ্যারাইভাল ভিসায় ভ্রমণ করতে পারেন। আর পঞ্চম স্থানে থাকা অস্ট্রেলিয়া, গ্রিস, মাল্টা, নিউজিল্যান্ড এবং সুইজারল্যান্ডের পাসপোর্টধারীরা ১৯০টি গন্তব্যে ভিসা ছাড়া বা অন-অ্যারাইভাল ভিসায় যেতে পারেন। হ্যানলির এই পাসপোর্ট সূচকে একেবারে নিচে রয়েছে আফগানিস্তান (১০৯তম)। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশটির পাসপোর্টধারীরা মাত্র ২৮টি দেশে ভিসা ছাড়া প্রবেশ করতে পারেন।
