শুক্রবার, ১ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

ইউটিউব দেখে খতনার পর শিশুকে শ্বাসরোধে হত্যা

বাগেরহাট ও নোয়াখালী প্রতিনিধি

বাগেরহাটে ইউটিউব দেখে খতনার পর শ্বাসরোধে শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ঘাতককে। নোয়াখালীতে খতনার সময় শিশুর বিশেষ অঙ্গ কেটে ফেলার খবর পাওয়া গেছে।

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার পল্লীতে ইউটিউব দেখে হাত-পা, মুখ বেঁধে সুন্নতে খতনা দেওয়ার পর শ্বাসরোধ করে শিহাব শেখ নামে সাড়ে তিন বছরের এক শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার হিজলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেলুর রহমানের নেতৃত্বে রাতেই অভিযান চালিয়ে ইউটিউবার হামীম শেখকে (১৭) গ্রেফতার করা হয়েছে। নিহত শিশু শিহাব চিতলমারী উপজেলার বারাশিয়া গ্রামের ফরহাদ শেখের একমাত্র সন্তান।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. রাসেলুর রহমান জানান, চিতলমারী উপজেলার বারাশিয়া গ্রামের দরিদ্র ফরহাদ শেখ স্ত্রী ও একমাত্র শিশু সন্তান শিহাবকে নিয়ে হিজলা গ্রামে শ্বশুর মনু শিকদারের বাড়িতে বসবাস করেন। বুধবার সন্ধ্যায় মনু শিকদারের প্রতিবেশী রমজান শেখের ছেলে হামীম শিশু শিহাব শেখকে বিস্কুটের প্রলোভন দিয়ে পাশের বাড়িতে নিয়ে যায়। এরপর হামীম তার বসতঘরে হাত-পা ও মুখ বেঁধে কাঁচি দিয়ে শিশুটির বিশেষ অঙ্গের মাথার চামড়া কেটে সুন্নতে খতনা দেয়। কাটা স্থান থেকে রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে না পেরে শ্বাসরোধ করে শিশুটিকে হত্যা করে লেপ দিয়ে ঢেকে রাখে হামীম পালিয়ে যায়। শিশুটিকে না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে রাত সাড়ে ৮টার পর হামীমের বসতঘরের বারান্দায় শিশুটির স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী। পরে হামীমের বসতঘর থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে দ্রুত উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানান আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরির্দশনসহ হত্যায় ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার ও মোবাইল ফোন ট্রাকিং করে রাত ১০টার দিকে পাশর্^বর্তী শিবপুর গ্রাম থেকে হামীমকে গ্রেফতার করে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইউটিউব দেখে কৌতূহলী হয়ে খতনা দেওয়ার জন্য বিশেষ অঙ্গের মাথার চামড়া কাটার পর রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে না পারায় শ্বাসরোধ করে শিশুটিকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে হামীম। এদিকে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে সাত বছর বয়সী এক শিশুর খতনা করার সময় বিশেষ অঙ্গের সামনের অংশ কেটে মাটিতে ফেলে দেয় হাজাম (খতনাকারী)। গুরুতর আহত শিশু সাহাদাত হোসেনকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। গতকাল বিকালে উপজেলার নদনা ইউনিয়নের বুরপিট গ্রামের বুরপিট দক্ষিণ সরকার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় লোকজন অভিযুক্ত হাজাম মামুনকে (৩৫) আটক করে। তিনি জেলার সুবর্ণচর উপজেলার বাসিন্দা বলে জানা যায়। আহত শাহাদাত উপজেলার নদনা ইউনিয়নের বুরপিট গ্রামের বুরপিট দক্ষিণ সরকার বাড়ির নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বহস্পতিবার বিকালে শাহাদাতের খতনা করতে হাজাম মামুন উপজেলার নদনা ইউনিয়নের বুরপিট গ্রামের বুরপিট দক্ষিণ সরকার বাড়িতে আসেন। এরপর খতনা করাতে গিয়ে খুর চালিয়ে শিশু শাহাদাতের বিশেষ অঙ্গের মাথা থেকে কেটে মাটিতে ফেলে দেন। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। পরে স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় কাটা অংশসহ শাহাদাতকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার তানভীর হায়দার ইমন বলেন, হাজাম দ্বারা খতনা করতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটে। কাটা অংশ ফ্রিজআপ করে স্বজনদের বুঝিয়ে দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগে পাঠানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর