শনিবার, ২ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

ছেলের কান্না থামাতে রেস্টুরেন্টে যান নাজিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছেলের কান্না থামাতে রেস্টুরেন্টে যান নাজিয়া

দুই সন্তানের সঙ্গে নাজিয়ার এ ছবি এখন স্মৃতি

১২ বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ে হয় আশিক ও নাজিয়া দম্পতির। দুই সন্তান নিয়ে সুখের সংসার ছিল তাদের। কিন্তু রাজধানীর বেইলি রোডে গত বৃহস্পতিবারের আগুনে পুড়ে মারা যান আশিকের স্ত্রী নাজিয়া এবং তাদের দুই ছেলে আয়াত (৮) ও আয়ান (৬)। এ ঘটনায় আশিকের ফুফাতো ভাই রিফাত সাংবাদিকদের জানান, ‘ভাইয়া, ভাবিকে অনেক ভালোবাসতেন। দীর্ঘ সম্পর্কের পর তাদের বিয়ে এবং ঘর আলো করে আসে দুই সন্তান। কিন্তু এই ভয়াবহ আগুনে তাদের সাজানো সুখের সংসার শেষ হয়ে গেল।’

রিফাত আরও জানান, রাজধানীর বেইলি রোডে থাকতেন আশিক ও নাজিয়া দম্পতি। ঘটনার দিন রাতে আগুন লাগার সময় ব্যবসায়ী আশিক তখন বনানীতে নিজ অফিসে ছিলেন। সন্ধ্যায় তার স্ত্রী নাজিয়া ফোন করে আশিককে বলেন, ‘বাচ্চারা কান্না করছে, কী করব?’ বাচ্চাদের কান্না থামাতে আশিক সন্তানদের নিয়ে নাজিয়াকে রেস্টুরেন্টে খেতে যেতে বলেন। বেইলি রোডের যে ভবনে আগুন লেগেছে তার তৃতীয় তলায় দুই ছেলেকে নিয়ে ‘খানাস’ রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে গিয়েছিলেন নাজিয়া। কিন্তু সেখানেই দুই সন্তানসহ আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় নাজিয়ার।

আগুন লাগার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে স্বামী আশিককে ফোন দিয়ে নাজিয়া জানান, রেস্টুরেন্টে আগুন লেগেছে। ছোট ছেলে আয়ানকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এটাই ছিল প্রিয়তমা স্ত্রীর সঙ্গে আশিকের শেষ কথোপকথন। আশিকের ভাই রিফাত জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে আয়ানকে তার স্বজনরা পুড়ে যাওয়া ভবনটির সিঁড়িতে পায়। সেখান থেকে তাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। আর নাজিয়া ও আয়াতের মৃতদেহ সেখান থেকে মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আশিকের স্বজনরা নাজিয়া ও আয়াতের মৃতদেহ আনতে মর্গে যান। বৃহস্পতিবার লিপইয়ারের দিন বেইলি রোডের কেএফসি ভবনের পাশে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টের ভবনে আগুন লাগে রাত ৯টা ৫০ মিনিটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়।

সর্বশেষ খবর