বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

গাইবান্ধায় বালুচর ইজারা নিতে চাইছে অস্ট্রেলীয় কোম্পানি

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে মূল্যবান খনিজ সম্পদ আহরণে গাইবান্ধায় ২ হাজার ২৯৫ হেক্টর বালুচর ইজারা নিতে চায় অস্ট্রেলিয়ান এভার লাস্ট মিনারেল নামের এক অস্ট্রেলীয় প্রতিষ্ঠান। চর থেকে নিজ খরচে খনিজ পদার্থ আহরণের পর তার ৪৩ ভাগ সরকারকে দেওয়ার প্রস্তাব করেছে প্রতিষ্ঠানটি। কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা অংশে ব্রহ্মপুত্র নদের বালুতে ১০ মিটার গভীরতায় প্রতি বর্গ কিলোমিটারে আছে ৩ হাজার ৬৩০ কোটি টাকার খনিজ সম্পদ। এটা জানিয়েছেন ইনস্টিটিউট অব মাইনিং, মিনারোলজি অ্যান্ড মেটালার্জির গবেষকরা।

বালির নিচে লুকিয়ে আছে ইলমেনাইট, রুটাইল, জিরকন, ম্যাগনেটাইট, গারনেট ও কোয়ার্টজ ইত্যাদি মূল্যবান খনিজ। এসব খনিজের মধ্যে জিরকন সিরামিক, টাইলস, রিফ্যাক্টরিজ ও ছাঁচ নির্মাণে ব্যবহার হয়। রং, প্লাস্টিক, ওয়েলডিং রড, কালি, খাবার, কসমেটিকস, ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত হয় রুটাইল। শিরিস কাগজ উৎপাদনের জন্য লাগে গারনেট। চুম্বক, ইস্পাত উৎপাদনসহ বিভিন্ন কাজে লাগে ম্যাগনেটাইট। টিটেনিয়াম মেটাল, ওয়েল্ডিং রড ও রং উৎপাদনে কাঁচামাল ইলমেনাইট। আর কাচ শিল্পের অন্যতম কাচামাল কোয়ার্টজ। ছয়টি খনিজই অত্যন্ত মূল্যবান পদার্থ। এগুলো দেশের বাইরে থেকে আমদানি করা হয়। এগুলো যদি আমাদের দেশে উত্তোলন করা যায়, তাহলে প্রক্রিয়াজাত করে নিজস্ব চাহিদা পূরণের পাশাপাশি রপ্তানি করা সম্ভব। ব্রহ্মপুত্র নদে জরিপের পর এসব খনিজ সম্পর্কে ধারণা পায় ইনস্টিটিউট অব মাইনিং, মিনারোলজি অ্যান্ড মেটালার্জি। ইনস্টিটিউটের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত পরিচালক ড. মোহাম্মদ নাজিম জামান বলেন, আমাদের ইন্ডাস্ট্রিগুলোয় এ খনিজগুলো ব্যবহার হয়। আমি মনে করি, এ খনিজ সম্পদ দেশের জন্য লাভজনক হবে। এদিকে বেশকিছু দিন ধরে গাইবান্ধা সদর ও ফুলছড়ি উপজেলায় যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের ৪ হাজার হেক্টর বালুচরে খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানের কাজ করছে এভারলাস্ট লিমিটেড। বালাসীঘাট এলাকায় একটি প্লান্টও স্থাপন করছে তারা। এবার ফুলছড়ির বালাসীঘাট, সদরের মোল্লারচর এবং কামারজানি এলাকায় ২ হাজার ২৯৫ হেক্টর বালিচর লিজ চেয়ে খনিজ আহরণের আবেদন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। যেখানে আহরণের পর সরকারকে ৪৩ ভাগ দেওয়ার প্রস্তাব করেছে তারা। তবে এ নিয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি) পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. আবুল বাসার সিদ্দিক আকন বলেন, চরের বালিতে যে খনিজ পদার্থ আছে, সেটি যদি আমরা আহরণ করতে পারি তাহলে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে। পাশাপাশি রপ্তানি করেও বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা যাবে। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয় আন্তরিকভাবে কাজ করছে। এ অঞ্চলের বালুতে আরও দুটি খনিজ নিয়ে গবেষণা করছে ইনস্টিটিউট অব মাইনিং, মিনারোলজি অ্যান্ড মেটালার্জি।

কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার বালুচরে খনিজ পদার্থের অস্তিত্ব জানা গেলেও ব্রহ্মপুত্র থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে কোনো নির্দেশনা নেই প্রশাসনের।

 

সর্বশেষ খবর