শিরোনাম
শনিবার, ৯ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

নারীদের এগিয়ে আসতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

নারীদের এগিয়ে আসতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল রাজধানীতে পাঁচ নারীর হাতে তুলে দেন জয়িতা পুরস্কার -পিআইডি

উদ্যোক্তা তৈরি করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে নারীদের স্বাবলম্বী করতে সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছি, এখন নারীদের এগিয়ে আসতে হবে। গতকাল সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস এবং জয়িতা সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের নারীদের সব সুযোগ আমরা করে দিয়েছি এবং সরকারি সেবা প্রাপ্তিতে নারীদের যে সুযোগ বৃদ্ধি, সেটিও করা হয়েছে। যত রকম আয়বর্ধক কর্মকাণ্ড আছে, সেখানে যাতে আমাদের নারীরা আরও সুযোগ পায়। তিনি বলেন, আমরা সুযোগ সৃষ্টি করেছি। এখন মেয়েদের এগিয়ে আসতে হবে। ঘরে বসে থাকলে হবে না, কারণ মেয়েরাই সবচেয়ে বেশি কাজ করে। শেখ হাসিনা বলেন, নারী উদ্যোক্তা যাতে গড়ে ওঠে, সেজন্য এসএমই ফাউন্ডেশনে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ ছাড় দিয়ে অল্প সুদে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। যাতে নারীরা নিজেরা কাজ করতে পারে, সেই ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চল সারা দেশে গড়ে তুলছি। সেখানেও নারীদের জন্য আলাদা প্লটের ব্যবস্থা আছে। উদ্যোক্তা হয়ে মেয়েরা সেখানে বিনিয়োগ করতে চাইলে আলাদা সুবিধা পাবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এভাবে আমরা চাচ্ছি, আমাদের নারীদের সমঅধিকার যেন নিশ্চিত হয়। আমরা নারীদের সমান সুযোগ দিতে চাই। আমাদের নারীরা কখনো পিছিয়ে থাকবে না, সেটিই আমার প্রত্যাশা। অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি করার পাশাপাশি নারী-পুরুষ সমানভাবে শ্রম দিয়ে একটি দেশকে গড়ে তুলতে পারে বলে মনে করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারী যদি উঠে না দাঁড়ায়, কাজ না করে, তবে সেই সমাজ কখনো উন্নত হতে পারে না, অগ্রগামী হতে পারে না। নারী-পুরুষ সমানতালে কাজ করলেই আমরা এগিয়ে যেতে পারব।

নারীদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, সচিব হিসেবে যেখানে আমি মেয়েদের দিয়েছি, তারা খুব দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে, তাদের কাজের প্রশংসা না করে পারি না। এডিবি এবং বিশ্বব্যাংকে দুজন নারীকে নিয়োগ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এ দুই সংস্থায় আমাদের দুই নারী কর্মকর্তা সুযোগ পাচ্ছে। শুধু দেশের ভিতরে নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বাংলাদেশের মেয়েদের যে দক্ষতা আছে, সেটিই আমি প্রমাণ করতে চাই। দেশে প্রথম একজন নারীকে এসপি হিসেবে মুন্সীগঞ্জে নিয়োগ দেওয়া এবং তার সফলতা, বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের সফলতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেয়েদের সুযোগ দিলে পারবে না, তা হয় না।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রদত্ত নারীদের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করে ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বলেন, তাঁর দলই দেশের একমাত্র রাজনৈতিক দল যারা সংবিধান ও ইশতেহারে নারী ও পুরুষের সমান অধিকারের কথা উল্লেখ করেছে। তিনি বলেন, শুধু বলার জন্য নয়, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে তা বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছে।

এক পরিসংখ্যানে নারীদের ৪৩ শতাংশ শ্রমের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা (নারীরা) আরও অতিরিক্ত কাজ করেন এমনকি অফিস থেকে বাড়ি ফিরেও কাজ করতে হয় যা হিসাব করা হচ্ছে না। অনুষ্ঠানে জয়িতা সম্মাননা প্রদান করা হয়। এ বছর সেরা জয়িতা পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন- আনার কলি (অর্থনীতি), কল্যাণী মিঞ্জি (শিক্ষা ও চাকরি), কমলি রবি দাশ (সফল মা), জাহানারা বেগম (নিপীড়ন প্রতিরোধ) এবং পাখি দত্ত হিজড়া (সামাজিক উন্নয়ন)। অনুষ্ঠানের সভাপতি মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি বক্তব্য রাখেন। মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক স্বাগত বক্তব্য দেন। পুরস্কার গ্রহণের পর জয়িতা পুরস্কারপ্রাপ্তদের পক্ষ থেকে কল্যাণী মিঞ্জি তার অনুভূতি ব্যক্ত করেন। পুরস্কারপ্রাপ্তরা প্রত্যেকে ১ লাখ টাকার চেক, ক্রেস্ট, ও সনদপত্র গ্রহণ করেন।

সর্বশেষ খবর