শনিবার, ৯ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা
নির্বাচন নিয়ে ইইউ

গণতান্ত্রিক নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড পূরণ হয়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচন বিশেষজ্ঞ মিশন। এতে বেশ কিছু বিষয়ে বাংলাদেশের প্রশংসা করা হলেও মানবাধিকার ও বিরোধী দলগুলোর প্রতি সরকারি দলের দমনপীড়নের মতো কয়েকটি বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশে ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচন কিছু গুরুত্বপূর্ণ গণতান্ত্রিক মানদণ্ড পূরণ করতে পারেনি। ইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গণগ্রেফতারের কারণে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর তৎপরতা মারাত্মকভাবে সীমিত হয়ে পড়ে। রাজনৈতিক দলগুলোর আসন ভাগাভাগি চুক্তি এবং আওয়ামী লীগের নিজস্ব প্রার্থী ও দলের সঙ্গে যুক্ত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ভোটারদের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়নি। মিডিয়া এবং সুশীলসমাজও বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সহায়ক ছিল না। বলা হয়, এ নির্বাচন ছিল একটি অত্যন্ত মেরুকৃত রাজনৈতিক পরিবেশে পরিচালিত। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও তার জোট শরিকরা নির্বাচন বয়কট করায় সত্যিকারের প্রতিযোগিতার অভাব ছিল। বিরোধীরা সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচন পরিচালনায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি জানিয়েছিল, যা প্রত্যাখ্যান করা হয়। নির্বাচনের সময়জুড়ে বিরোধী দলগুলোর সমাবেশ, সমিতি, আন্দোলন এবং বক্তৃতার স্বাধীনতা কঠোরভাবে সীমিত করা হয়। গ্রেফতার এড়িয়ে যে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার ক্ষমতা বিএনপির পক্ষে অসম্ভব ছিল। নির্বাচনে সমান ভোটাধিকারের নীতিকে পুরোপুরি সম্মান করা হয়নি। বিদ্যমান আসনের সীমানা নির্ধারণের ভিত্তিতে সংসদীয় আসনপ্রতি ভোটার সংখ্যায় তারতম্য লক্ষ্য করা গেছে।

প্রতিবেদনে নির্বাচনি কিছু এলাকার উন্নতির জন্য কিছু সুপারিশ তুলে ধরেছে ইইউ। সেগুলো হলো : গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২সহ সংসদীয় সম্পর্কিত সমস্ত আইন, প্রবিধান এবং বিধিগুলোর একটি ব্যাপক পর্যালোচনা আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের আইনি নিশ্চয়তা বাড়াতে হবে। বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনার বোর্ড নিয়োগের ব্যবস্থা যোগ্যতাভিত্তিক ও স্বাধীন নিয়োগের মাধ্যমে হওয়া উচিত; যা জনস্বার্থে কাজ করার লক্ষ্যে কমিশনের হাত শক্তিশালী করবে। সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট, ২০২৩-এর বিধানগুলোর পর্যালোচনা করতে হবে। অস্পষ্ট এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ বিধিনিষেধগুলো সরানো যেতে পারে। সুশীলসমাজ যাতে নিষেধাজ্ঞা ছাড়াই কাজ করতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য বিদেশি অনুদান (স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রম) আইনের বিধান, ২০১৬-এর সীমাসহ সুশীলসমাজের কার্যক্রম এবং অতিমাত্রায় এর ওপর আমলাতান্ত্রিক নিবন্ধনের বিষয়টি পর্যালোচনা করা যেতে পারে। ভোট ও গণনার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য বর্ধিত সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করা যেতে পারে। তার জন্য ভোট কেন্দ্রের আশপাশে রাজনৈতিক দলের কার্যক্রমের ওপর সম্পূর্ণ স্থগিতাদেশ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

সর্বশেষ খবর