গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ ৩২ জনের কেউই শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, ভর্তি রোগীদের অন্তত ১৬ জনের শতকরা ৮০ শতাংশই দগ্ধ। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রয়েছেন ছয়জন।
গতকাল শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ কথা জানান। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, গাজীপুরের দুর্ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক। এখন পর্যন্ত আমাদের এখানে ৩২ জন রোগী এসেছেন। তার মধ্যে ৮০ শতাংশের বেশি বার্ন নিয়ে এসেছেন ১৬ জন। আর ৯০ শতাংশ বার্ন আছে ১০ জনের বেশি রোগীর। তাদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। রোগীদের এত বাজে অবস্থা যে সবারই শ্বাসনালি পুড়ে গেছে।
তিনি বলেন, গতকাল (বুধবার) প্রধানমন্ত্রী ফোন করেছিলেন। সরকারের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। বাকিটা এই মুহূর্তে বলা মুশকিল। তবে রোগীদের কেউ আশঙ্কামুক্ত না। ছয়জন এরই মধ্যে আইসিইউতে আছেন। দগ্ধ শিশুদের তথ্য জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, শিশুদের সাধারণত ১০ শতাংশের বেশি বার্ন হলেই মেজর হয়ে যায়। সেখানে প্রায় সবারই ৩০ শতাংশের বেশি বার্ন আছে। ভর্তিদের মধ্যে সাত শিশুর বয়স ১০ বছরের মধ্যে। আর ১১ থেকে ১৮ বছরের ছয়জনসহ মোট ১৩ জন শিশু বর্তমানে চিকিৎসাধীন। ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, দগ্ধদের অনেকেরই অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। আমরা কিছু রোগীকে হয়তো বাঁচাতে পারব না, কিন্তু কোনো রোগীর প্রতি শেষমুহূর্ত পর্যন্ত আমাদের চেষ্টার যেন কোনোরকম অবহেলা না থাকে- এটি আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। চিকিৎসকদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধদের শারীরিক কষ্ট অনেক। তারা খুবই অসহায় অবস্থায় থাকেন। প্রতিটি রোগীকে নিজের পরিবারের সদস্যদের মতো করে আমাদের সবাইকে চিন্তা করতে হবে। দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা নিয়ে সার্বিক বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তাদের চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয় প্রধানমন্ত্রী নিজে বহন করবেন বলেও আমাকে অবগত করেছেন। এখন আমাদের দায়িত্ব হলো নিজেদের সেরাটা দিয়ে তাদের চিকিৎসা করা। এদিকে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে শিশু ও নারীসহ দগ্ধের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। গতকাল সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ওই তদন্ত কমিটির কথা জানান গাজীপুর জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মো. সফিকুল ইসলাম।