শুক্রবার, ১৫ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নাগরিকত্ব আইন কিছুতেই প্রত্যাহার করা হবে না

কলকাতা প্রতিনিধি

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) কিছুতেই প্রত্যাহার করা হবে না।

নতুন এ নাগরিকত্ব আইন ১১ মার্চ ভারতজুড়ে চালু হয়েছে। এ আইন অনুযায়ী ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে আসা অমুসলিমরা (হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টান, জৈন, পার্সি, বৌদ্ধ) ভারতীয় নাগরিকত্ব পাবেন। বিরোধী দলগুলো বলছে, সিএএ অসাংবিধানিক। এ আইন প্রত্যাহারেরও দাবি জানিয়েছিল তারা। তাদের আশঙ্কা, নাগরিকত্বের জন্য কেউ আবেদন জানালে তাকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে। সে ইস্যুতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইনে এমন কোনো সংস্থানই নেই। বৃহস্পতিবার সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘ভারতে বসবাসকারী প্রত্যেক নাগরিককে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়াটা আমাদের সার্বভৌমত্বের অধিকার। এ বিষয়ে কোনো আপস করা যাবে না।’

 ‘সিএএ অসাংবিধানিক’ বিরোধীদের এ দাবি নাকচ করে অমিত শাহ বলেন, ‘তারা সব সময় আর্টিকেল ১৪ (সবার জন্য সম অধিকার)-এর কথা বলে। তারা ভুলে গেছে যে এ ধারায় দুটি উপধারা রয়েছে। সিএএ কোনোভাবেই আর্টিকেল ১৪ লঙ্ঘন করে না। এ বিষয়ে পরিষ্কার ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। কেবল যারা ওই তিন দেশ থেকে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে ভারতে এসেছেন তাদের জন্য এ আইন। এটা সাংবিধানিকভাবে বৈধ। ভারতের শীর্ষ আদালতে এ আইনের ওপর কোনো স্থগিতাদেশ নেই।’ সিএএ’র সঙ্গে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি)র কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না-এ প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এনআরসির সঙ্গে সিএএ’র কোনো সম্পর্ক নেই। আসামসহ গোটা ভারতে সিএএ বলবৎ হচ্ছে। কিন্তু উত্তর-পূর্ব ভারতের যেসব রাজ্যে নাগরিকদের জন্য দুটি বিশেষ অধিকার দেওয়া রয়েছে, এসব জায়গায় সিএএ প্রয়োগ করা হবে না।’ সিএএ কার্যকরের সময় নিয়ে বিরোধীরা যে প্রশ্ন তুলেছিলেন তা নিয়ে অমিত শাহ বলেন, ‘২০১৯ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে এ কথা বলা ছিল যে ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে আসা নাগরিক ও তাদের সন্তানদের ভারতে স্বাগত এবং নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এরপর সংসদে তা পাস হয় কিন্তু কভিডের জন্য তা বাস্তবায়নে বিলম্ব হয়।’ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বুধবার বলেছিলেন, ‘সিএএ চালু হলে ভারতে অনুপ্রবেশের সংখ্যা বাড়বে, চুরি-ডাকাতটিও বাড়বে।’ এ প্রসঙ্গে অমিত শাহ বলেন, ‘ইতোমধ্যেই যারা ভারতে চলে এসেছেন, তাদেরই নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তা ছাড়া দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর যদি এতই চিন্তা তাহলে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে তিনি কেন কথা বলেন না? কারণ উনি ভোটব্যাংক রাজনীতি করেন। বাংলাদেশ থেকে যেসব রোহিঙ্গা আসছে তা নিয়ে একটা কথা বলেন না, অথচ হিন্দু-বৌদ্ধদের নিয়ে তার বেশি চিন্তা।’

দুই দিন আগে সিএএ’র বিরোধিতা করে মমতা ব্যানার্জি বলেছিলেন, এ আইনের ফলে অনেক নাগরিককেই ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তা নিয়ে অমিত শাহ বলেন, ‘আমি হাত জোড় করে বলছি, রাজনীতি করার জন্য হাজারো মঞ্চ রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দুদের নিয়ে আপনি খেলা বন্ধ করুন, আপনি নিজেও একজন বাঙালি। বাংলাদেশ থেকে যেসব হিন্দু আসছেন তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন হলো সিএএ। মমতা দিদিকে আমি পরিষ্কার জানিয়ে দিতে চাই- কারও নাগরিকত্ব অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার একটি ধারাও সেখানে নেই। দিদি হিন্দু এবং মুসলিমদের মধ্যে একটা বিভেদ তৈরির চেষ্টা করছেন। নিজের দলের ভোটব্যাংক সংঘবদ্ধ করার চেষ্টা করছেন মমতা। আপনি এটা বন্ধ করুক। বরং দিদির অনুপ্রবেশ ঠেকানো উচিত। কিন্তু উনি আমাদের কোআেভাবেই সাহায্য করছেন না।’

 

 

 

সর্বশেষ খবর