শিরোনাম
বুধবার, ২০ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা
তরমুজে তুলকালাম

লাভ লুটে নেয় মধ্যস্বত্বভোগী

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে মৌসুম শুরুর আগেই বরিশালের বাজার তরমুজে সয়লাব। দক্ষিণাঞ্চলে গত মৌসুমের চেয়ে ১৪ শতাংশ বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে তরমুজ। বাড়তি মুনাফা নিতে অপরিপক্ব তরমুজই বিক্রি হচ্ছে বেশি। তবে এর দাম নিয় চলছে টালবাহানা। খেত থেকে পাইকার ঠিকা কিনলেও বাজারে বিক্রি হয় কেজি দরে। কৃষক আগেভাগে তরমুজের চাষাবাদ করে বাড়তি দামের আশা করছে। আর পাইকাররা তাদের কাছ থেকে স্বল্পমূল্যে কিনে এর সুফল ভোগ করছে। প্রশাসনের নজরদারি অভিযানেই সীমাবদ্ধ। ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেন জেলা প্রশাসক।

এ বছর বাবুগঞ্জ উপজেলার কৃষক মো. ইমরান প্রায় ১৩০ একর জমিতে আগাম তরমুজ আবাদ করেছেন। ফলন বেশ ভালো হয়েছে। ১০ রমজানে তার খেতের তরমুজ বাজারজাত করবেন। রমজানে এ রসালো ফল বাড়তি দামে বিক্রি করে লাভবান হওয়ার প্রত্যাশা করছেন।

বাউফল থেকে ট্রলারে ১ হাজার ৭০০ পিস তরমুজ নিয়ে বরিশাল ফলের আড়তে এসেছেন কৃষক খোকন। ১৬০ টাকা পিস হিসেবে ১০০ তরমুজের দর উঠেছে ১৬ হাজার টাকা। তার চাহিদা ছিল ২০ হাজার টাকা। খোকন বলেন, চাহিদা অনুযায়ী আড়তদার দাম না বলায় হতাশ তিনি। সার, ওষুধ, শ্রমিকের খরচ মিটিয়ে ভালো দাম না পাওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার কথা জানালেন খোকন। বরিশাল নগরীর পোর্ট রোডে হাওলাদার ফল ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী মনির হোসেন হাওলাদার বলেন, এ বছর তরমুজের বিচির দাম বেশি, সব কিছুর দাম বেশি। তাই তরমুজের দামও বেড়েছে। চৈত্রের শেষ দিকে তরমুজের দাম কমার সম্ভাবনার কথা জানালেন তিনি।

নগরীর চৌমাথা বাজার এলাকার ফলের দোকানগুলোয় প্রতিটি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ঠিকা ও কেজি দরে। এ রকমই নগরীর সব জায়গায় বিক্রি হয়। যা কিনে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না সাধারণ ক্রেতারা। তরমুজ কিনতে আসা ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি বরিশালের সহযোগী অধ্যাপক মো. রমজান আলী বলেন, ‘একটি মাঝারি তরমুজ কিনতে ৪০০-৫০০ টাকা লাগে। আমার বাপদাদারাও কোনো দিন কেজিতে তরমুজ কিনে খাননি। আমাকে কিনতে হচ্ছে। সাধ থাকলেও সাধ্য না থাকায় মৌসুমি ফল খেতে আগ্রহ হারাতে হচ্ছে।’ তার মতোই অনেক ক্রেতা এ ফল সহজলভ্য করতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে সতর্ক করলেও মানছে না কেউ। তবে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিংবা ফলের দাম বেশি রাখা হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাজার নজরদারির অংশ হিসেবে প্রতিদিনই ভ্রাম্যমাণ আদালত অসাধু ব্যবসায়ীদের জরিমানা এবং সতর্ক করছেন।’

চলতি মৌসুমে বিভাগের ছয় জেলায় ৫৪ হাজার ২ হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর; যা গত বছরের তুলনায় ১৪ শতাংশ বেশি। ইতোমধ্যে আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৬১৮ হেক্টরে। এর মধ্যে বরিশাল জেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াই ৯৪২ হেক্টরে তরমুজ চাষ হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর