বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

ডিবিতে সেই ছাত্রীর মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত দুই শিক্ষক

নিজস্ব প্রতিবেদক

শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ দেওয়ায় হত্যাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রী ও দুই শিক্ষককে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে অভিযোগকারী ছাত্রী ও অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়। শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ দেওয়ায় হত্যাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি পাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন জবির ফিল্ম ও টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মীম। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে শিক্ষক আবু শাহেদ ইমন এবং বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমেদ হালিমের বিরুদ্ধে সোমবার ডিবি কার্যালয়ে অভিযোগ দেন তিনি। ডিবি সূত্র জানায়, ছাত্রীর করা অভিযোগের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা দুই শিক্ষক ছাড়াও অভিযোগকারী শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্যদের ডাকা হয়। দুপুর ২টা থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, অভিযোগ আসার পর দুই শিক্ষককে ডাকা হয়। মীম আমাদের কাছে বলেছেন যে- তিনি যেন স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারেন, কেউ যেন ডিস্টার্ব করতে না পারে। আমরা সে ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছি। একই সঙ্গে দুই শিক্ষক বলেছেন- তারা এ ধরনের কোনো হুমকি-ধমকি ও মীমের চলাফেরায় বাধা দেবেন না। এরপরও যদি মীম স্বাধীনভাবে চলাফেরায় বাধার সম্মুখীন হন কিংবা কেউ ডিস্টার্ব করে তাহলে আমাদের জানাতে বলেছি। শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। তদন্তের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে ওই শিক্ষার্থী যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে যান রাষ্ট্রপতির কাছেও। নিজ বিভাগের শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তোলায় হত্যাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকির প্রতিকার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য বরাবর এ আবেদন করেন তিনি। মীম মঙ্গলবার বঙ্গভবনে আবেদনটি জমা দিয়ে আসেন। রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদনে তিনি যৌন নিপীড়ন ও বুলিংয়ের বিচার চেয়েছেন। এর আগে সোমবার দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে অভিযোগ জমা দিতে গিয়ে ওই ছাত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আমার বিভাগের শিক্ষক আবু সাহেদ ইমন আমাকে যৌন হেনস্তা করেছেন। এই অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমেদ হালিম ও অভিযুক্ত শিক্ষক আবু সাহেদ ইমন আমাকে সেটি তুলে নিতে নানাভাবে চাপ দিতে থাকেন। এতে আমি রাজি না হওয়ায় তারা আমাকে হাত-পা কেটে হত্যা করাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেন। আমাকে বিভিন্ন পরীক্ষায় শূন্য নম্বর দিয়ে ফেল করানো হয়। আমার অনার্সের ফাইনাল ভাইভায় ফেল করানো হয়। তিনি জানান, ২০২১ সালে আবু সাহেদ ইমন তাকে যৌন হেনস্তা করেন। সম্প্রতি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় যৌন হয়রানি ও নানা নিপীড়নের বিরুদ্ধে এই শিক্ষার্থী সোচ্চার হন। সেখানেই অবন্তিকার ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে নিজের প্রসঙ্গও আসে।

 

 

সর্বশেষ খবর