মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

পাঁচ বছর অপেক্ষা নিয়ে দোটানায় বিএনপি

♦ কারামুক্ত শীর্ষ নেতারা বলছেন ঈদের পর টানা কর্মসূচি ♦ নির্বাচনের আগের আন্দোলনের ব্যর্থতায় ক্লান্ত নেতা-কর্মীরা

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

পাঁচ বছর অপেক্ষা নিয়ে দোটানায় বিএনপি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২৮ অক্টোবরের সহিংসতার ঘটনায় বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের অধিকাংশ নেতা এখন কারামুক্ত। শীর্ষ নেতারা কারামুক্ত হওয়ায় বিএনপির অভ্যন্তরে এবং রাজনৈতিক মহলে সর্বত্র  আলোচনা, বিএনপি এখন কী করবে।  বর্তমান সংসদ ভেঙে তারা আবারও নতুন নির্বাচনের দাবি তুলবে নাকি পরবর্তী নির্বাচনের জন্য পাঁচ বছর অপেক্ষা করবে। বিএনপির দায়িত্বশীলরা বলছেন, কারামুক্ত নেতারা চাইছেন দাবি আদায়ে ঈদের পর কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করতে। আর মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীরা বলছেন টানা তিন মেয়াদে দাবি আদায়ে ব্যর্থতা ও মামলা-হামলায় তারা ক্লান্ত। এ অবস্থায় দোটানায় পড়েছে রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। জানতে চাইলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, যেসব দাবিতে বিএনপি নির্বাচনের আগে আন্দোলনে নেমেছিল সে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আন্দোলন চলমান। জোর করে পুলিশ প্রশাসন দিয়ে জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া আওয়ামী লীগ নির্বাচন করেছে। আওয়ামী লীগের পায়ের নিচে মাটি নেই। আমরা ঈদের পর নতুন উদ্যমে কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামব। বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে কোনো ক্লান্তি বা হতাশা নেই। অতীত আন্দোলনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নতুন উদ্যমে মাঠে নামবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। জানা যায়, বিএনপির আগে যে একদফা দাবি ছিল সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং বেগম জিয়ার মুক্তি। সেই দাবির সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিলের বিষয়টি। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ কারামুক্ত সব নেতা ঈদের পর কঠোর আন্দোলনের কথা বলছেন। বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলছেন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবির আন্দোলন থেকে পিছু হটবে না বিএনপি। গত ১৫ বছরে তিন দফায় আন্দোলনে ব্যর্থ হলেও হাল ছাড়বে না। নতুন করে সরকারবিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। বিএনপি নেতৃবৃন্দ মনে করছেন সরকার নৈতিকভাবে দুর্বল অবস্থানে রয়েছে। সামনে অর্থনৈতিক সংকট আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দেশি-বিদেশি সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে রাজপথে বড় ধরনের আন্দোলন গড়ে তুলতে চায় বিরোধী দলটি। এ লক্ষ্যে ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগের আন্দোলনের ব্যর্থতার অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর পথে হাঁটতে চায় তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সম্প্রতি দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নানা বিষয় বিবেচনা করে কারামুক্ত নেতারা কঠোর কর্মসূচির কথা বললেও কয়েকজন নেতা আপাতত কঠোর কর্মসূটি নিয়ে দোটানায় রয়েছেন। কারামুক্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও আন্তর্জাতিক উইংয়ের প্রধান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানান, নেতৃবৃন্দ কারামুক্ত হলেও অনেকে এখনো অসুস্থ। তাছাড়া বিএনপি আন্দোলনের মধ্যেই আছে। পবিত্র রমজান মাসেও ইফতার মাহফিলের মাধ্যমে দলীয় কার্যক্রম চলছে। রজমানের পর দল ও যুগপৎ আন্দোলনের সমমনাদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর