শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা
বিশেষজ্ঞ অভিমত

বাস্তববাদী দৃষ্টিকোণে সঠিক অবস্থান

ড. দেলোয়ার হোসেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাস্তববাদী দৃষ্টিকোণে সঠিক অবস্থান

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (বিপিএসসি) সদস্য ড. দেলোয়ার হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশ ও আমেরিকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক শক্তিশালী। বিশেষ করে ২০১২-১৩ সাল থেকে অংশীদারি,  নিরাপত্তা, সংলাপ, বাণিজ্য-বিনিয়োগসহ বিভিন্ন বহুমাত্রিক বিষয়ে দুই দেশের সম্পর্ক শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। এ সম্পর্কের মধ্যে কিছু টানাপোড়েনের ঘটনা যদিও ঘটেছে কিন্তু বাস্তববাদী দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার কারণে সেগুলোকে ছাপিয়ে দুই দেশই তাদের সম্পর্ককে সঠিক অবস্থানে রেখেছে।

এই আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির জন্য যুক্তরাষ্ট্র যেমন বড় বাজার, বাংলাদেশের গ্যাস, তেলসহ বিভিন্ন বড় সেক্টরে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ করার সুযোগ বেড়েছে। বাংলাদেশের ক্রমবিকাশমান বাজারও যুক্তরাষ্ট্রের বিবেচনার বড় একটি বিষয়। তিনি বলেন, ভূ-রাজনৈতিক দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি ইম্লিমেন্ট করছে। এ অঞ্চলে তাদের মিত্রশক্তির প্রয়োজন আছে। বাংলাদেশের পাশে মিয়ানমার, চীন, ভারত রয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের অবস্থান মিয়ানমারের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মিয়ানমারের অর্থনীতি ৮০ বিলিয়ন ডলার, অন্যদিকে বাংলাদেশের অর্থনীতি প্রায় সাড়ে ৪০০ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশের একদিকে ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব আছে, অন্যদিকে বাংলাদেশের অর্থনীতিরও উত্থান হয়েছে। এসব কারণে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে সম্পর্কের জায়গা থেকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বজায় রাখছে।

দেলোয়ার হোসেন বলেন, এর মধ্যেও গণতন্ত্র, মানবাধিকারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান রয়েছে। এসব ইস্যু তারা পররাষ্ট্রনীতিতে ব্যবহার করছে। কিন্তু এটার একটা সীমা রয়েছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোর ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের একটি কনসার্ন রয়েছে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এক ধরনের রেসপেক্টও আছে যে, এগুলো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সুতরাং এটা নিয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে চিড় ধরাতে চায়নি। যুক্তরাষ্ট্র কোনো ইস্যুতে দুই দেশের সম্পর্ককে কখনো জিম্মি করেনি। তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্বে চীন, রাশিয়া বড় ফ্যাক্টর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য। যুক্তরাষ্ট্র যেহেতু এসব দেশকে তাদের চ্যালেঞ্জ মনে করে সেহেতু কৌশলগত কারণে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্র পাশে পেতে চায়। এসব নানা বিষয় বিবেচনায় রেখে দুই দেশ তাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নিচ্ছে এবং অংশীদারিকে কোনোভাবেই ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে না।

সর্বশেষ খবর